বছর আটারো আগে উনার সাথে প্রায় প্রতিদিন দেখা হতো বাসে। উনি আমার পরের স্টেপেজ থেকে উঠলেও যাত্রা শেষ হতো আমাদের একই স্টেপেজে... একদিন দু'দিন তিন দিন এরপর থেকে পরবর্তি স্টেপেজে বাস এলেই তাকিয়ে থাকতাম উনি উঠল কিনা! চোখে মুখে একটা ভাষা বিনিময় শুরু হলো, শব্দ বিহীন কথাটি ছিল কেমন আছেন? ভাল আছি...... গল্পটা আর একটু আছে তবে এতটুকু বলতে আমি বেশ মজা পাই...
আমাদের এই গ্রুপ টা হচ্ছে আমাদের কলোনীর মিলন মেলা, প্রাণের স্পন্দন, আমাদের সুখ দু:খ, প্রেম ভালোবাসা, হাসি আনন্দ, মজার সব অভিজ্ঞতা একে অপরের সাথে শেয়ার করার মাধ্যম। তবে এসব শেয়ার করতে গিয়ে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে, কোন নেগেটিভ বিষয়ে, বা কারও কোন দুর্বল বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে যেন সরাসরি কারো নাম প্রকাশ না পায়, আমরা কারো নাম দিয়ে এমন কিছু প্রকাশ করবনা যাতে করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বিব্রত হয়, আমাদের জুনিয়র সিনিয়র সকলের অনুভূতি ও সম্মানের প্রতি শ্রদ্ধা রাখব। অশ্লীল যেকোন কিছু পোষ্ট করা থেকে বিরত থাকব।
Sunday, July 17, 2016
এবারের ঈদে টিভিতে ঈদের অনুষ্ঠান কে কয়টা দেখছেন?
এবারের ঈদে টিভিতে ঈদের অনুষ্ঠান কে কয়টা দেখছেন? আমার ধারনা উত্তর আসবে একেবারে নূন্যতম সংখ্যা। এতো এতো চ্যানেল আর দীর্ঘ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান মানুষ কে এখন আর আকর্ষণ করেনা। তার উপর তো আছে বিরতিহীন বিজ্ঞাপনীয় অত্যাচার। আগে পুরো রোজার মাস জুড়ে অপেক্ষারত থাকতাম একটি মাত্র নাটক, আনন্দ মেলা আর ঈদের পরদিন টিভিতে বাংলা সিনেমা দেখতে। আর ওই সব অনুষ্ঠানের পোস্টমর্টেম চলত অনেক দিন। ঈদের অনুষ্ঠান ছিল মাত্র দু দিনের, আর তার রেশ থেকে যেত পরবর্তী ঈদ পর্য্যন্ত। আর এখন, বাসার সবাই মিলে হইচই করে দলবেধে টিভিতে ঈদের অনুষঠান দেখা তো প্রাগৈতিহাসিক ব্যাপার।
আমি ইউটিউব এ কিছু ঈদের কিছু অনুষ্ঠান দেখেছি, ভাড়ামো আর শরীর প্রদর্শন ছাড়া কিছু নেই। এমন সব কিছু কিছু প্রোগ্রাম দেখায় যা আমাদের সমাজ সংস্কৃতির সাথে বেমানান। রুচী বোধের দৈন্যদশা সর্বত্র। খালি Quantity বেড়েছে Quality সর্বনিম্ন পর্যায়ে।

একটি গোলাপি জামার গল্প কিংবা কেউ কেউ কথা রাখে
গল্পের শুরুটা একটা পোস্ট এর কমেন্ট থেকে।সেখানেই রিপা আপা কমেন্ট করছিলেন তারিক ভাইকে ফতুয়া দিবেন উপহার। কিন্তু উনি চাইলে তা ভুলে যেতে পারতেন। আজকাল এসব কে বা মনে রাখেন।কিন্তু না সবাই যখন ঈদের জামা কয়টা পেয়েছে তা হিসাব করতে ব্যস্ত তখন রিপা আপা তার কথা রাখলেন। গোলাপি রং এর ফতুয়া। আহামারি হয়ত না। গোলাপের মত মন যার সেই ত দেয় এরকম উপহার। সবাই কথা দিয়ে কথা রাখেনা। কেউ কেউ রাখে।রিপা আপা তাই করলেন। তারিক ভাইও খুশি।
কিন্তু এদিক দিয়ে এই রং টা একজন কে স্মৃতিকাতর করে তুলল।কারন অনেক অনেক দিন আগে এই রং এর একটি শার্ট উনি রাস্তা দিয়ে হেটে যাবার সময় রিক্সার আঘাতে ছিড়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু রিপা আপার ফতুয়ার রং যেন উনার হৃদয় খুড়ে বেদনা জাগাল। মেরুন,আকাশী, ঘিয়া অনেক রং আছে কিন্তু সেগুলো ত গোলাপি না,গোলাপীর তুলনা শুধুই গোলাপী



৯৯ সালের প্রথম দিকের ঘটনা
৯৯ সালের প্রথম দিকের ঘটনা, একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছি, যতটুকু সম্ভব মাঞ্জা মেরেই গিয়েছি পরনে হাল্কা গোলাপি একটি শার্ট, এ্যাশ কালার প্যান্ট আর কালো ফর্মাল শু। বিয়েতে উপস্থিত ছিল কলোনির আরো কিছু পোলাপান। সবাই বলল এই শার্ট টি তে নাকি আমাকে ভালো লাগছে। অনুষ্ঠানে আরো একজন ছিল, এক সময় হয়ত বলতাম "বিশেষ" কেউ, কিন্তু ততদিনে বিশেষ কেউ তার বিশেষ নামক বিশেষণ টি হারিয়ে ফেলেছে। সেই বিশেষণ হীন "বিশেষ" জনও এক ফাঁকে জানালো এই গোলাপি শার্ট টি তে নাকি আমাকে খুবই দারুন লাগছে। যদিও আমিও তখন তার কাছে বিশেষণ হীন বিশেষ ব্যাক্তিতে পরিনত হয়েছি। তা স্বত্তেও " তোমাকে দারুন লাগছে" এই কথাটি মনে গেথে রইল।
এরপর তো চাকুরী তে জয়েন করতে ঢাকা এসে পড়লাম, স্বল্প বেতনের চাকুরী, অফিস পুরান ঢাকায় ( বসুন্ধরাগ্রুপ এর একটি ব্রাঞ্চ অফিস)। প্রথম যেদিন চাকুরী তে জয়েন করলাম সেদিনও গায়ে ছিল গোলাপি শার্টটি। থাকি অফিসের কাছাকাছি একটি মেসে। পুরান ঢাকা মানেই যানজট আর মানুষ, কিছুদিন পরে সকালে অফিসে যাচ্ছিলাম, সেদিনও ছিল পরনে সেই গোলাপি শার্ট। রিক্সা, গাড়ি আর মানুষের ভিড় ঠেলে রাস্তা পার হতে গিয়ে এক বে রসিক রিক্সার খোঁচায় সে গোলাপি শার্ট শেষ, মানে ছিড়ে গেল। গোলাপি পর্ব এখানেই শেষ।
এরপর গোলাপি রঙ এর আর কোন শার্ট অনেক দিন পরিনি, বহু দিন পর আরেক টি গোলাপি শার্ট বানালাম, তবে কেঊ আর বলেনা তোমাকে এই শার্টে দারুন লাগছে, ততদিনে মন্ত্রী সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নিয়োগ হয়ে গেছে ( সাগর কাইটা হাংগর নিয়া আইছি আর কি) উলটো সেই মাননীয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলে গোলাপি কাপড় নাকি মেয়েদের কালার। তার কিছু দিন পরই বুয়া সে শার্টটি ধুতে গিয়ে অন্য কাপড় থেকে রঙ লাগিয়ে নষ্ট করে ফেলে। ( আল্লাহ জানে, এখানে মাননীয়া মন্ত্রীর কোন ষড়যন্ত্র ছিল কিনা)
আসলে গোলাপি কালার টা বোধ হয় আমাকে সুট করেনা।
আমাদের এই পেজে যে ভাই/বোনেরা লেখা/লেখি করে, তাদের সবার লিখা আমি পড়ি
