Sunday, July 3, 2016

গতকাল কলোনীর কিছু চুরির ঘটনা লিখতে


গতকাল কলোনীর কিছু চুরির ঘটনা লিখতে গিয়ে-বন্ধু মানিক ও অন্যান্য কিছু বন্ধুর কিছু গোপনিয় ঘটনা চলে আসায় আর ওপেন পেইজে লিখতে পারলাম না। ঘটনার মোড় ঘুড়িয়ে ভ্রমনের অভিজ্ঞতার দিকে নিয়ে গেলাম। আজকে আর একটা নিজের জীবন থেকে নেওয়া ঘনটার কিছু অংশ শেয়ার করলাম। প্যানাসনিক ব্যান্ডের কমিউনিকেশন সাইডে-পিএবিক্স ফ্যাক্স এর সফটওয়ার ও হার্ডয়ার ট্রেনিং এর জন্য জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে ট্রেনার আসল। তাদের সাথে হোটেল শেরাটন ও পূর্বানী হোটেলে অনেকগুলি গ্রুপিং ফটো তুললাম। ফটোগুলি দেখে বৌয়ের ধারনা আমি অনেক বড় ইঞ্জিনিয়ার হয়েগেছি-যেই বাসায় আসে তাকে ফটোগুলি দেখায়। একদিন বাসায় এসে দেখি বাসায় অনেক মানুষ। কি ব্যাপার? সবাই জানালো আমার মত ইলেকট্রনিক্স বিশেষজ্ঞ ইহজগতে আর নাই। সবাই চাচ্ছে আমি যেন দেখে শুনে তাদের টেলিফোন, ফ্যাক্স এমনকি কম্পিউটারও কিনে দেই। মোদ্ধা কথা বিনা দালালিতে দালাল। বিশেষজ্ঞ দালাল। সবাইকে হ্যান-তেন বলে খেদালাম কিন্ত বাড়ীওয়ালাকে ঠেকানো গেল না। একদিন সকলে অফিসে আসব এমন সময় বাড়ীওয়ালা এসে হাজির। 

বাড়ীওয়ালা আবার এখানে থাকে না। থাকেন উত্তরায় গাড়ী নিয়ে হাজির। বাড়ীওয়ালাকে সকল সকল দেখে ভাল লাগল না। ভাড়াতো কেয়ারটেকার ছ্যামরাটা নিয়ে যায় এই মড়া আবার এখন কেন? বাড়ীওয়ালা দর্জায় দাড়িয়ে বলল? আসতে হুকুম দিন। কথা শুনে গা জ্বলেগেল, ঢং, ঢংয়ে আর বাচেনা। আমি হাসি মুখ করে বললাম আসুন। বাড়ীওয়ালা এসে সোফায় বসল। তারপর ধিরে সুস্থে যা বলল তাতে আমার ট্যারা হওয়ার জোগার। বাড়ীওয়ালার ক্লাস 7 পড়ুয়া ছেলের জন্য কম্পিউটার ও নিজের জন্য একটি ফ্যাক্স মেশিন কিনবেন। ছেলেটা নাকি বখে গেছে। স্কুলে যায় না ঠিকমত, পুলিশেও দুই একবার ধরে নিয়ে গেছিল। ছেলে বলেছে বাবা কম্পিউটার কিনে দাও, কম্পিউটার না দিলে পড়বনা। আমি বুঝিয়ে বললাম ক্লাস 7 এর ছেলের জন্য তেমন দরকার নেই। আসলে ও পড়বে না। ফালতু বাহানায় ধরেছে। বাড়ীওয়ালা হাত তুলে বাধা দিলেন, সেতো জানে তবুও ঘরে একটা কম্পিউটার থাকা দরকার। একটা কম্পিউটার না থাকলে ঘরটা বেমানান লাগেনা? আমি বললাম জি লাগে। তাহলে আমাকে একটা কম্পিউটার ও ফ্যাক্স মেশিন কিনা দেন, আপনি ভাল চিনবেন। 

পরিসংখ্যান রিপোর্টঃ জুন_২০১৬_(১_জুন_২০১৬_থেকে_৩০_জুন_২০১৬_পর্যন্ত)

- Al Amin Billah Shujon

গত মাসের মত এই মাসেও লিখা এসেছে অনেক কম। জুন মাসে সি.এস.এম পেজ এ লিখালিখি আর লেখকের পদচারনা ছিল মে মাসের তুলনায় অনেক বেশি কিন্তু লিখা এসেছে তুলনামুলকভাবে অনেক কমযাইহোক এইবার ফলাফল প্রকাশ করি।

# Facebook CSM Colony পেজ এ জুন ২০১৬ (১ জুন ২০১৬ থেকে ০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত) ছোট, বড়, মাঝারি, বাংলা, ইংলিশ, বাংলিশ মিলিয়ে এখনো পর্যন্ত সকল ছোট, বড়, মাঝারি ভাই বোনদের মোট লিখার সংখ্যা (অনুছড়া/পরমাণু ছড়া/হঠাৎ ছড়া/কচুর ছড়া/বাথরুম খেলা/অন্যান্য খেলা বাদে) ১৪৭ টি (এভারেজ ৪.৯), যা মে তে ছিল ১৩৮ টি (এভারেজ ৪.৪৫)

# জুন মাসের ফলাফল সম্পর্কে  বিস্তারিত জানতে চাইলে http://csmcolony.blogspot.com এই সাইটের নিম্নলিখিত লিঙ্ক এ প্রবেশ করুন http://goo.gl/8ZkLCKএই লিঙ্কে জুন ২০১৬ এর সবগুলো লিখা (১৪৭ টি) আর্কাইভ করা আছে।

# জুন মাসে সবচেয়ে বেশি লিখা পোস্ট হয়েছে জুন ২০১৬ (১১ টি) আর সবচেয়ে কম লিখা পোস্ট হয়েছে ১ জুন এবং ২০ জুন ২০১৬ (মাত্র টি করে)

# জুন মাসে মোট লেখকের সংখ্যা ছিল ৪১ জন, যা মে তে ছিল ৩৬ জন, সুতরাং লেখকের সংখ্যা কিছুতা বেড়েছে, মাত্র ৫ জন (মে এর তুলনায় ১৩.৮৯%) বেড়েছে। আবার মে এর তুলনায় জুনে লিখার সংখ্যা বেড়েছে টি (মে এর তুলনায় ৬.৫২%)

# Facebook CSM Colony পেজ এ শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত (৩০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত) সর্বমোট লিখার সংখ্যা ১৬৩৭ টি। http://csmcolony.blogspot.com এই সাইট এ সবগুলো লিখা আর্কাইভ করা আছে এবং প্রতিনিয়িত আপডেট করা হয়।  

# যদি কারো লিখা ভুলবশত বাদ যায় তাহলে ক্ষমা করবেন এবং আমাকে ট্যাগ করবেন উল্লেখ্য মে তে লিখার সংখ্যা অনেক কম হবার জন্য এই মাসের পরিসংখ্যান করতে অনেকটা সহজ হয়েছে।

•    মে ২০১৬ তে আতিক ভাইয়ের এর লিখা সবচেয়ে বেশি, উনার সর্বমোট লিখার সংখ্যা ২৪,
•    দ্বিতীয় অবস্থান আছেন নিরু ভাই, স্কোরঃ ১১,
•    তৃতীয় অবস্থান আছেন মোসাদ্দেক আলী ভাই, স্কোরঃ ৯

সেদিন দুজনে


মোমিন চাচাকে আমি প্রথম দেখি নাজমুল ভাইদের তিনতলায় আসার পর। পুশন তখন অনেক ছোট।ওর নাম প্রথমে নাকি ছিল পূজা।পরে বদলে পুশন রাখা হয়।খুব স্মার্ট ছিলেন।আর চাচী ছিলেন খুব শান্ত। এর অনেকদিন পর উনারা আবার এলেন c1 এর তিন তলায়। ততদিনে প্রিন্স এর জন্ম হয়েছে। চাচা বাচ্চাদের খুব ভালবাসতেন। কলোনি র ছোট ছোট বাচ্চাগুলোকে নিয়ে ঘুরতেন। ওনারা যে বিল্ডিং এ থাকতেন, তার সামনে বসার জন্য কয়েকটা পাকা বেঞ্চ তৈরি করে দিয়েছিলেন যাতে গল্প করার জন্য বসা যায়। চাচা বলেছিলেন, দোলনা করে দিবেন কিন্তু পরে কতৃপক্ষ অনুমতি না দেয়ায় আর দোলনা আসেনি। বিকেল বেলায় চাচা অফিস থেকে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরে আসলেও প্রান খোলা হাসি লেগেই থাকত। একবার বেশ কয়েকটা বাচ্চা নিয়ে রিকশা করে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে চাচা এক্সিডেন্ট করলেন। অফিসার্স ক্লাবে কোন অনুষ্ঠান হলে সেটা কত টা সুন্দর করে করা যায় তাতে চাচা অগ্রনী ভূমিকা পালন করতেন।এসব ব্যাপারে চাচীর মনে হয় নিরব মানসিক সাপোর্ট ছিল। তাই হাজারো ব্যস্ততার মাঝে চাচা এই কাজগুলো করতেন।আমি কখনো চাচী কে কথা বলতে শুনিনি। শুধু গান গাইতে শুনেছি। পয়লা বৈশাখ আসার আগে চাচী র রেওয়াজ করতেন।পুশন কে সামনে বসিয়ে। মোমিন চাচাকে আমার খুব রোমান্টিক মানুষ মনে হত।একবার কলোনি থেকে আসার পর টিভিতে চাচা চাচী কে দেখাচ্ছিল। উনারা রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছেন।

