যারা কলোনীতে ২০০০ এর পরের সাল গুলোতে ছিলেন না তারা অনেকেই হয়তো জানেন না আস্তে আস্তে আমাদের পুরো কলোনীই জঙ্গলে পরিনত হয়েছিল । বেশির ভাগ বিল্ডিং এরই নীচতলাগুলো খালি পড়ে থাকতো । ই টাইপ,এফ টাইপ আর সি টাইপের অনেক বিল্ডিং পরিত্যাক্ত হয়ে গিয়েছিল । এসময় কলোনীতে সাপ আর ইঁদুরের উৎপাত ছিল বেশি । আমরা থাকতাম D-4-F এ । ৩তলার উপর ও বিশাল সাইজের ইঁদুর থাকতো আর এগুলোকে মারতে আব্বু আম্মু আর ভাইয়া বেশ পরিশ্রম করতো ।
যাই হোক,আমি তখন কোন ক্লাশে পড়ি মনে নাই । শুক্রবার,আমি ভাইয়া আর আম্মু বসে বসে আলিফ লায়লা দেখছিলাম । আম্মু উঠে ওয়াশরুমে গেল । হঠাৎ ভাইয়াকে ডাক দিলো ওয়াশরুমের দরজার ওপাশ থেকে, বললো ভাইয়ার ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প গুলো থেকে একটা দিতে । ভাইয়া বুঝতে পারলো, পরে আম্মু বের হলো আর ভাইয়া ওর জীবনে প্রথমবার একটা সাপ মারলো স্ট্যাম্প দিয়ে colonthree emoticon
এর অনেকদিন পরের কথা । আম্মু বারান্দায় গাছে পানি দিচ্ছিলো আর বাসার ভেতরে কিছু একটা করছিলাম । হঠাত আম্মু তরু তরু বললে চিল্লানো শুরু করলো । দৌঁড়ে বারান্দায় গিয়ে দেখি একটা দুইহাত সমান লম্বা সাপ ।
কি করবো বুঝতে পারছিলাম না,আব্বু আর ভাইয়া কেউই বাসায় নাই । পাশেই দেখি ভাইয়ার সেই স্ট্যাম্প গুলো । একটা স্ট্যাম্প নিয়ে সাপটার গায়ে এলোপাথাড়ি মারা শুরু করলাম । মাথাটা পুরা থেঁতলে গেলেও লেজে প্রান থেকে গেল,দৃশ্যটা অনেক জঘন্য ছিল!! সাপটাকে ওই অবস্থাতে রেখেই আমি গেলাম দুই তলায় ছফা স্যারের ওয়াইফকে ডাকতে । আন্টি আসলো,সাপটা দেখলো,আম্মু আন্টিকে বর্ননা করলো আমার সাহসিকতা tongue emoticon এরপর বাসায় ঢুকলাম আমরা । এর ৫মিনিট পর বারান্দায় এসে দেখি সাপটা আর নাই । আমিও অবাক,আম্মুও অবাক । আব্বু আসার পর আব্বুকে বললাম কাহিনী । আব্বু বললো মনে হয় কাক নিয়ে গেছে মুখে করে সাপটাকে । এরপর বাসার চারদিকে কার্বলিক এসিড ছিটালো আব্বু । এরপরে আর কখনো তেমন সমস্যা হয়নি সাপের । তবে প্রায়ই সবাই কলোনীতে সাপটাপ দেখতো । একদিন কিছু মেয়ে অঞ্জুদির বাসায় পড়তে আসার সময় দেখে রাস্তায় একটা বিশাল সাপ রাস্তা পার হচ্ছে colonthree emoticon
.
.
.
এই ছিল আমার সাপ মারার গল্প। এরপর একবার চিড়িয়াখানায় আর আরেকবার গ্রামের রাস্তায় ছাড়া আর কখনোই সাপ দেখা হয়নি । কলোনীতে থাকার সুবাধে বিভিন্ন সাপ,বিশাল সাইজের ইঁদুর,বেজি, অনেক সুন্দর কিছু প্যাঁচা,বিভিন্ন পাখি,শিয়াল,গয়াল-সবই দেখার সৌভাগ্য হয়েছে । এখন আমার কাজিনদেরকে দেখলে আফসোস লাগে এই ছেলে মেয়েগুলার শৈশব কৈশর কাটে বইয়ে মুখ গুজে আর নাহয় টিভি দেখে । প্রকৃতি,প্রানীর সাথে এদের দেখা হয়না । আর আমরা বেড়ে উঠেছিলাম প্রকৃতির মাঝে
No comments:
Post a Comment