আমরা কলোনিতে ঢুকেছিলাম ১৯৮৭ সালে। জুন মাসে। আমার বয়স তখন আট কি নয়। তখন স্টিলমিলের রমরমা অবস্থা। নতুন কেউ বাসা পেলে তখন বাসার দরজা, জানালা ঠিক করে দেয়া হতো। আমরা ঢুকে দেখি তখনো কাঠের কাজ শেষ হয়নি। আমার পা ভাঙ্গা থাকায় উরু পর্যন্ত প্লাস্টার দেয়া ছিলো। আমি সারাদিন বসে সেই প্লাস্টারে ছবি আঁকতাম বা একা একা বসে ক্যারম খেলতাম। সেবছরই আমি মাত্র ক্লাস থ্রি তে ভর্তি হয়েছিলাম স্টিলমিল স্কুলে। কিছুদিন ক্লাস করতে না করতেই পা ভাঙ্গার বিপত্তি। তাই প্রথম অনেকদিন আমার কলোনির সাথে পরিচয় হয়নি। আমাদের বাসার সামনে ছিলো জঙ্গলে ভরা। জঙ্গলে ছেয়ে গিয়ে জায়গাটা এতই সবুজ হয়ে ছিলো যে সকালে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে সারা ঘর সবুজ হয়ে যেতো। তখন আমার বারান্দা থেকে বা জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর তেমন কিছুই করার ছিল না তাই সবকিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতাম।
আমাদের এই গ্রুপ টা হচ্ছে আমাদের কলোনীর মিলন মেলা, প্রাণের স্পন্দন, আমাদের সুখ দু:খ, প্রেম ভালোবাসা, হাসি আনন্দ, মজার সব অভিজ্ঞতা একে অপরের সাথে শেয়ার করার মাধ্যম। তবে এসব শেয়ার করতে গিয়ে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে, কোন নেগেটিভ বিষয়ে, বা কারও কোন দুর্বল বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে যেন সরাসরি কারো নাম প্রকাশ না পায়, আমরা কারো নাম দিয়ে এমন কিছু প্রকাশ করবনা যাতে করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বিব্রত হয়, আমাদের জুনিয়র সিনিয়র সকলের অনুভূতি ও সম্মানের প্রতি শ্রদ্ধা রাখব। অশ্লীল যেকোন কিছু পোষ্ট করা থেকে বিরত থাকব।
Tuesday, January 5, 2016
একটি স্বপ্নের অপমৃত্যু.............................
শরীফা আপার কথা বলছি। অত্যান্ত মেধাবিনী ছিলেন। খেলাধুলায়ও খুব ভাল ছিলেন। চইকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১ম শ্রেনী থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত কখনও ২য় হন নাই। সিনিয়র শিক্ষকরা হয়ত এখনও স্বরন করতে পারবেন। সম্ভবত উনি যখন ৯ম/১০ম শ্রেনীতে তখন আমার স্কুলে যাব যাব ভাব। একদিন আমাকে স্কুলে নিয়ে গেলেন। একদম পেছনের সিটে বসিয়ে রাখছিলেন। মনে পরে কোন এক আপা আমাকে বললেন, বাবু অ আ লিখ তো। আমি গাল ফুলিয়ে বসে ছিলাম। লিখব না তো লিখবনা। হা হা হা.......
স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবেন। ইন্টারে থাকা অবস্থায় একজন ভাল সুন্দর ছেলে পেয়ে আম্মা বিয়ে দিয়ে দিলেন। (এখন হলে বাল্য বিয়ের কেস হয়ে যেত)। পড়ালেখা আর আগায়নি। আমরা চইকা কলনী থেকে চলে আসার পরও উনার কথা স্যার আপারা অনেক দিন ক্লাসে বলতেন বলে শুনেছি.......
অবিনাশ স্যার
গতকাল অবিনাশ স্যারের বাসায় গিয়েছিলাম স্যারের হাতে আমাদের গ্রান্ড আড্ডার কুপন তুলে দেওয়ার জন্য, আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ আমাকে এই দ্বায়িত্ব দেওয়ার জন্য। স্যারের সাথে পুরানো দিনের অনেক কথা হয়েছে। সবচেয়ে আশ্চর্য লেগেছে খালাম্মা ( স্যারের স্ত্রী) আমাকে এখনো মনে রেখেছেন। অথচ উনার সাথে আমার খুব সামান্য পরিচয় ছিলো।
অবিনাশ স্যার খুব ছাত্র বান্ধব শিক্ষক ছিলেন, ছাত্রদের প্রতি প্রচন্ড শাসনের পাশাপাশি যথেষ্ট স্নেহ করতেন। স্কুল লাইফে দলগত বা ব্যাক্তিগত অন্যায় করে যতবারই ঝামেলায় পড়েছি ততবারই স্যারের কাছে আশ্রয় চেয়েছি ও পেয়েছি।তাই বলে উনি শুধু শুধু ছেড়ে দেন নি, অন্যায়ের বিচার ঠিকই উনি করতেন।। স্কুল লাইফ শেষ হওয়ার পর ও একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা থেকে স্যার আমাদের উদ্ধার করেছিলেন।এর আগেও স্যার কে নিয়ে লিখেছি, আসলে উনাকে নিয়ে লেখা কখনও শেষ হওয়ার নয়।
Subscribe to:
Posts (Atom)
No one has commented yet. Be the first!