Thursday, January 21, 2016

ড্রাইভারের কান্ড দেখে অবাক ... !!!



অফিস থেকে বেরুতে বেরুতে প্রায় ৭:৪০ বাজলো।তারিককে বলেছিলাম মেডিকেলে যাবো। কিন্তু দেরী হওয়াতে আর যাওয়া হয়নি। কোনমতে ধাক্কাধাক্কি করে গ্রামীণ পরিবহণে উঠলাম। মহাখালী থেকে মিরপুর রোডে জ্যামের কারনে রাস্তা ব্লক করে দেওয়ায় গ্রামীন নাবিস্কো, তিব্বতের জ্যাম পাড় হয়ে তেজগাঁও ফ্লাইওভারে পৌছলো। ব্যাস, ২০/২৫ মি: ধরে একটু একটু করে সামনে এগুচ্ছে। আর তখনি এসিষ্টান্ট এক প্যাকেট বাদাম কিনে ড্রাইভারকে বললো "ওস্তাদ বইয়া বইয়া বাদাম খান, সিগ্রেট আনমু"? ড্রাইভার বললো "ওই বেডা, আমি বাদাম খামু আর হেরা কি চাইয়া দেখবো? বেবাকতের লইগা ল"। এসিস্টান্টসহ সবাই ভাবলাম হয়তো মশকারী করছে। কিন্তু বাদামওয়ালাকে যখন ২৭ টা বাদাম (২৭ জনের জন্য ২৭ প্যাকেট, গ্রামীণ পরিবহণে ২৭ টাই সিট থাকে) দিতে বললো। 

ওদের সময়গুলো, স্বপ্নগুলো যেন মাত্র পাঁচ টাকায় বিক্রি হয়ে না যায়


আজ সকালে অফিসে যাওয়ার পথে বাসে বসে আছি, দশ নাম্বারে কঠিন গিট্টু লেগে আছে। হকারদের পন্য বিকিকিনির মচ্ছব লেগে গেছে। কত আজব রকম জিনিস যে বিক্রি হতে পারে আর কত আজব ভাষায় যে বিক্রির প্রচারনা চলতে পারে না দেখলে বিশ্বাস করা মুশকিল। সুগন্ধি কলম, যষ্ঠিমধু, ডিজিটাল তসবি, খোয়াবনামা, রুমাল, জায়নামাজ সবই পাওয়া যাচ্ছে হকারদের কাছে। গাড়িতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় সংবাদপত্র। কি জানি কেন পেপার বিক্রেতা হকার সবই বাচ্চা। ৬/৭ বছর বয়স ওদের। নরম ছোট ছোট হাত, তুলতুলে আঙুল। 

বাচ্চাগুলো চলন্ত বাসের সাথে পাল্লা দিয়ে যখন দৌড় শুরু করে আমার ভয় লাগে এই বুঝি পড়ে গেলো। প্রতিদিন আমার একই আতংক। কিছু বাসযাত্রী আছে খবিসের চূড়ান্ত। সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় পেপার কিনে কিন্তু আগে টাকা দেয় না। পেপার হাতে নিয়ে এরপর বড় নোট দেখিয়ে বলে ভাংতি বের কর। ততক্ষণে গাড়ি চলতে শুরু করে আর বাচ্চাটা টাকা গুনতে গুনতে দৌড়াতে থাকে গাড়ির পিছন পিছন। কষ্টে আমার চোখে পানি চলে আসে। ভালো লোকও আছে। একদিন এরকম এক লোক এক বাচ্চা হকারের কাছে পেপার চাইলো কিন্তু তার আগেই বাস ছেড়ে দিয়েছে। বাচ্চাটা কাস্টোমার হাতছাড়া না করার জন্য প্রাণপণে দৌড়াতে লাগলো। 

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss