Monday, March 14, 2016

মাথাটা পুরা জাম হয়ে আছে


কোথায় যাবো? কার কাছে যাবো? কেন যাবো? কি করবো? কেন করবো? কি করা উচিত? কিছুই বুঝতাছিনা। মাথাটা পুরা জাম হয়ে আছে। আমার মাথা এমনিতেই হট থাকে। তারপরও কেন জানি মনে হচ্ছে মাথাটা আজকে একটু ওভার হটেট হয়ে আছে। বছর আরেকটা গেল। আপনাদের কাছে মাথা ঠান্ডা করার জন্য উপায় জানা আছে? থাকলে দয়া করে বলুন। এ্যলোপেথিক, হোমিও পেথিক, আয়ুর্বেদীয়, মায়ুর্বেদীয়, শাস্ত্রীয়, মঘা শাস্ত্রীয় কিংবা অন্য যে কোন উপায়।

CSM colony ভাবলেই মনে আসে


CSM colony ভাবলেই মনে আসে csm school, মসজীদের পুকুর, কোহিনুরদের মুরগীর খোয়ার আর তার সাথে লাগানো বরই গাছ যেটা আমার আর লাবনীর(মোস্তফা কামাল স্যারের মেয়ে)খেলার অন্যতম জায়গা ছিল।মক্তবএর পাশে রাস্তায় কুদ কুত খেলা,বড় মাঠে বাষিক প্রতিযগিতা,শান্তি বাবু স্যারের ব্রুতচারি,পিটিস্যারের পিটি,জাফর স্যারের চোখ পাকানো,ইউনুসের দোকান আরো কত কি....ওওও আরো একটি বিষেশ জায়গা যেটা ছিল আমার ভাই ও তার বন্ধুদের (কমু,লিটন,মানিক,মনু,আরো কয়েকজন ভাই)প্রিয় জায়গা......কে বলতে পারবে সেই বিষেশ জায়গাটির নাম???

আমি, কল্লোল আর মানিক


স্টুডেন্ট লাইফ এ আমরা সবাই কমবেশি টিওশনি করতাম। ওটাই আমাদের একমাত্র আরনিং সোর্স ছিল। আমাদের কল্লোলও টিওশনি করত। যাইহোক টিওশনির প্রথম মাসের টাকা পেয়ে কল্লোল আমার আর মানিকের বাসায় আসলো, আমরা ২ জন একই বিল্ডিং এ থাকতাম এবং কল্লোল প্রস্তাব দিল আজ আমাদের খায়াবে, আমি আর মানিকও কোনকিছু না ভেবে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেলাম। বললাম তোর বাজেট কত? কল্লোল বলল ২০০ টাকা। শুনে আমরা অবাক, ২০০ টাকা... ওবাজি! ওই সময় ২০০ টাকা আমাদের কাছে অনেক টাকা ছিল।

যাইহোক বিকেলে ৩ বন্ধু বেরিয়ে পড়লাম। নিজের এলাকায় কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করলাম কিন্তু হোটেল পছন্দ হল না। সবাই মিলে ভাবতেছি এখন কি করা যায়? ২০০ টাকা বলে কথা, কোন আলতু ফালতু রেস্টুরেন্ট এ তো আর খাওয়া যায় না । হটাত মানিকের মাথায় বুদ্ধি এলো, ও বলল চল আগ্রাবাদ যাই, ওইখানে অনেক ভালো ভালো রেস্টুরেন্ট আছে, অনেক ভালো ভালো খাবার পাওয়া যায়। আমি আর কল্লোল মানিকের প্রস্তাবে রাজি হলাম এবং বাসে উঠে ৩ জন আগ্রাবাদ চলে আসলাম। বাসে করে আগ্রাবাদ আসতে আসতে সন্ধা হয়ে গেল।


শুরু হল ৩ জনের রেস্টুরেন্ট পছন্দের পালা। প্রথমেই গেলাম হোটেল আগ্রাবাদ এ। এর আগে আমি কোনদিন হোটেল আগ্রাবাদ এ যাই নাই, শুধু নাম শুনছি। কিছুক্ষণ ৩ জন হোটেল আগ্রাবাদের সামনে ঘুরাঘুরি করলাম কিন্তু ভিতরে ঢুকার সাহস পেলাম না, এরপর গেলাম সম্ভবত সিলভার স্পুন এ, এই ভাবে মোটামুটি আগ্রাবাদ এর সব হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট এ গেলাম। প্রায় ২ ঘণ্টা এই ভাবে ঘুরাঘুরি করে পার করলাম।

চাইলাম এরি আর কেউরে দলে ভিরন যায়নি!!!!!