আমাদের এই পেজে যে ভাই/বোনেরা লেখা/লেখি করে, তাদের সবার লিখা আমি পড়ি। মাঝে মাঝে হয়তো বাদ যায়। তবে সেটা অনিচ্ছাকৃত। লাইক দিতে ভুল করিনা। অনেক সময় হয়তো বাদ যায়, তাও অনিচ্ছাকৃত। কথা খুজে না পেলে, অনেক সময় কমেন্টস করিনা। কিছু ছোট ভাই/বোন আছে, যারা আমার এই মনে প্রচন্ড আঘাত দিয়েছে, তাদের লেখাও আমি মনোযোগ দিয়ে পড়ি, লাইক এবং কমেন্টস হয়তো করিনা। আমার এই লেখাটি লাইক বা কমেন্টস নিয়ে নয়। লেখাটি অন্য এক বিষয়ে।
আতিকের লেখা পড়তে আমার ভালো লাগে। একটা সময়, আমি আর আতিক লিখতাম এবং সবাইকে অনুরোধ করতাম লিখার জন্য। আতিক এর গদ্য আকারের লিখা গুলি বেশ সরলিকরন। সোজা/চ্যাপ্টা কথা।
যেমন, একটা শার্ট ছিলো, একটা প্যান্ট ছিলো, পড়া লেখায় মামারা সাহায্য না করলে, "আমি আতিক এত দূর আসতে পারতাম না"। এই চিত্র গুলি ছিলো, csm- এ চাকুরি করা বাপ/চাচাদের ছেলে মেয়েদের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। তবে আমরা যথেস্ট ভাগ্যবান ছিলাম। আমাদের একটি স্কুল ছিলো, যেখানে আমরা অল্প বেতনে লেখা/পড়া করেছি। আমাদের একটি হাস্পাতাল ছিলো, অনায়াসে প্রাথমিক চিকিতসা পেয়েছি। থাকার মত বাসা ছিলো, এখন এফ টাইপের সমান দুই রুমের ফ্ল্যাট কিনতে গেলেও অনেক টাকা লাগে। কলেজ বাস ছিলো, শহরে গিয়ে বাজার করার জন্য, সপ্তাহের একটি নির্দীস্ট দিনে মাঝে মাঝে-ই আমরা গাড়ি পেতাম। বিনোদনের জন্য বহু উপকরন আমাদের csm-এ ছিলো। যেখানে আমাদের টাকা খরচ করতে হয়নি। এখনতো বউ বাচ্চা নিয়ে বাসা থেকে বের হতেই অনেক টাকা লাগে।
আমাদের বাবা/মা'রা উনাদের সাধ্যমত আমাদের খুশি রেখেছেন। যার ভুরি/ভুরি উদাহরন আমি দিতে পারবো। অনেক ভাই/বোন সহ ফ্যামিলিতেও, কস্ট করে হলেও বাবা/মা'রা তাদের সন্তানদের খুশি রেখেছেন।
আজকের সময়ে যা অসম্ভব। চিটাগাং নিউমার্কেট- এ "রেভলন" নামে একটি কাপড়ের শো-রুম ছিলো। আমার খুব প্রিয় ছিলো শো-রুমটি। দেখা গেছে, আমার একটি শার্ট পছন্দ হয়েছে, কি করি? বাবাতো টাকা দিবেনা, মা'র কাছে হাত পাততাম।মা'ও অনেক সময় মুখ ঝামটা দিতো। চুপচাপ ছুটে যেতাম, সিদ্দীক চাচির কাছে[অপুর আম্মা] কিংবা আখতার চাচির কাছে[স্বর্নার আম্মা]। পা ধরে বসে থাকতাম, প্লিজ চাচি শার্টটা কিনে দেন। এখন এই সব কল্পনা করা যায়না।
আমরা ভালোছিলাম। এবং খুবি-ই ভালো ছিলাম। আমাদের সময়ের অভাবটা খুব একটা কস্টের ছিলো না। বিলাসিতা ছিলোনা, তবে সামান্যতেই আমরা ভালো ছিলাম।
ভালোছিলাম বলেই csm-কে আমরা ভুলতে পারিনা। এখন সারা বাংলাদেশে হারিকেন দিয়ে খুজেও, csm-এর মত সেই সমাজ খুজে পাওয়া যাবেনা।
ছেঁড়া প্যান্ট (Ripped pant) ও ছেঁড়া মোজা সমাচার
