Wednesday, April 20, 2016

৯২ সালের ঘটনা


৯২ সালের ঘটনা । আমি ও আমার দুই বন্দু আন্দরকিল্লা বইয়ের দোকানে ঢুকলাম।আমরা দুজন মনযোগ দিয়ে গল্পের বই দেখতে লাগলাম আর আমার তৃতীয় বন্দু হুমায়ূন আহমেদ এর গল্পের বই শাটের নীচে কোমরে গুজে কিছুক্ষন পর বই না কিনে দোকান থেকে বের হয়ে গেলাম।বি দ্র দুই জনের নাম প্রকাশ করলাম না।একজন সিটি িকলেজ ও আরেকজন এম ই এস কলেজে পড়ত।

আমরা যখন কলোনি তে ছিলাম তখন পোশাক নিয়ে কোন বাছ বিচার ছিলনা


আমরা যখন কলোনি তে ছিলাম তখন পোশাক নিয়ে কোন বাছ বিচার ছিলনা, যেটা পেতাম সেটাই পড়তাম। পোশাকেও যে ব্রান্ড আছে এটা জেনেছি বহুদিন পর। কলোনি তে লুঙ্গী পড়ে থাকাটাই ছিল স্বাভাবিক ব্যাপার। কেউ প্যান্ট পড়া মানেই সে কলোনির বাইরে দূরে যাচ্ছে। তবে স্টিলমিলের অফিস এরিয়ায় যেতে হলে প্যান্ট পড়া লাগতো। দুএক জন লুঙ্গী পড়ে অফিস এরিয়ায় ঢুকে আমার আব্বার ধমকও খেয়েছে। জহুর হকার্স মার্কেট থেকে ১৫০ টাকা দিয়েই কাপড় সহ প্যান্ট সেলাই হতো। এক ঈদের কাপড় দিয়েই পুরা বছর চলে যেত। এখন কাপড় চোপড় পর্যাপ্ত, সাথে কত কত ব্রান্ড, অমুক তমুক, কিন্ত জহুর হকার্স মার্কেট থেকে বহু কষ্টে বানানো ১৫০ টাকার প্যান্ট প্রাপ্তিতে যে তৃপ্তি সেটা বোধ করি কখনওই পাওয়া যাবেনা আর আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম সেই আবেগ কোন দিনই অনুভব করতে পারবেনা।

কক্সবাজারে এসে আগে থেকে বুকিং করা হোটেলে উঠলাম


কক্সবাজারে এসে আগে থেকে বুকিং করা হোটেলে উঠলাম। রুম নং ছিলো ১০৬, ১১০, ১১১। আমারটা ছিলো ১১০। রিসিপসন থেকে চাবি নিয়ে রুমে গেলাম। রুমের ঢুকার দশ মিনিটের মধ্যে ইন্টারকমে ফোন আসলো। রিসিভ করলাম। অপর প্রান্ত থেকে বললো "হ্যালো রিসিপসন? আমি বললাম any problem? উনি বললো "টিস্যু লাগবে"। আমি বললাম ঠিক আছে পাঠিয়ে দিব। উনি ফোন রেখে দিলো। এরপর আমরা যে যার কাজ করছি। বাচ্চারা ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হচ্ছে। বাচ্চার মা ব্যাগ থেকে কাপড় বের করছে। আমি বসে বসে টিভি দেখছি। কিছুক্ষণ পর আবার ইন্টারকমে ফোন। আমি রিসিভ করলাম। অপর প্রান্ত থেকে লোকটা উচ্চস্বরে বলে যাচ্ছে " আপনাদের সার্ভিস এত বাজে? সামান্য একটা টিস্যু দিতে এত সময় লাগে? আমি বললাম " সরি, লোক ছিলো না, তাই লেট হলো। আপনি ৫ মিনিটের মধ্যে পেয়ে যাবেন।" এই বলে ফোনটা রেখে দিলাম। ঘটনাটা আমাদের সবাইকে বললাম। সবাই হেসে অস্থির। আধ ঘন্টা পরে নিচে নেমে রিসিপসনের সামনে বসলাম। তখন জানতে পারলাম এক লোক রিসিপসনে এসে টিস্যুর ঝামেলা করছিলো। আমি তখন ব্যপারটা বুঝতে পারলাম, আর মনে মনে হাসতে লাগলাম।

গ্রান্ড আড্ডার ভিডিও দেখলাম তবে পুরোটা নয়, কাটছাঁট করে


গ্রান্ড আড্ডার ভিডিও দেখলাম তবে পুরোটা নয়,কাটছাঁট করে। নাচের পার্ট টা দেখসি বেশি আগ্রহ নিয়ে।মিতুভাইয়ের বিরতিহীন নাচ,সুজন রাজন দুই ভাইয়ের বলিউডি নাচের যুগলবন্দী, ফিটফাট রিমান ভাইয়ের ঝাকানাকা নাচের সময় শার্টের ফিটিংস একটুও নষ্ট না হওয়া,স্ট্রাইপ সোয়েটার পরা (চিনতেসিনা উনাকে)একজনের অবিরাম লম্ফঝম্ফ,পুলকভাইয়ের মোহনীয় নাচ,ভাইয়ার সাপের ছোবলের নৃত্য সাথে আবার ছেলেও আছে,শাহিন ভাইয়ের স্পিন বোলিং এর মত হাত ঘুরানো নাচ,ইউনুস ভাইয়ের রুপবান গানে সেরকম কঠিন কোমর দুলানি,মোরশেদ ভাইয়ের স্থির নৃত্য,মুরাদ ভাইয়ের লেফট রাইট লেফট আরো অনেকের হরেক রকম নৃত্য।ও আচ্ছা ফাঁকে দিয়ে আমার পছন্দের মানুষ শিল্পী আপাও একটু খানি নেচে নিলো।সবার নাচ দেখে আমারও হাত পা একটু ঝাঁকাইতে ইচ্ছা করছে।সামনের আড্ডায় আমরা মেয়েরা আর পিছিয়ে থাকবোনা।পারি আর না পারি লাফাবো হাত পা ঝাঁকাবো।

গতকাল লেখার পর লেখাটি-চলমান করার ইচ্ছা থাকলেও বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ থাকায় আর আগ বাড়িলাম না


গতকাল লেখার পর লেখাটি-চলমান করার ইচ্ছা থাকলেও বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ থাকায় আর আগ বাড়িলাম না। কখন কে আবার কোন উপাধী দিয়া বসে? তবে 84-85 এর দিকের একটি ঘটনা মনে পড়ল। কলেজে ভর্তির জন্য সিটি কলেজের ওয়েটিং লিষ্টে থাকিয়া সেন্ডেলের তলা খোইয়া শেষে আমার আর হাফিজের স্থান হইল-এম ই এস কলেজে। হাফিজকে লেখাপড়ায় খুব সিরিয়াস দেখিলাম। বাধ্য হইয়া আমাকেও সিরিয়াস হইতে হইল। ফাস্টইয়ারের ফাইনাল পরীক্ষায়-হাফিজ ফাস্ট হইল আর আমি সেকেন্ড হইলাম। তবে কয়টি প্রশ্ন মুখস্ত লিখিয়াছিলাম মনে নাই। তবে বেশীর ভাগই নকল করিয়া লিখিয়াছিলাম-উহা মনে আছে! লাভের মধ্যে দুইটা জিনিস হইল-দরখাস্ত করিয়া কিছু বেতন মৌওকুফ হইল এবং প্রথম 5 জন বিনা টাকায় পিকনিকে যাইবা্র অনুমতি পাইলাম। পিকনিকে জায়গা নির্ধারিত হইল কক্সবাজার প্রিন্সিপলকে জানানো হইল। ঠিক হলো স্যারেরা যাবে। 

আমাদের (৯২ পরবর্তী ব্যাচের) একরাম ভাই


একরামুল হক
ব্যাচঃ-৯২
বাসা নং -F/8
আমাদের (৯২ পরবর্তী ব্যাচের) একরাম ভাই,অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, সদা হাস্যোজ্জ্বল প্রাণবন্ত একজন মানুষ।কলোনীতে আমরা অনেকেই বসবাস করলে ও কিছু প্রিয়মুখ কলোনীর সেলিব্রিটি হিসাবে পরিচিত। একরাম ভাই সে রকমই একজন।বিশেষ করে স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।সেখান থেকে তাকে চেনা এবং পরবর্তিতে উনার কাছে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে উনার কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ।দীর্ঘদিন স্ব-পরিবারে আমেরিকায় অবস্থান করছেন।পেইজে সক্রিয় না হলে ও নিয়মিত সবকিছুর খোঁজ খবর রাখেন বলে আমার ধারণা।

