অনেক অনেক বছর আগে রঞ্জু এক ভালোবাসা দিবসের রাতে রুমু কে l love you লিখা চিরকুট রুমুদের বারান্দা দিয়ে ছুড়ে মারে। আর অপেক্ষা করতে থাকে সেই চিরকুটের উত্তরের। রাত পেড়িয়ে সকাল হয়, সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়, বিকেল হয় এবং পুনরায় রাত হয়, ফিরতি কোন উত্তর আর আসেনা। এদিকে অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে তো রঞ্জুর অবস্থা কেরোসিন । এক সপ্তাহ অপেক্ষা করেও যখন ফিরতি কোন কিছুর নাম-গন্ধ কিছুই পেলো না, তখন রাগে, দুঃখে, কষ্টে আর লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে নিজেই উপস্থিত হল প্রিয় মানুষটার বাসার সামনে । তাঁর রংবাজ টাইপ বড় ভাই রঞ্জুকে প্রায় এক ঘন্টা সামনে দাঁড় করিয়ে রেখে ইতং বিতং প্রশ্ন করে অবশেষে বললেন,
- তুমিই তাহলে সেই হনুমান
- রঞ্জু আমতা আমতা করে বলে হনুমান মানে?
- হনুমান মানে হারামজাদা, বলল রুমুর ঘাড় তেরা বড় ভাই শাফি।
- ভাইয়া কী বলছেন এসব! আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না?
শাফি একথা শুনে বলল, আরে হারামি এখনই যদি সব বুইজা ফেলোস তাহলে থানায় কি বলবি।
- ভাইয়া আপনি কী আমাকে পুলিশে দিতে চাচ্ছেন?
- শাফি বলে, তোরে না শুধু, তোর চৌদ্দ গুস্টি রে পুলিশের ডলা খাওয়ামু, তোর এত সাহস তুই আমার বোন রে চিঠি দেস।
একথা শুনে তো রঞ্জু পুরা টাস্কি খেয়ে গেলো।! রুমুর কাছে দেওয়া চিরকুট এই শালার সমন্দি শাফি জানলো কিভাবে রঞ্জু বুঝে পেলনা
যাই হোক, রঞ্জুকে পুলিশে দেয়া হলোনা। তবে যা করা হলো তা পুলিশে দেয়ার চাইতে কোনো অংশেই কম নয়। রঞ্জুর বাসায় বিচার দেবার ভয় দেখিয়ে পাঁচ বার কান ধরে উঠ বস করিয়ে নিলো রংবাজ শাফি। রঞ্জু যখন লজ্জা আর কান্না মাখা মুখ নিয়ে, কান ধরে উঠবস করছিল তখন খিলখিল করে হাসির শব্দ পেলো আশেপাশে কোথাও। রঞ্জু হাসির আওয়াজেই বুঝে গেল এই চক্রান্ত নায়িকা স্বয়ং নিজেই করেছে। তারপর থেকে এই ঘোড়ার আন্ডা প্রেম ভালোবাসার কথা মুখেও আনলোনা রঞ্জ। মানুষ জন্মায় একা, মরেও একা। মাঝখানে আরেকজনকে টেনে এনে ঝামেলা বাড়িয়ে কী লাভ? পরের এক বছর রঞ্জু সবাইকে বুঝাতে চাইলো, মেয়েদের গুনার টাইম নাই তার । মেয়ে মানুষের অপর নাম আবর্জনা। যাইহোক, একবছর পর আবার সেই রঞ্জুর সেই বেদনাময় দিনটা হাজির! ঘোড়ার ডিমের ভালোবাসা দিবস! সবচাইতে মজার ব্যাপার হচ্ছে, গতবার এই দিনে যেই গাধীটার কাছে চিরকুট পাঠিয়ে চরম অপমান হয়েছিল আজ সে গাধী রুমুই ইনিয়েবিনিয়ে ভালোবাসার চিঠি পাঠিয়েছে রঞ্জুর কাছে।আর গত ভালোবাসা দিবসের চক্রান্তের জন্য ক্ষমা চেয়েছে।
চিঠি দেখে রাগে ফুসতে ফুসতে রঞ্জু আপন মনেই বলল,
"গাধীর বাচ্চা গাধী! তোকে ভালোবাসি, তাই গত বছরের ঘটনার জন্য ক্ষমা পেয়ে গেলি!"
এরপর থেকে রঞ্জু রুমু মহল্লার শ্রেষ্ঠ প্রেমিক প্রেমিকা জুটি। আর এখন দু সন্তানের গর্বিত ও সুখী জনক জননী।
No one has commented yet. Be the first!