বড় আশা করি ভিতরের সব গোপন কথা CSM এর ভাইবোন বন্ধু হগলের লাই উজার কইরা দিয়ালছি, মনে করছিলাম আর থুন অনুপ্রেরনা ফাই আর কিচ্ছু ভাইয়েরাও তাগ ভিত্রের কিছু বাইর কইরব, অন্ত দেই দেগে ছুপ মারি গেছে, আছেন্নি কেউ আর মতো বেকুব, জাগাত থাই আওয়াজ দেন, আর তাড়াতাড়ি শুরু করেন, আরে ডরন লাইগদন, আন্না বেকে বেকেরে চিনি, আনরা আনরা কদ্দুরা মজা করলু আরি...।।
চাইলাম এরি আর কেউরে দলে ভিরন যায়নি!!!!!

রাত ৮.০০ খবর শেষের দিকে


রাত ৮.০০খবর শেষের দিকে আমি দুলি, জিমি রাশেদ,আতিক,মরা রাশেদ,লিটন সোজা হাটতে হাটতে বড় মাঠের পাশে কলোনীর শেষ মাথা সম্ভবত F/11 তসলিম চাচা বাগানে হাজির, খবর শেষ একটু পর নাটক শুরু হবে, বাংলাদেশে তখন কাজি পেয়ারার চাষ শুরু হয়েছে,তসলিম চাচার বাগানে পেয়ারা ধরছে খাওয়ার উপযোগী হয়েছে,নাটক শুরু হয়েছে আস্তে আস্তে আমি দুলি মরা রাশেদ বাগানে পিছনে গিয়ে হাজির বেড়া তো আছে সাথে বিভিন্ন কাঁটা বেড়ার উপর দেয়া যেই কাঁটা টান দিলাম দোতালা থেকে টচ লাইট জলে উঠলো আর চিল্লাচিল্লী শুরু করে দিল,লাইট তো আর নিবে না, বুঝলাম আজকের মতো আর কাজী পেয়ারা খাওয়া হবে না, মন মেঝাজ ও খারাপ হয়ে গেলো সবাই একসাথে হয়ে মাঠে আবার বসলাম কি করা যায় মরা রাশেদ হঠাৎ বলে উঠলো পেয়ারা খেতে পারি নি কি হয়েছে বাসার সামনে তো চাচার পেঁপে গাছ আছে, যেই বলা সেই কাজ শুরু চাচাতো পিছনের জানালা দিয়ে পেয়ারা পাহারা দিচেছ আর আমরা সামনে দিয়া জন প্রতি দুইটা পেঁপে নিয়ে মাঠের মাঝ দিয়ে সোজা পুকুর পাড়ে তখন তো আর বুঝিনি পেঁপে কাঁচা এই পেঁপেতো খাওয়া যাবে না তখন প্রতি সিড়ির নিচে একটা একটা পেঁপে রেখে দিলাম জানি সকালে কেউ না কেউ পাবে তারপরদিন কি হয়েছে তা জানতে হলে স্কুলের সামনে ইউনুস এর দোকানে ইউনুস মুখ থেকে জেনে নিতে হবে

এভাবেই দিন বদলায়


এসএসসি ২০১৬ শেষ হয়ে এসেছে! কারও কোন খবর নাই!

