Monday, November 9, 2015

খেলাধুলায় তেমন ভালো না হলেও এর প্রতি প্রচন্ড টান ছিলো



খেলাধুলায় তেমন ভালো না হলেও এর প্রতি প্রচন্ড টান ছিলো। চিটাগাং ষ্টেডিয়ামে গিয়ে নিয়মিত লীগের ফুটবল খেলা গুলো দেখতাম ( আমি অবশ্য মাগনা খেলা দেখতাম, মামার কল্যানে প্রতি বছর ভিআই পি পাশ পেতাম) আর টিভিতে ফুটবল বা ক্রিকেট খেলা থাকলে আমাকে হাতি দিয়েও টেনে সরানো যেতোনা।

আমার খেলা প্রীতি কিছুটা বংশগত হলেও বাকী পুরোটা ছিলো আমাদের সি টাই প মাঠের কারনে, এখানে হাত পা ছুড়াছুড়ি করতে করতেই খেলার প্রতি প্রবল প্রেম শুরূ। বিকালে স্কুল থেকে এসে কোনমতে বই খাতা টেবিলে ছুড়ে মেরে সোজা মাঠে ফুটবল খেলতে চলে যেতাম, খেলতাম মাগরিব পর্য্যন্ত। 


এক সময় খালি ফুটবলই খেলতাম আর আমাদের সিনিয়ররা শীতের সময় ক্রিকেট খেলা শুরু করত, এটা নিয়ে তাদের সংগে হালকা দ্বন্দ ও হতো। কিন্ত বড় ভাই রা যখন ষ্টার যুব ক্রিকেট খেলা শুরু করল তখন সে দ্বন্দ শেষ হয়ে আমরাও তাদের সাথে যোগ দিলাম, এক সময় মেট্রোপলিটন জুনিয়র ক্রিকেট লীগে খেলার জন্য আমরাও েজোরেসোরে ক্রিকেট খেলা শুরু করে দিলাম।ে ক্রিকেটের কোন সরন্জামের অভাব নেই আমাদের ,সকালে যখন নেট প্যাকটিস করতাম আর ব্যাংকে আসা গ্রাহকরা আর বিভিন্ন লোকজন আমাদের প্যাকটিস দেখার জন্য মাঠের চারিদিকে ভিড় করতো তখন আমাদের ভাবই অন্য রকম ছিলো, নিজেদের ওয়াসিম আকরাম,ইমরান খান,কপিল দেব আর আজহার উদ্দিন মনে হতো। 

এ মাঠে একটা সিমেন্টের পিচ ছিলো, প্রথম দিকে মাঠ টি সম্পূর্ন খেলার উপযোগী ছিলোনা মাঠে ছোট ছোট পাথরে ভর্তি ছিলো, মাঠের মাঝখানে স্লিপার আর দোলনার বার ছিলো, চন্দন চাচার উদ্যোগে এগুলো সরিয়ে মাঠটি সম্পূর্ন খেলার উপযোগী করা হয়েছিলো। তার পর থেকে এখানে সারা বছর গ্রীস্ম বর্ষায় চলত ফুটবল আর শীতে ক্রিকেট চলত।বিকালে খেলা চলাকালীন সময়ে মাঝেমাঝে অনেক খেলোয়ারের নাইকা সখি বেষ্টিত হয়ে মাঠের আশে পাশে হেটে বেড়াত ঐ সময়ে নাইকার নায়ক খেলোয়ারের খেলার পারফরম্যান্স ডাবল হয়ে যেতো।
প্রায় সন্ধার পর মাঠে জমজমাট আড্ডা চলত আর সাথে থাকত পলাইয়া রাশেদের আবেগী গান। এমন কি সন্ধার আধারিতে এ মাঠে অগভীর রোমান্সও হয়েছে।

কত হাজার স্মৃতি জড়িত এ মাঠ থেকে আমারা বিতাড়িত হয়েছি.........লী. নামে এক কর্মকর্তার কারনে, তাকে প্রশাসন তেকে এটাও বলা হয়েছিলো যে , মাঠের পাশের বিল্ডিং এ থাকতে তার সমস্যা হলে প্রয়োজনে তার বাসা চেঞ্জ করে দেওয়া হবে। তাতেও ঐ ভদ্র লোক রাজী হয়নি। তারে একগুয়েমির কারনে আমাদের মাঠটি ছেড়ে দিতে হয়েছিলো।

২০০৫ সালে শেষবার কলোনীতে যাই,তখন দেখেছিলাম মাঠটিতে কোমর সমান ঘাস. প্রচন্ড কষ্ট লেগেছিলো এ দৃশ্য দেখে।

আমার মনের মধ্যে শৈশবে দেখা মাঠ টিই রেখে দিয়েছি পরম যতনে। চোখ বন্ধ করে আমি সেখানে ফুটবল আর ক্রিকেট খেলি নিরন্তর।

No comments:

Post a Comment