Wednesday, September 23, 2015

কেমন করে কাটে আমার এমন বাদল বেলা



(লেখালেখি বলেন আর পাকামি বলেন যা করছি সেটা ক্লাস নাইন থেকে শুরু হয়েছে। শেষ হয়েছে ২০১৪ এর শুরুর দিকে। বেশিরভাগ লেখাই হারিয়ে গেছে। অল্প কিছু সফট কপি ছিল সেগুলোই আপনাদের জোর করে গেলাচ্ছি। সবার কাব্য চর্চা দেখে আমি খুব উৎসাহিত হয়েছিলাম। এরপর দিলাম গল্প, আপনারা অকুন্ঠ প্রশংসা করলেন যার যোগ্য আসলে আমি নই। আশা করেছিলাম সবাই গল্প লেখা শুরু করবেন। যাই হোক, আরেকটা গল্প খুঁজে পেয়েছি। এটাই হয়ত শেষ। আর কোন কপি পাচ্ছি না। এই গল্পে হুমায়ুন আহমেদের ছায়া খুঁজে পেতে পারেন হয়ত। এতো বড় একজন লেখকের প্রভাব ছোট গল্পকারদের উপর পড়বেনা এটা ভাবা অবান্তর। আপনাদের লেখা গল্প পড়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষায় রইলাম। )
কেমন করে কাটে আমার এমন বাদল বেলা
---------------------------------------------

পারুল আমার বুবুর নাম



কবিতা হলো। এবার গল্প হোক।
পারুল আমার বুবুর নাম
----------------------------
গুলিস্থানে বাসের জন্য লাইনে দাঁড়ালাম। বিশাল লাইন। বাসের নাম সময় নিয়ন্ত্রন। হকাররা ঘুরেঘুরে বুট বাদাম বিক্রি করছে। একটা বাচ্চা মেয়ে দেখলাম বাদামের পোটলা হাতে ঘুরছে। বাদাম বেচার প্রচেষ্টা। অপেক্ষার জন্য বাদাম কার্যকর জিনিস। মেয়েটাকে ডাকলাম। মানিব্যাগ খুলে পাঁচ টাকার নোট খুঁজে পেলাম না। এক পোটলা বাদাম পাঁচ টাকা। পঞ্চাশ টাকার ভাংতি দিতে অপারগতা প্রকাশ করলো মেয়েটা। ওকে জিজ্ঞেস করলাম কি নাম রে তোর?
পারুল। অস্থির হয়ে জবাব দিলো মেয়েটা। ভাংতি থাকলে দেন নাইলে বাদাম ফেরত দেন।

প্যান্টের পকেটে দশ টাকা পাওয়া গেলো। কি ভেবে আমি দুই ঠোঙ্গা বাদাম কিনে ফেললাম।
পারুল। পারুল বু। গুলিস্থানের ব্যস্ত রাজপথে দাঁড়িয়ে আমার কাঁকনপুরের পারুল বুর কথা মনে পড়ে গেলো। আমাদের এক বাড়ি পরেই পারুল বু দের বাড়ি। পারুল বু তখন কলেজে পড়ে। লম্বা সুন্দর একটা মেয়ে। মাথা ভরা চুল। পারুল বু সবসময় বলত আমি নাকি পারুল বুর পিছে পিছে ঘুরি।

স্পর্শ


হলিক্রিসেন্ট হসপিটালে বাবা কে নিয়ে মাত্র আসলাম । শুরু দিকের কঠিন সময় টুকু বাদ দিলে হসপিটালের দিন গুলো খারাপ ছিল না। ডাক্তার পেসেন্ট মেডিসিন এই নিয়েই আমার লাইফ । এইভাবেই চলবে মেনে নিয়েছি । আমি মাস্টার্সের পরীক্ষায় এত সিরিয়াস ছিলাম বলে মনে হয় না যত টা সিরিয়াস ছিলার বাবার প্রতি, একটু গাফিলতি করলে কি কঠিন সময় ফেস করতে হবে আমি জানতাম। আমাকে বাবার প্রেসক্রিপ্সন যেভাবে মুখস্ত করতে হয়েছে সেভাবে যদি ম্যানেজারিয়াল একাউন্টস পড়তাম তাহলে আজ পচে মরতে হতো না। যাই হোক হলিক্রিসেন্ট এর সব ডাক্তার দের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল। প্রফেসর মুলকুতুর রহমান স্যার এক সময় বাবার রেগুলার ডাক্তার ছিল। উনি চাকরির কারনে সৌদি চলে যান প্রায় এক যুগ পর ফিরে এসে ইউনুস সাহেবের খবর নেন। ইউনুস সাহেব হচ্ছে জটিল এক পেসেন্ট । সারা জীবন অনেক মিরাকল হয়েছে তার উপর দিয়ে । বাবার হার্ট ছিদ্র ছিল এই রকম পেসেন্ট অপারেশন ছাড়া বেশী দিন টিকে থাকতে পারে না, বাবা ছিল , খুব ভালো ভাবেই ফিরে এসেছিল । কেন ফিরে এসেছিল কি করে ৬০ বছর টিকে ছিল আল্লাহ জানে । মুলকুতুর স্যার এসেই আমার সামনে পরলো , ডাক্তার দের বোর্ড বসিয়ে ছিল। মিটিং এর পর আমার প্রশ্নের সম্মুখিন হয়ে সে কিছুটা বিরক্ত ছিল। রাতে বাবার শরীর খারাপ হলে আবার কল করি। উনি ছুটে আসেন , এসে আমাকে দেখেই কিছুটা বিরক্ত ভাব নিয়ে বাবাকে দেখেন । ইডিনিল কেন দেয়া হয় নাই জানতে চেয়েছে ইন্টার্নির ডাক্তার এর কাছে? উনি আমাকে দেখিয়ে দিয়ে বলেছে ও খাওয়াতে দেয় নাই। একটু বেশী পন্ডিতি করে ছেলেটা । এমনি তেই আমারে দেখতে পারে না তার উপর কমপ্লেইন আমারে যে কি করে আল্লাহ জানে ?

আমি আর সুমন


১৯৮৯ সালের দিকের ঘটনা, আমি আর সুমন (মানিক ভাইএর ছোট ভাই D5) দুপুরের দিকে পুকুর পাড়ে বসে আড্ডা দিচ্ছি, এমন সময় সুমন তার বাবা (মরহুম ইউনুস সাহেব) কে বাসা থেকে নামতে দেখেই পুকুরে লাফ দিয়ে লুকিয়ে পড়ল (তখন পুকুর পুরোপুরি শুকনো ছিলো) আমি জিগ্গাসা করাতে সুমন বলল আব্বা এখন বাজারে পাঠাবে তাই লুকিয়ে পড়লাম ওদিকে ইউনুস কাকা আমার কাছে এসে খুব মোলায়েম ভাবে বললেন “ বাবা তুমি আমাদের সুমর কে দেখছো? আর আমিও খুব বিনয়ের সংগে বললাম , না কাকা দেখি নাইতো, সংগে সংগে কাকা বললেন- আতিক আমি তোমার কান টা ছিড়ে দিবো, এই মাত্র দেখলাম সুমন পুকুরে লাফ দিয়ে লুকালো আর তুমি বলছ দেখোনি, এরপর মেঘগর্জন স্বরে বললেন- সুমন উঠে আয়। সুমনের চেহারা টা হইছিলো পুরা তখন চোরের মতো আর আমার চেহারার কথা কি আর বলব।

আল্লাহ ইউনুস কাকাকে বেহেশত নসীব করুন।