এর অনেক বছর পর চাচা কে দেখলাম কে ইপি জেড এর গেস্ট হাউজে। সময় গড়ালেও চাচার আন্তরিকতায় এতটুকু ভাটা পড়েনি।বরং তা আরো বেড়েছে। এরকম সুন্দর আর ভাল মনের মানুষ সুস্থ ভাবে বেচে থাকেন আরো অনেক বছর, যাতে করে আমরা ভাবতে পারি, যান্ত্রিকতা আমাদের সবকিছু তে প্রভাব ফেললেও আন্তরিকতাটুকু কেড়ে নিতে পারেনি।

প্রতিবেশিনী


আমাদের দোতলায় থাকতেন রুমা আপারা। উনারা ছিলেন ছয় বোন। কোন ভাই ছিল না। উনার আম্মা মাঝে মাঝে বেশ কিছু অদ্ভুত কথা বলতেন।এর মধ্যে কোন টা শুনে হাসি পেত আবার কিছু কিছু শুনে বিরক্ত লাগত।

একবার উনাদের একটা মোরগ খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না। উনি পরিচিত যাকেই দেখছেন তাকেই জিজ্ঞেস করছেন কোথাও মোরগ টাকে দেখেছে কিনা। চাটগাঁইয়া শুদ্ধ মিলিয়ে বলছেন। সামনের বিল্ডিং এ থাকতেন পলি আপা।উনি আবার রিনা আপার বান্ধবী ছিলেন।পলি আপাকে দেখতেই খালাম্মা বললেন, " পলি, আমাদের রাতা মোরক (মোরগ)টা দেখছ? পলি আপা বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করলেন, জি খালাম্মা, বুঝিনি "
রিনা আপা পরে বুঝিয়ে বললেন।

আরেকদিন বিজয় দিবসে টিভি তে রুনা লায়লার গান দিচ্ছে। রুনা লায়লার পাশ দিয়ে সেনাবাহিনী কুচকাওয়াজ করছে আর রুনা লায়লা গান গাইছেন," লক্ষ প্রানের মুল্যে গড়েছি সোনার বাংলাদেশ"।

খালাম্মা সাথে সাথে জানতে চাইলেন, ওরা যে কুচকাওয়াজ করছে, ওগুলা ঠিক হচ্ছে কিনা"
আমি বললাম, কেন খালাম্মা, কি হয়ছে?

উনি বললেন, ওদের খেয়াল ত কুচকাওয়াজ এর দিকে নাই, ওরা ত সবাই রুনা লায়লার দিকে তাকিয়ে আছে" 
খালাম্মার কথা শুনে আর কথা বাড়ালাম না।

আরেকদিন উনার ছোট মেয়ে মুক্তা যার সবকিছুতেই বায়না করা অভ্যাস ছিল।আমি কলোনি র গেইট এর পাশে র ইসলাম এর দোকান থেকে হলুদ রং এর বেলুন কিনলাম। খেলছি।এটা দেখে মুক্তাও ওর আম্মাকে বলল,বেলুন কিনে দিতে।মুক্তা আবার বেলুন কে বলত, ফুতানা। ওর আম্মাকে যখন বেলুনের জন্য বার বার বিরক্ত করছে, সাথে সাথে খালাম্মা জানতে চাইলেন, বেলুন কোথায় দেখেছে। মুক্তা আমার দিকে হাত দেখাল। 

খালাম্মার উত্তর শুনলে যে কারো মাথা ধরে যাবে।বললেন, "জনিকে বল বেলুন কিনে দিতে।ও দেখায় ছে কেন? আমার কাছে ভাংতি টাকা নাই এখন। " উনি বড় বলে আমি কিছু না বলে চলে এলাম।

এমনই অদ্ভুত টাইপের কথা বলে উনি মাঝে মাঝে অবাক করে দিতেন