আজান'এর ফেভারিট চয়েজ জিন্স প্যান্ট (ওর ভাষায় জিন্সি মিন্সি প্যান্ট)। গত কয়েকদিন আগে ওর একটা জিন্সের ফুল প্যান্ট হাঁটুর ওখানটায় ছিঁড়ে যাওয়ায় ভীষন কান্নাকাটি। এখনি ওকে আরেকটা প্যান্ট কিনে দিতে হবে। ওর মা, দাদুমনি, দাদুভাই, কাকা, কাকীরাও কান্না থামাতে না পেরে আমার মাথায় এক বুদ্ধি খেললো।
অনেকদিন আগে সবাই মিলে বজরঙ্গী ভাইজান মুভিটা দেখেছিলাম সেদিন থেকেই টিভির বিজ্ঞাপন, মুভির ট্রেলার কিংবা কোন গানে সল্লু মিয়াকে দেখলেই আজান চিৎকার দিয়ে উঠে "সাহিদার মামা"। সল্লুকে ভাল মতই আজান চিনে। আমিও তাই গুগলে সার্চ দিয়ে সাহিদার মামারসহ শাহরুখের ripped pant (ছেঁড়া প্যান্ট) পরিহিত কয়েকটা ইমেজ ওকে দেখালাম। আর বললাম দেখ তোমার সাহিদার মামাও ছিঁড়া প্যান্ট পড়ে স্টাইল করে। তখন থেকেই মাথায় ভুত চেপেছে সব প্যান্টই ছিঁড়ে দিতে হবে। নতুন আরেক ঝামেলার শুরু।
সে যাই হোক গত কয়েকদিন আগে অফিসে যাব, মোজা পড়ছি। হঠাৎ করে বলে বসলো "বাবা তুমি মোজা ছিঁড়ে স্টাইল করো?" আমি কিছু না বুঝেই বললাম "তুমিইতো বল, স্টাইল করতে হয়"। আজানের ঝটপট উত্তর "জুতার ভিতরে থাকলে কেউ কি তোমার স্টাইল দেখবে?
ওর ধারনা, বাবা ইচ্ছে করেই মোজা ছিঁড়ে স্টাইল করছে। কিন্তু জানি আজানের ছোট্ট ব্রেইনের এই ধারনা যখন পাল্টাবে তখন "ও" বুঝতে পারবে আমরা বাবারা কেনই বা মাসের পর মাস ছিঁড়া মোজা পড়ে স্টাইল করি (জুতার ভিতরে থাকাতে হয়তো কারো চোখে পড়ে না)। কিংবা কোথাও গিয়ে কেন জুতাটা খুলতে ইতস্তত করি!!!!!

আজ অনেকদিন পর আকাশি রঙ এর শার্ট টি পরে অফিসে যাবো
আজ অনেকদিন পর আকাশি রঙ এর শার্ট টি পরে অফিসে যাবো, আমি পরের দিন যে কাপড় পরে অফিসে যাবো তা আগের রাতেই আলমারি থেকে বের করে রেডি করে রাখি, কারন সকাল বেলা তাড়াহুড়ো র মাঝে কাপড় চোপড় রেডি করা বিরাট হুজ্জতের মত লাগে আমার কাছে। যা হোক, রাতেই যখন এই আকাশী শার্ট টি রেডি করছিলাম, বউ বলে উঠলো " তুমি হঠাৎ এই গরমের মাঝে ফুল হাতা শার্ট বের করছ কেনো, তাও আবার আকাশী রঙ এর ঘটনা কি? " আমি উত্তরে বললাম গোলাপি রঙ এর শার্ট থাকলে তাই পরতাম, গোলাপি যেহেতু নাই আকাশি শার্ট ই পড়তেছি। বঊ আরেক ডিগ্রী গরম, বলে এসব আকাশি গোলাপি বাদ দাও, বুড়া হইতেছ, এবার আমি কইলাম মেরুন রঙ কি চলবে? বৌ উত্তরে কয় সব রঙ বাদ, তুমি কালই গিয়া তিন চারটা সাদা শার্ট বানাইতে দিয়া আসবা। এবার আমি বলি, সাথে নেভী ব্লু প্যান্ট বানালে কেমন হয় আরো থাকবে সাদা কেডস, পুরা সিএসএম হাই স্কুল। বউ এইবার ঝামটা মাইরা বলে সব কিছুতে খালি সিএসএম সিএসএম করো কেন। আর এবার আমার সিরিয়াস ভংগীতে জবাব---
"ওই খানেই তো আমার শিকড় আর অস্তিত্ব।"
Subscribe to:
Posts (Atom)
No one has commented yet. Be the first!