২০০৭ সালে প্রথম ভারত সফরে গিয়েছিলাম। প্রথম দিন কলকাতায় থাকলাম। কারন তারপরের দিন বিকাল ৪.৩০ টায় রাজধানী এক্সপ্রেস এর টিকেট। উদ্দ্যেশ্য প্রথমে দিল্লি যাবো পরে সেখান থেকে আজমির। যেহেতু কলকাতায় প্রথম যাত্রা তাই পরের দিন দুপুরের খাবার শেষ করে দুইটার কিছু সময় পরে রওনা দিলাম। কারন আমরা ছিলাম মার্কুইজ ষ্ট্রীটে। সেখান থেকে হাওড়া ষ্টেশন যেতে অনেক সময় লাগে। ষ্টেশনে পৌঁছার কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রেন আসলো। ট্রেনের বগির বাইরে দরজায় লাগানো name list দেখে বগিতে উঠলাম। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছাড়লো। ট্রেন ছাড়ার পর পরিচারক এসে গরম পানি, টি ব্যাগ, দুধ পাউডারের প্যাকেট আর বিস্কুট দিয়ে গেল। এবার আরেকজন এসে জিজ্ঞাসা করল ভেজ না ননভেজ? আমি বললাম ননভেজ।
সন্ধ্যা ৬ টার পরে চিকেন স্যান্ডুইচ, চা দিলো। রাত ন'টার দিকে চিকেন, ভাজি, ডাল দিয়ে ভাত দিল। ( ভাগ্যিস ভেজ বলিনি। ভেজ বললে ভাজি ডাল দিয়ে রুটি দিত।) রাতের খাবার শেষ করার পর দই দিল। সব শেষ করে ঘুমানোর পালা। আমার আসন মাঝখানে। অর্থাৎ নীচ তলাযও না আবার উপরের তলায়ও না। আমি আমার জন্য নির্ধারিত বালিশ, চাদর গুলি নিয়ে আমার আসনে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতে যাবো। এমন সময় আমার সাথে যারা গিয়েছিল তাদের মধ্যে একজন বলে বিকাল থেকে একটা সিগারেটও খাই নাই। তখন আমি বললাম এটা ফুল এসি ট্রেন এখানে সিগারেট খাওয়ার কোন সুযোগ নাই। আর লেখাই আছে ধুমপান করলে ২০০ রুপি জরিমানা। এখন ওর কথা ২০০ রুপি দিলে দিবো তাও খাবো। আমাকে জোর করে সিট থেকে নামিয়ে দিলো। বাধ্য হয়ে বললাম চলেন। কিন্তু কই যাবো? হঠাৎ মাথায় আসলো পুরা ট্রেন এসি হলেও যে বগিতে রান্না সে বগিতেতো আর এসি থাকবে না। টহলরত ট্রেনের এক লোককে জিজ্ঞাস করে আমার লোকটিকে বললাম যান ওখানে গিয়ে খেয়ে আসেন।
কিন্তু সে আমাকে ছাড়া যাবে না। তাকে নিয়ে সেখানে গেলাম। সেখানে গিয়ে সেখান কার লোকজনের সাথে কথা বলে সেখানে সে সিগারেট খেলো। এখানে উল্লেখ্য যে প্রতিটি বগির একপাশে আলাদা ছোট্ট জায়গা আছে। থালা বাটি রাখার জন্য একটি রেক আছে এবং সেখানে একজন লোক সবসময় থাকে। খাবারের বগি থেকে আসার সময় আমাদের বগির পাশে ছোট্ট র্যাকটিতে একজন লোক প্লেট গুলা গুছাচ্ছিলেন আর আমাদের দেখে বললেন দাদা কই গেছিলেন। তখন আমি সরাসরি বললাম ওনার সিগারেট খাইতে ইচ্ছা করছিলো তাই উনারে নিয়া খাবারের বগিতে গেছিলাম। আমার কথা শুনে সে বললো সিগারেট খাইতে এতদুর যাইতে হয়! আমারে বললেতো আমি এখানে ম্যানেজ করে দিতাম। বললাম কি ভাবে? বললো সিস্টেম করে দিতে দিতাম। তখন আমার সাথের লোকটি বললো এখন আরেকটি ধরাবো। তখন ট্রেনের লোকটি বললো সমস্যা নাই আপনি একটা ধরান আর আমাকে একটা দেন। এইবার আমি সিস্টেম বুঝে গেছি। ট্রেনের লোকটি আমাদের জিজ্ঞাসা করলো বাংলাদেশে আমরা কোথায় থাকি। কথা প্রসঙ্গে লোকটিও বললো তার বাড়িও বাংলাদেশে ছিল। তখন আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞাস করলাম কোন জেলায়? বললেন রয়াল ডিস্ট্রিক। তখন এই জেলার বিশ্বের সব জায়গায় পাওয়া যায়। এবং ওনাদের কাছে সিস্টেম আবিষ্কার করা কোন ব্যাপার না।
আপানাদের কাছে প্রশ্নঃ
কোন জেলাকে রয়াল ডিস্ট্রিক বলা হয়??
No comments:
Post a Comment