আজ বেশ আয়োজন করে সবাই খেতে বসেছে


আজ বেশ আয়োজন করে সবাই খেতে বসেছে। রজকিনি সবাইকে বেড়ে খাওয়াচ্ছে। মাথায় ঘোমটা দেওয়া নানিজান ,গাল ভরা হাসি নিয়ে , সুখের দৃশ্যটি দেখছে। মেঝ মামা বড়ই চিন্তিত! মাছের মাথাটা পাবোতো?নানাজান তুমি বলে মাছ চাষ করতে? নানাজানের চোখে খুশির ঝিলিক খেলে গেলো। নানুভাই , আমার পুকুড়ে অনেক মাছ ছিলো। তবে ইলিশ মাছটা অনেক মজার ছিলো! তোর নানিজান বেশী করে পেয়াজ দিয়ে সেই ইলিশ আমাকে ভেজে খাওয়াতো। আহা কি সাদ ছিলো সেই মাছের! আব্বা আপনে এটা কি বললেন? পুকুরে আপনে ইলিশ মাছ কোথায় পেলেন!? আমার তো পরিস্কার মনে আছে, আপনের ভয়ে পুকুড়ে কোনোদিন , শান্তি মত একটা ডুবও দিতে পারিনাই! চরম বিরক্তি নিয়ে নানাজান মধুর বড় মামার দিকে তাকালো। এই হারামি , আমাদের নানা\নাতির কথার মাঝখানে তুই আসলি কেন? এখনি দাড়া, এখন উলটা ঘুর, এবার বল, সামনে এগিয়ে চলো! জী আব্বা! বুদ্ধিমতি রজকিনি এক মুহুর্ত দেরী না করে, মাছের মাথাটা খালামনির পাতে তুলে দিলো।

গভীর রাত। আজও নানাজান চুপচাপ বারান্দায় দাঁড়িয়ে। খুব কায়দা করে একটা বেনসন ধরালো। সুনতে পেল মধুর, মায়া ভরা কন্ঠের গান।

চোখের আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে
অন্তরে আজ দেখবো
যদি আলোক নাহিরে------------।

অস্পষ্ট শব্দে নানাজান যেন কাকে ডেকে যাচ্ছে--মা----গো। আজও আকাশে অনেক তারা।

১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পরদিন সকালবেলা


১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পরদিন সকালবেলা, তখনও কলোনিতে কমর সমান পানি। আমরা BH-1 এর তিন তলায় থাকাতে বিপরজয় থেকে সাময়িক রক্ষা পাই। তো যাহা বলিতেছিলাম, আমি Al Amin Billah Shujon , নাসিম, মামুন (৯৮ ব্যাচ ) সহ কয়েকজন বাসা থেকে বের হলাম পরিবেশ দেখার জন্য। কমর পানিতে নামলাম। এ সময় দেখি BH-1 এর মাঠে স্কুলের স্টেজের একটা কাঠের পাটাতন ভাসছে। আমরা পানি ভেঙ্গে দৌড়ে গেলাম তার কাছে। একজন উপরে উঠছে আর আমরা সবাই ওটা ঠেলছি। খুব মজা পাচ্চি সবাই। ভেলার মত ওটা ভেসে চলছে। নাসিম বলল, একটা বইঠা পেলে ভালো হত। এইসময় মামুন বলল, ওই যে একটা লাঠি দেখাজাচ্চে। বলেই মামুন দিল দৌড়। আমরা সবাই ওর দিকে তাকিয়ে আছি। লাঠির কাছে জেতেই হটাত দেখি মামুন নেই। মামুন উধাও। আমরা তো অবাক। একটু পর পানির নিচ থেকে লাফ দিয়ে ওর মাথা ভেসে উঠল। ঘটনাটা বুজতে আমাদের একটু সময় লাগলো। আসলে লাঠি টা ভাসচিল BH-1 এর সামনের রাস্তার পাসের ড্রেনের উপর। মামুন বিষয়টা খেয়াল করতে পারেনি। তাই ঝুপ। বেচারা।