Friday, March 18, 2016

আমাদের নাজমুল ভাই


আমি ছোট থাকতে মনে করতাম হাউজিং কলোনীর লিডারশীপ মনে হয় ওনার কাছে,কারণ বড় মাঠে যখন এই কলোনীর সাথে ফুটবল খেলতে আসত,তখন ওনারা আমাদের ১২ নাম্বার বিল্ডিং এর মাঠের কোনায় সব একএিত হত।সেখানে দেখতাম ওনার সরব উপস্হিতি,সবাই কে পরামর্শ দিচ্ছে, উপদেশ দিচ্ছে।

তখন ওনাকে ওভাবেই চিনতাম। পরে এ কলোনীতে আসার পর সবসময় জসিম ভাই,নিরু ভাইদের সাথে দেখেছি।তখন আস্তে আস্তে দেখলাম আসলেই সবাই কে আপন করে নেওয়ার মত একজন মানুষ।

আমাদের আড্ডাতে তার সাথে মিশেছি, এবং দেখিছি আসলেই বড় ভাই,ছোট- ভাই সকলকে নিয়ে তার আড্ডা সফল করার জন্য, পরিশ্রম।আড্ডাতে সবাই কম বেশী পরিশ্রম করেছে,এখানে কেউ নিজেকে ছোট করে ভাববেন না।

তাজদার


আমার মেয়েটা আজ বললো, আব্বু তোমার ছেলেটা বেশী দুষ্ট হইছে, আমাকে শুধু মারে। আমার মা ও তার কথায় সাই দিলো। কি আর করি সিদ্ধান্ত নিলাম বিচার করতে হবে, আব্বাও সেই দিন বললো ও নাকি আব্বা ঘুমালে ওনার শরীরের উপর লাফিয়ে পড়ে। কোন বারন সে তোয়াক্কায় করে না। আম্মা বলে ছেলে নাম রেখেছিস তাজদার মানে তাজ ধারী অর্থাৎ রাজা। তাই সে কারো কথা শুনে না, তার যা ইচ্ছা হয় তাই করে। 

কিন্তু আজকে আর ছাড়বো না বিচার হবে তার। ডাক দিলাম, তাজদার এই তাজদার, তাড়াতাড়ী আস। 
তাজদার- জ্বি আব্বা কি ইইছেএ.. কেন ডাকছো বলো.. 
আমি- তুমি আব্বু সরাক্ষন কেন মারামরি করো
তাজদার- আমার ভালো লাগে
আমি- এটা কেমন কথা, তোমার ভালো লাগে
তাজদার- হু আমার ভালো লাগে। হুওওওম আমার মনে হয় আমার এখানে (বুকটা দেখিয়ে) জ্বীন ডুকছে, ঐ ভূত আছেনা ভূত ওটাও ডুকছে, এইজন্য আমি এরুম করি। 

বাবার জন্য শ্রধাঞ্জলি


প্রথমেই টলির প্রতি কৃতজ্ঞতা;আমার বাবাকে নিয়ে চমৎকার একটা স্মৃতি চারনের জন্য।

সেই সাথে প্রয়াত পিতার প্রতি শ্রধ্যা জানিয়ে তাকে নিয়ে নিজের কিছু স্মৃতিগাথা :

১. তখন আমি থ্রিতে পড়ি । বাবা-ই আমার পড়াশুনার তদারকি করেন। একদিন " আমার পোষা পাখী " বিষয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে একটা রচনা লিখতে বললেন। আমি খুশি মনে যথাসময়ে তা লিখে জমা দিলাম। বাবা পুরাটা পড়ে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন।
কিছুখখন এভাবে থেকে যখন মুখোমুখি হলাম তখন দেখি বাবার চোখ ছলছল। শুধু বললেন " খুব সুন্দর হয়েছে তবে 'পাখী' বানানটা একজায়গায় ভুল হয়েছে। ওটা ভুল করা ঠিক হয়নি "

২. ১৯৭৭ সালে স্টীল মিলে HSC / BSc পাশ কিছু জুনিয়র / সিনিয়র অপারেটর নিয়োগ হবে। বন্ধু বান্ধব সবাই দরখাস্ত করলো। আমিও করতে চাইলাম কিন্ত বাবা বাধ সাধলেন।
সাত ভাই-বোনের টানাটানির সংসার, আমি চাকরি করলে সংসারে কিছুটা হলেও সাছছন্দ আসবে -যুক্তি দেখালাম।মাকে দিয়ে সুপারিশ করালাম। তিনি কিছুতেই রাজী হলেন না। শুধু মাকে বললেন -
" আল্লাহ চায়তো ও অপারেটর না, ইঞ্জিনিয়ার হবে। "

ছোট বেলায় সকালে হোটেল থেকে মাঝে মাঝে রুটি বা পরোটা আনতে যেতাম


ছোট বেলায় সকালে হোটেল থেকে মাঝে মাঝে রুটি বা পরোটা আনতে যেতাম।।অবশ্যই ষ্টীল মিল বাজারে।।তো সব সময়ই একটা বেশি নিতাম।।কাউন্টারে পাঁচটার টাকা দিলে ছয়টা নিতাম।।কোন সময়ই ধরা পরতাম না।।

কিন্তু আজ ঘটলো ভিন্ন ঘটনা।।কর্মস্থলের এড়িয়ার একটি হোটেলে নাস্তা করতে ঢুকলাম হঠাৎ সোরগোল শুনতে পেলাম।।এখন দোকানের মালিক আমাকে চিনে বলে একটি আট-দশ বছরের ছেলেকে আমার সামনে হাজির করালো এবং বললো এর বিচার করুন।।প্রশ্ন করলাম কি হয়েছে??বললো হারামি দুই পরোটার টাকা দিয়ে তিন পরোটা নিছে।।সাথে সাথে খাবার আমার বন্ধ হয়ে গেল।।ফিরে গেলাম অতীতে।।হায়রে কপাল,,শেষ পর্যন্ত এখানে ধরা পরলি।।তাও আবার আমার কাছে!!চিন্তায় পড়ে গেলাম।।কি করা যায়।।হাজার হোক আমার অনুসারী।।উপকারতো করতেই হয়।।

বললাম থাক বাদ দেন।ছোট মানুষ।।বলে বিদায় করে দিলাম আর মনে মনে ভাবলাম আল্লাহ্ কি বাঁচান বাঁচাইলা।।
এ জন্যই বোধ আমার বাহিনীর একটা প্রবাদ প্রায়ই বলতে শুনি যে,,একশ একটা পাপ করলে নাকি এই চাকরি মানুষের কপালে থাকে।।

গতবার যখন কক্সবাজার গেলাম


গতবার যখন কক্সবাজার গেলাম আব্বা ফোন দিলেন একেবারে ওখান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা দেবার আগে। লাক্ষা মাছের শুটকি নিতে বলেছিলেন। আমি শুটকির দোকানে ফোন দিলাম। জানতে চাইলাম কত করে কেজি। ওরা বললো 2000 থেকে শুরু। সবচেয়ে ভালটা ৫০০০/৬০০০ টাকা। যেহেতু ফেরার সময়, এত টাকা ছিলনা। তাই সেবার কিনি নাই। এবার গিয়ে প্রথমেই ওটা কিনে এনে পাঠালাম। আব্বা খেয়েছেন। যদিও খুব অল্প খেয়েছেন। তবুও শান্তি আব্বার ইচ্ছাটা পুরন করতে পেরেছি। আব্বা নিজের সামর্থের মাঝে আমাদের সব ইচ্ছা পুরন করেছেন। আম্মা সেকি রাগ আব্বার ওপর কেন এত দামি শুঁটকি আনতে বলেছেন। আম্মাকে বললাম থাকনা আম্মা,কত টাকা খরচ করি,এটা এমন কি। নিজে মুখ ফুটে কিছু বলতেন না। একবার ভুটান গেলাম,আব্বা সেই আরেকবার বললেন ওখান থেকে জেলি আনিনি কেন। বললাম আব্বা ব্যাগ ভারি হয়ে যায় আর এটা ঢাকাতেই পাওয়া যায়। DRUK এর জেলি।

পরোটা ( স্টার এর নয়)


একদিন খুব সকালবেলা চিনি শেষ বাসায়।সবাই ঘুম।আমি আর আম্মা উঠছি।আম্মা আমাকে বাজারে পাঠাতে চাইলেন না।বললেন পাশের বাসার রুবি আপাদের বাসা থেকে এক কাপ চিনি নিয়ে আসতে।আমি গেলাম।দেখি উনারা পরোটা বানাচ্ছেন।আমরা যেরকম করে বানাই, সেভাবে না,একটু অন্যরকম ভাবে।আমি বিস্ময় প্রকাশ করলাম।কারন পরোটা গুলো খুব সুন্দর হচ্ছিল দেখতে।খালাম্মা আমাকে জোর করলেন একটা পরোটা নিতে।অনেক বড় পরোটা। আমি আম্মা বকা দিবেন বলে নিলাম না।চলে আসলাম।

আমাদের বাসায় পরোটা বানাত কিন্তু চারকোণা। মাঝে মাঝে মুন বেকারস এর থেকে পরোটা আনা হত।সেদিন রাতে বেবি আপা আমাকে সকালে উনাদের বাসায় দাওয়াত দিলেন।আমি সকালে নাস্তা খেতে উনাদের বাসায় গেলাম।কেউ জানেনা।চুপি চুপি।

নীল আকাশের নিচে


নীল আকাশের নিচে
এই পৃথিবী
পৃথিবীর উপরে 
ঐ নীল আকাশ
তুমি দেখেছো কি
শোনো, মনে হচ্ছে তুমি বাবা হবে, আর আমি মা। ডাক্তার এসে ছিলো, তাই বলে গেলো। মনটা খুশীতে ভরে গেলো। ছুটলাম, বাড়ীর দিকে। বাবা/মা খুব খুশী। দুই দিন বাড়ীতে থেকে, ঢাকায় চলে আসলাম।

ঢাকায়, সাথে করে নিয়ে আসতে চেয়েছিলাম, ডাক্তার নিষেধ করলো, অন্তত তিন মাসের আগে, জার্নি না করতে। মনটা খারাপ করেই চলে আসলাম। বাড়িতে আমরা সবাই আছি, ভয় পাওয়ার কিছু নাই, দাদা ভরসা দিলো। ভালোই যাচ্ছিলো দিন, প্রতি দিন, কতো কথা, দুই জনের মাঝে, কি করবো/না করবো!!! কি চাই, ছেলে না মেয়ে?? আল্লাহ পাক, একটা দিলেই হলো, তাতেই আমি খুশী।

আমাদের গল্প


আমি লিটন , তখন ক্লাস এইট শেষ করে নাইনে উঠলাম। নাইনের বাতাস লাগতেই কেমন জানি নিজেকে সুপারম্যান ভাবতে শুরু করি। পুরা জগতটাই যেন আমার হাতের মুঠোয়। আমি সব কিছু কন্ট্রোল করতে পারি ,সাজু আমাকে সিগারেট ধরাতে শেখালো। উফ কি টান রে মামা। ঐ টিংকা দিবি নাকি এক টান, ফুটবলে মেসি চলে না আসলে আমার নাম টা নিয়েই পুরা ষ্টীল মিলে সবার মুখে মুখে ঘুরে বেড়াতো। 

মেসি কি আমাদের ষ্টিলমিলে আসছিল নাকি রে লিটন বলে অট্টহাসি দিয়ে ফেটে পরলো আবু। 

যাই হোক সব কিছুই আমার দখলে ছিল শুধু কবীর স্যারের ইংলিশ ক্লাসের সময় মনে হলো আমার সুপার পাওয়ার টা কেউ হাইজ্যাক করে নিয়ে গিয়েছে, ট্রান্সলেশনের সময় কেন জানি মুখ টা খুলতেই চায়না। যথারীতি স্যার এর মাইর জুটলো। স্যার এর শরীরের পুরা শক্তি দিয়ে আমাদের উত্তম মধ্যম দেয়া হলো। উফ আজকে স্যার কি খেয়ে ক্লাস নিতে আসছে রে সাজু, মাইড় একটাও মাটিতে পরে নাই সব গুলি আমার উপর দিয়ে গেছে, বেঞ্চে বসতেও পারছিনা। 
বিকালে স্কুল ছুটি হলো। তার আগে পুরান অভ্যাস টিফিন পিরিয়ডের পর ক্লাস পালালাম। অনেক্ষন লেকের উপর বসে ছিলাম, মাইড়ের ব্যাথা তখনো ফিল করছি একটু বৃষ্টি হচ্ছে তবুও বাসায় যেতে ইচ্ছে করছে না। বৃষ্টির পরিমান বেড়ে যাওয়ায় তে বাসায় ফিরতে বাধ্য হলাম।