সতর্কতা: বিশাল পোস্ট! গ্র্যান্ড আড্ডা নিয়ে মাথায় যা এসেছে তা লিখে ফেলার চেষ্টা।
একদম শেষের আগে:
সি এস এম তৃতীয় প্রজন্মের দুই বালক কথা বলছে...
১ম বালক : "স্টিল মিল নামে একটা কলোনী ছিল। সেখানে আমার বাবা থাকত।"
২য় বালক: "আররে আমার বাবাও তো সেখানে থাকত। সে জন্যেই তো আমরা এসেছি "
প্রাক আড্ডা:
আমাদের বাসায় আড্ডার আমেজ টা শুরু হয় সেইদিন যেদিন জসিম ভাই, মামুন ভাই, বাবু ভাই, পুলক ভাই, পাপ্পু ভাই মিলে বাসায় এসে কুপন দিয়ে যান। আব্বু ওই দিন গ্র্যান্ড আড্ডা নিয়ে প্রথম কবিতাটা লিখলেন। এর পর আরেকদিন এলেন নাজমুল ভাই, অপু ভাই,কমু ভাই, পুলক ভাই এই দিন বাসায় কবিতা পাঠ হল। নাজমুল ভাই বললেন "আভা, কবিতা টা আমাদের সবাই কে আরও উৎসাহিত করবে, তুমি এই কবিতা আজ রাতেই পোস্ট করে দাও"
নাজমুল ভাই আর পুলক ভাই আর ও বললেন আমি এ কবিতা গ্রুপ এ পোস্ট করে দিলে আড্ডার দিন কফি আর ফুচকা খাওয়াবেন।
আব্বুর লেখা ওই কবিতাই ছিল CSM গ্রুপ এ আমার প্রথম পোস্ট।
আগে কলোনী কিংবা স্কুলের প্রোগ্রাম হলে ১ মাস ধরে রিহার্সেল চলত। প্রোগ্রামের আগের দিন হত ফাইনাল রিহার্সেল। তাই গ্র্যান্ড আড্ডার ফাইনাল প্রস্তুতি দেখতে ২৮ যাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল, কিন্তু যেতে পারিনি। আব্বু গিয়েছিল দেখতে। নিজ চোখে না দেখলেও আব্বুর মুখেই শুনলাম।
গ্র্যান্ড আড্ডা ২০১৬:
ভেন্যু:
সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজের কিছু কিছু ব্যাপার আমাদের কলোনীর সাথে এত মিলে গেছে যে গ্র্যান্ড আড্ডা আয়োজনের জন্যে এর চে ভালো ভেন্যু পাওয়া যেত না।
আর ডেকোরেশন টিম সেই ভেন্যুকে অপূর্ব করে সাজিয়েছে।
সারপ্রাইজ :
২৯ তারিখ গেলাম গিয়ে দেখি চারদিকে হই হই রই রই।
গ্রান্ড আড্ডা সেল্ফি জোন আর ফেস -ইন- দ্য - হোল বোর্ড দেখে সারপ্রাইজড হয়ে গিয়েছিলাম আনন্দে অনেক ছবি তুললাম।
গ্র্যান্ড আড্ডা নিয়ে কথায় কথায় ভাইয়া কে বলেছিলাম, বড় প্রোগ্রামে ভাল ব্যাকগ্রাউন্ড পাওয়া যায় না, অন্য কেউ ফ্রেম এ ঢুকে যায়, এ আড্ডার থিম এ ভাল ব্যাকগ্রাউন্ড সেলফি জোন থাকলে ভাল হবে। ভাইয়া না এলেও সুজন ভাই আর টিপু ভাইয়ের সৌজন্যে পাওয়া সেল্ফি জোন আর বোর্ড দেখে আপ্লুত হলাম। কখনো কখনো ধন্যবাদ দেওয়ার জন্যে "ধন্যবাদ " শব্দটা একটু কম হয়ে যায়।
আলাপ,আলিঙ্গন আর আকুল হওয়া :
বন্যা আপু,তানিয়া আপু, আর টলি ভাই সকাল টা মাতিয়ে রাখলেন। বড় ভাইয়া আপুরা সবাই মিলে কথায় কথায় অনেক মজা করলেন।
চাচা,চাচী, আপু, ভাইয়া, ভাবি, আর CSM তৃতীয় প্রজন্মের সাথে অনেক দিন পর দেখা হয়ে মনে হল সব আগের মতই আছে শুধু মাঝে কিছু বছর গেছে।
আর স্কুলের স্যার আর ম্যাডাম দের দেখে মনে হচ্ছিল CSM স্কুলের ও কোন প্রোগ্রাম চলছে একই সাথে।
মামুন ভাই আমাকে আয়োজক কমিটির কার্ড দিলেন, আমি সেটা যত্ন করে রেখে দিয়েছি smile emoticon
পুরো আড্ডা ঘুরে বেড়ালাম ছোট বেলার খেলার সাথী আর সহপাঠী রিমু আর সাঈদের সাথে। ঘুরতে ঘুরতে ভাবলাম কফি খাই,রিমু বলল শোনো এত এত বড় ভাই থাকতে নিজেরা কফি খাওয়া ঠিক না! পরে ফারুক ভাই আমাদের কফি খাওয়ালেন।
রিনি আপু,প্রিয়াংকা আপু,পিংকি আপু, লাবনী আপা, আবিদা আপু,হাবিবা আপু, হীরা আপু, মুক্তা আপু নাসিমা আপা, পান্না আপু শিল্পী আপু,লিজা আপু, শায়লা আপু, অনিকা আপু আর ভাবিদের সাথে কথা হল। কথা হল হেনা, লিজা, রাহিন আর রিভানার সাথেও।
দেখা হল রুমী, জনি, মিজান, রিংকি সহ অনেকের সাথে। রিংকি কে আমি ভেবেছিলাম এনি আপু। পরে সবাই মিলে ছবি তুললাম।
আসিফ ভাই, রাফি ভাই,সালাউদ্দীন ভাই, রনি ভাই ছোট বেলায় দেখতাম উনারা একসাথে ঘুড়ি ওড়াতেন। এদিন ও একসাথে দেখে খুব ভাল লাগল। মানিক ভাই,কল্লোল ভাই, সুজন ভাই,জিয়া ভাই, সাগর ভাই দের দেখলাম সেই আগের মত একসাথেই।
দুই সুমন ভাইয়ের সাথে কথা হল!
আর রাজীব ভাই!!! যার কথা না বললেই নয়!!!দেখা হবার পর থেকে সেই যে শুরু এখন পর্যন্ত আমারে পঁচানির উপরে রাখছে! (তবে একটা টফি ও দিসে)
পুলক ভাই, টিপু ভাই, জাভেদ ভাই থেকে স্মারক আর ম্যাগাজিন নিলাম। তখন খেয়াল করি নি যে প্রিয় মানুষের স্বাক্ষর আর শুভকামনার জন্যে এতে দুটি পাতা আছে, করলে নিশ্চয়ই কিছু শুভকামনা নিতাম
ইউনূস ভাইয়ের ছবি তুললাম সাত্তার স্টোর এর সাথে।
বিকালে আমরা হাঁটছি দেখি নাজমুল, ভাই কমু ভাই আর শাহীন ভাই উদ্বিগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। বললাম ভাইয়া খেয়েছেন উনারা বললেন না সবার খাওয়া এই তো খাব।
রেজা ভাইয়ের সাথে আলাপ নিয়ে তো আগেই বলেছি। সওগাত মামার সাথেও কথা হল।
পরে আতিক ভাই কেও দেখলাম দৌড়ের উপর আছে (--)
মামুন ভাই বললেন আমি চাইলে বড় দের দৌড় পরিচালনায় সাহায্য করতে পারি,তাই গেলাম। আশ্চর্য হলাম রিপন ভাই আর সামির ভাই এর দৌড় দেখে। অনেক প্রতিযোগী ভাইয়া মাঝ পথে দৌড় থামিয়ে দিলেন কিন্তু রিপন ভাই শেষ করলেন ২য় হয়ে। নিজের খেলা নিয়ে রিপন ভাই বললেন "খেলায় বয়স আর শক্তি কোন ব্যাপার না আসল হল মনোবল"
এর ই মাঝে মাঝে তাসকিন এর সাথে কথা হল, আমি যে কটা ছবি তুলেছিলাম ওকে দেখানোর জন্যেই তুলেছি।
শেষ বিকেলে চা খাওয়ালেন আরেক জাবেদ ভাই smile emoticon আর কিছু ছবি তুলে দিয়েছিল আকাশ নামের ছেলেটা। লিটন ভাইয়ের সাথে কথা হল আমার পোস্ট করা ছবি নিয়ে।
শেষ:
সন্ধ্যায় জাতীয় সংগীত দিয়ে শুরু হল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সামুন মামা গাইলেন "সেই যে আমার নানা রঙের দিন গুলি " গান টা আজকের উৎসবের সাথে খুব মেলে।
ঝাকানাকা গানের সাথে সবার নাচ দেখলাম কিছুক্ষণ।অনেকদিন পর রাজীব ভাইকে গাইতে শুনলাম।নিরু ভাইয়ের ব্রেকড্যান্স চাক্ষুষ করা এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
গ্র্যান্ড আড্ডার খাবার মানেই কমু ভাইয়ের আপ্যায়ন বাহিনী। রাতের খাবার বুঝে নিলাম কমু ভাই আর মনু ভাইয়ের কাছ থেকে।সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসি।
শেষের পরের অনুভূতি :
সবাই কত হিসেব চায় আমার ও এক টা হিসেব পেতে ইচ্ছা করে, এই আড্ডা সফল ভাবে আয়োজনের জন্যে নিজের পরিবার আর কাজ থেকে সময় নিয়ে সবাই কত মিনিট, ঘন্টা,দিন আর ব্যয় করেছে।
বড় ভাই আপু রা হলেন একটা স্পেস, আস্থার জায়গা, আমি কোথাও ভুল করলেও তাঁরা ঠিক জায়গায় পৌঁছে দেবেন।
বড় হতে গেলে মনে না নিলেও সব মেনে নিতে হয়।
বড়ভাই আপু হওয়া "Thankless Job" তবু আমরা বড়ভাই আপু দের মত কিছুটা হতে চাই , নিজের টা ছেড়ে দিয়ে সবার মুখে হাসি ফোটানোর মাঝে কি আছে তা বুঝতে চাই।
বি: দ্র: যাদের সাথে কথা হয়েছে সবার কথা বলতে চেয়েছি, হয়ত কারো নাম বাদ গেছে, প্লিজ, আমাকে জানিয়ে sorry বলার সুযোগ দিন।
No comments:
Post a Comment