কলোনীতে কারো এসএসসি পরীক্ষা মানেই অনেক বড় ঘটনা। কোন বিল্ডিং থেকে কারা পরীক্ষা দেবে?
পরের বছর কারা পরীক্ষা দেবে? কে অনেক পড়ে? কে কম পড়েও রেজাল্ট ভাল করে? এ নিয়ে চলত আলোচনা।
দিন গোনা শুরু হয়ে যেত টেস্ট পরীক্ষার পর থেকেই। এরপর স্কুলের বিদায়ের দিন ঘনিয়ে আসত। ক্লাস টেন এর উপর থাকত বিদায় অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব। ফটোকপির এত ছিল না যাদের হাতের লেখা সুন্দর তাদের দিয়ে মানপত্র লেখানো,শুভেচ্ছা বক্তব্য, স্মৃতি চারণ, কোন বিদায়ী ব্যাচ স্কুল কে কত ভাল উপহার দিতে পারে এ নিয়ে প্রতিযোগিতা চলত।

আর আমাদের ছোট দের কাছে ছিল তাড়াতাড়ি ছুটি আর জিলিপি খাওয়ার দিন।

এক্সাম শুরু হলে কে কিভাবে যাবে? প্রশ্ন সহজ না কঠিন, পরীক্ষা কেমন হয়েছে, এ নিয়ে বড় আপু ভাইয়া, চাচা চাচী, স্যার ম্যডাম রা খোঁজ খবর রাখতেন। কে কি লিখেছে? কার কোন এক্সাম ভাল হয়নি, কত কথা।
প্র‍্যাকটিকাল খাতা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি। কার আঁকা ভাল?

হৃদয়ের একূল ওকূল


CSM কলোনি তে হৃদয়বান মানুষের অভাব ছিল না। না,আমি তাদেরকে প্রেমিক,প্রেমিকা বলে সস্তা করব না।আমি বলব হৃদয়বান মানুষ।কারন যার হৃদয় আছে সেই ত ভালবাসে,সবাই ত সেটা পারে না। এই হৃদয়ঘটিত ব্যাপার গুলো কলোনি তে ঘটেছে নানা ভাবে।কখনো দেখা গেল হৃদয়বান ছেলের বাসা সামনের বিল্ডিং এ, আর মেয়ের বাসা পেছনের বিল্ডিং এ।কেউ একই বিল্ডিং এর পাশাপাশি কিংবা উপরের তলা,নিচতলা।কিংবা হৃদয়বান ছেলেটি বন্ধুর বাসায় ঘনঘন আসা যাওয়া করাতে বন্ধুর পাশের বাসার সুন্দরী মেয়েটির প্রতি দুর্বল হয়ে যাওয়া।

আবার এক ধর্মের ছেলের অন্য ধর্মের মেয়ের প্রতি দুর্বল হয়ে যাওয়া যেখানে ধর্ম তাদের মাঝে দেয়াল হয়ে দাঁড়ানো। আবার কলোনি র সুন্দরী মেয়েটি এমন এক ছেলের সাথে মন দেয়া নেয়া করছে যার পাশে মেয়েটি কে মানায় না অথচ মেয়েটি কে পছন্দ করে কলোনি র সুদর্শন কোন হৃদয়বান ছেলে।কিংবা ক্লাসের প্রথম স্থান অধিকারী ছেলের সাথে প্রথম স্থান অধিকারী মেয়েটি কে নিয়ে কানাঘুষা। অনেকগুলো ভাইয়ের আদরের ছোট বোনটি মন দেয়া নেয়া চলছে পড়ালেখায় অমনোযোগী বখাটে ছেলের।কেউবা কাউকে পড়াতে গিয়ে ছাত্রী র প্রতি কিংবা ছাত্রী টিচারের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ত।কলেজ বাসে আসা যাওয়ার পথে কথা বলতে বলতে হৃদয়ের একূল ওকূল ভাসিয়ে দেয়া।আবার দেখা গেল ছেলের বাবা মিলের বড় পদস্থ অফিসার,মেয়ের বাবা সাধারণ কর্মচারী,কিন্তু মন দেয়া নেয়ায় এগুলো কোন বাধা হিসেবে দাড়ায়নি। কেউ হত সাহস করে সামনে এগিয়েছেন,সফল হয়েছেন তবে এই পথ কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না, কন্টকময় ছিল। তবুও তারা ছিলেন হৃদয়বান মানুষ, অনেকের অনুপ্রেরণা। তাদের প্রতি রইল অনেক অনেক শ্রদ্ধা।

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss