Sunday, July 31, 2016

“নিজেকে কখনোই হারাতে দেবেন না আর হার ও মানবেন না “


" বাজ পাখী প্রায় ৭০ বছর জীবিত থাকে। অথচ ৪০ আসতেই- ওকে একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়। 
ওই সময় তার শরীরের তিনটি প্রধান অঙ্গ দুর্বল হয়ে পড়ে।
১. থাবা( পায়ের নখ) লম্বা ও নরম হয়ে যায়। শিকার করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
২. ঠোঁট টা সামনের দিকে মুড়ে যায়। ফলে খাবার খুটে বা ছিড়ে খাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
৩. ডানা ভারী হয়ে যায়।। এবং বুকের কাছে আটকে যাওয়ার দরুন উড়িয়ে বেড়ানো সীমিত হয়ে যায়।
ফলস্বরুপ শিকার খোজা,ধরা ও খাওয়া তিনটেই ধীরে ধীরে
মুশকিল হয়ে পড়ে।।। 
তখন ওর কাছে তিনটি পথ খোলা থাকে। 
১. আত্নহত্যা
২. শকুনের মত মৃতদেহ খাওয়া
৩. নিজকে পুনরস্থাপিত করা।
তখন সে একটা উচু পাহাড়ে আশ্রয় নেয়। সেখানে বাসা বাঁধে।। আর শুরু করে নতূন প্রচেষ্টা।
সে প্রথমে তার ঠোঁট টা পাথরে মেরে মেরে ভেঙে ফেলে। এর থেকে যন্ত্রণা আর হয় না। একইরকম ভাবে নখ গুলো ভেঙে ফেলে 
আর অপেক্ষা করে নতূন নখ ও ঠোঁট গজানোর।
নখ ও ঠোঁট গজালে ও ওর ডানার সমস্ত পালক গুলো ছিড়ে ফেলে।। 
কষ্ট সহ্য করে অপেক্ষা করতে থাকে নতূন পালকের।।
১৫০ দিনের যন্ত্রণা ও প্রতীক্ষার পর সে সব নতূন করে পায়। 
পায় আবার সেই লম্বা উড়ানোর ক্ষমতা আর ক্ষিপ্রতা।।
এরপর সে আরো ৩০ বছর জীবিত থাকে আগের মত শক্তি ও
গরিমা নিয়ে।
***মানুষের ইচ্ছা,সক্রিয়তা ও কল্পনা ও দুর্বল হয়ে পড়ে ৪০ আসতেই। অর্ধজীবনেই আমাদের উৎসাহ, আকাঙ্খা,শক্তি
কমে যায়।
আমাদেরও আলস্য উৎপন্নকারী মানসিকতা ত্যাগ
করে,অতীতের ভারাক্রান্ত মন কে সরিয়ে ও জীবনের বিসন্নতাকে কাটিয়ে ফেলতে হবে বাজের ঠোঁট,ডানা আর থাবার মত করে।
যদি আমরা চেষ্টা করি তাহলে- আবার আমরা পাবো নতূন উদ্যম, অভিজ্ঞতা ও অন্তহীন শক্তি।
নিজেকে কখনোই হারাতে দেবেন না আর হার ও মানবেন না !!

প্রথম সকাল


স্কুলে যাবার পর আমাদের ক্লাসের ক্লাস টিচার হিসেবে শ্রদ্ধেয়া মাকসুদা আপাকে পাই। আর অন্য শাখায় ছিলেন জয়শ্রী আপা।মাকসুদা আপাকে যেমন ভয় পেতাম, মনে হত এই বুঝি মারবেন। কিন্তু যতই বড় হলাম,বুঝতে পারলাম আপার আসলে কোন ছাত্রের প্রতি রাগ নেই।পড়া শেখানো র জন্য আপার এই রুপ। পড়া শিখলে আপা অনেক খুশি।আপার যেদিন মন বেশি ভাল থাকত,সেদিন মাথার একপাশে ছোট ফুল গুজে দিতেন,সেটা ঘাসফুল হোক বা অন্য কোন ফুল। আপার ছোট ছেলে সাগর ভাইও ছোটদের দেখতে পারতেন।

অন্যদিকে জয়শ্রী আপা ছিলেন খুবই শান্ত,কখনো আপাকে রাগতে দেখিনি।মারতে দেখিছি খুব কম। সবসময় যেকোন কথা সুন্দর করে বুঝিয়ে বলতেন। আর আমার কাছে জিজ্ঞেস করতেন,জনি,সঞ্জু কি পড়ে না দুষ্টামি করে?

আমি বলতাম, না,আপা,পড়ে।

কারন আমি যদি বলি, সঞ্জু দুষ্টামি করে তাহলে আপা চলে যাবার পর কল্লোল আমার বারটা বাজাবে সেটা ত আপাকে বলতে পারতাম না।কলোনি ছেড়ে আসার কয়েক বছর পর আপার সাথে দেখা হয়ছিল।বদলান নি খুব একটা। ভাল মানুষেরা চাইলেও নিজেকে খুব একটা বদলাতে পারেন না।

গত দুইদিন (শুক্রবার এবং শনিবার)


গত দুইদিন (শুক্রবার এবং শনিবার) সিএসএম কলনির ভাইবোনদের সাথে দারুন সময় কাটিয়েছি। শুক্রবার বিকালবেলা স্কুল প্রাঙ্গনে বড়ছোট ভাইবোন একসাথে অনেক মজা করেছি, ছবি তুলেছি, আড্ডা দিয়েছি। তারপর সেখান থেকে চা খাওয়ার জন্য কাঠগড়ে খোকন ভাইয়ের বাসায় গেছি। আর গতকাল রাতে নবাবীতে শাহজাহান ভাইয়ের জন্মদিনের পার্টিতে কেক কাটা, ছবি তোলা, রাতের খাবার কি অসাধারন মুহুর্ত পার করেছি। খুব দ্রুতই সময় পার হয়ে গেলো। দুইদিন সবার সাথে অনেক মজা করেছি। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে বড় ছোট ভাইবোনদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি না, আড্ডা দিচ্ছি বন্ধুদের সাথে। সবাই যেন বন্ধুর মত। আসলে সিএসএম এর ভাই বোনদের সাথে থাকলে সময় কিভাবে টেরই পাই না। তবে একটা জিনিষ ভাল লাগে, আমরা সাথে ২/৩ ঘন্টা কিন্তু তার রেশ থাকে কয়েক ঘন্টা।

"চিঠি"


চিঠির আবেগ কি আর মোবাইল, ই মেইল আর মেসেজে পাওয়া যায়? একেক টি চিঠি ছিল একেক টি আবগের ডিব্বা। ছেলের কাছে বাবা মায়ের পত্র, দূর হোস্টেলে থাকা ভাইয়ের কাছে ছোট বোনের চিঠি। প্রবাসী স্বামী দেশে থাকা তার প্রিয়তমা স্ত্রীর নিকট চিঠি।এসব আবেগ কি আর যোগাযোগ প্রযুক্তি দিয়ে পাওয়া সম্ভব। 

আর প্রেমপত্র র কথা কি বলব, একটি পত্র পাওয়ার জন্য প্রেমিক প্রেমিকার কি আকুলতা আর ব্যাকুলতা। অনেক প্রতিকুলতা পেরিয়ে প্রেমিক বা প্রেমিকার চিঠি পাওয়া বা চিঠি পৌছাতে পারা ছিল দিগবিজয়ী বীরের মত কাজের সমান। আহ! কত কষ্ট ছিল সেই চিঠি পাওয়া বা পাঠানো আর সংরক্ষণ করা। প্রেমিক প্রেমিকা একে অপরকে আগে থেকেই বলে রাখতো অমুক গাছতলায় বা অমুক সিঁড়ি র তলায় তমুক ইটের নীচে চিঠি রাখা থাকবে। আহাহা! কত কষ্ট, কত প্রতীক্ষা। আর এ জন্যই বোধ হয় গান লিখা হয়েছিল " চিঠি দিও প্রতিদিন "। আর মাঝে মাঝে তো রিলায়েবলল মিডিয়ার অভাবে তো চিঠি, যোগাযোগ সব অচল হয়ে যেত। আর তাই গান গাইতাম " নাই টেলিফোন,নাইরে পিয়ন,নাইরে টেলিগ্রাম, বনধুর কাছে মনের খবরর কেমনে পৌছাইতাম......... "। আবার কখনো কখনো গাইতাম " আজ তোমার চিঠি যদি না পেলাম হায়, তবে ভেবে নিব ডাক পিয়নের অসুখ হয়েছে..... "।

আজকের প্রজন্ম তোমরা কিভাবে বুঝবে আমাদের সময়কার প্রেম যোগাযোগের এত কষ্ট, এত প্রতিকুলতা। তোমাদের এখনকার যোগাযোগ প্রযুক্তি তে বেগ আছে, আবেগ নাই, রিমেক আছে বিবেক নাই।।

ছায়াতরু


যদি জানতে চাওয়া হয় কলোনি র জাতীয় গাছ কি? সবাই বলবে, নারকেল গাছ।যেদিকে তাকাই শুধু এই গাছ,সেটা পুকুরপাড় হোক, বা বিল্ডিং এর সামনে বা খেলার মাঠ। সারা কলোনি টাকে ছায়া দিয়ে ঢেকে রেখেছিল এই গাছ। পুকুরপাড় এর নারকেল গাছের আড্ডা ত বিখ্যাত। আমাদের বিল্ডিং এর ছয়টা বাসার জন্য ৪ টা নারকেল গাছ বরাদ্দ ছিল।১ টা মানিক ভাইদের,১ টা রিনিদের,১ টা রিনা আপাদের, আর ১ টা আমাদের,রিপা আপাদের আর রুবি আপাদের তিন ফ্যামিলি মিলে এক গাছের নারকেল,ডাব ভাগ করে খেতাম।গাছটার নিচে অনেক খেলেছিও।

১৯৯১ এর বন্যার সময় নারকেল গাছ টা পড়ে যায়। পানি নেমে যাবার পর আমরা সেটাকে রেলগাড়ি বানিয়ে খেলতাম।একদিন কতৃপক্ষ গাছটা টুকরা টুকরা করে নিয়ে যায়। আমাদের আর নারকেল এর কোন গাছ থাকল না।রিনা আপার আম্মা মাঝেমাঝে ডাব পাড়লে দিতেন।কিংবা দাদার বাড়ি থেকে আনা হত নারকেল।

কিন্তু গাছের ছায়া যেটা বেশি মিস করতাম সেটা দেবার জন্য কাউকে পেতাম না।মাঝেমাঝে গাছটার শিকড় যেখানে ছিল সেখানে দেখতে যেতাম,দেখতাম অন্য গাছ গজিয়েছে।একসময় নারকেল গাছটার কথা বেমালুম ভুলে গেলাম

স্কুলে যেদিন প্রথম যাই ভর্তি পরীক্ষা দিতে


স্কুলে যেদিন প্রথম যাই ভর্তি পরীক্ষা দিতে, সেদিন আমি মাসুদ আর বাবু পাশাপাশি বসছিলাম।যাতে একজন কিছু ভুলে গেলে অন্যজন মনে করিয়ে দেয়। কিন্তু তিন জনের একসাথে বসা হয়নি। আমাকে উঠিয়ে আরেক পরীক্ষার্থী র পাশে বসিয়ে দেয়া হয়। বিরক্ত লাগছিল।আমাদের রুমে এসেছিলেন ফেরদৌসি আপা,জেবু আপার আম্মা। উনি বললেন যারা ক থেকে ম পর্যন্ত পারে তারা সেটুকু লিখতে আর যারা ক থেকে ঁ পারে তারা সব লিখতে। ১ থেকে ২০, a,b,c,d লিখতে। আমি ক থেকে ম পর্যন্ত লিখে চলে আসলাম। বাসায় আসার বলল কম লিখছি বলে নেয়া হবেনা। কিন্তু আমি ত আপার কথা অনুযায়ী লিখছি,তা বুঝানো র চেষ্টা করলাম। মনে মনে ভয় হচ্ছিল যদি না নেয়।কিন্তু না, ঠিকই নেয়া হয়েছিল। তবে মাসুদ আর আমি আলাদা ক্লাসে পড়ছিলাম,তাই ভাল লাগেনি

কলনিতে থাকা অবস্থায়


কলনিতে থাকা অবস্থায় আমাদের বন্ধুদের কয়েকটা গ্রুপ থাকালে ঈদেরর দিন আমরা সবাই এক হয়ে যেতাম। সারাদিন গ্রুপ ভিত্তিক ঘুরাঘুরি করলেও সন্ধ্যার পরে সবাই এক জায়গায় একত্রিত হতাম। কম করে হলেও ১৫/২০ জন। তারপর সকলে মিলে দলবেঁধে একেক বাসায় হানা দিতাম। একটা বাসা শেষ করে আরেকটা বাসায় যেতাম। যে বাসায় যেতাম সে বাসার খবর হয়ে যেত। কারন কোন রকম ইনফরম্যাশন ছাড়াই যাওয়া হতো। তবে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করতাম তারা আমাদের কিছুই বুঝতে দিতো না। পরে অবশ্য দুই ঈদের পর থেকে যাদের বাসায় যেতাম তারা অভ্যস্থ হয়ে গেছে। তারা মোটামুটি প্রিপারেশনে থাকতো। এখন এইসব কথা মনে হলে খারাপ লাগে। কারন বিনা নোটিশে তাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি।

২৬টা বছর পর


২৬টা বছর পর!!! ধন্যবাদ জিয়া। সুন্দর একটি আয়োজন। আমি/শাজাহান/জিয়া/মোল্লা[অপু]/স্বপন, সাথে জসিম এবং দুইটা অপ্রাপ্ত বয়সী "পোলাপান" নাজমুল ও নীরু। জিয়ার বাসায় একটা জম্পেস আড্ডা হয়ে গেলো। আড্ডায় রসদ ছিলো ভরপুর!! অনেক কিছুই নিয়ে আমরা আলাপ করেছি। আমাদের সাথে শাজাহান যোগ দেওয়াতে, আড্ডাটি পুরাপুরি একটি গঠন মুলক রুপ ধারন করে। আমরা আশাবাদি। 

লোপা ভাবীর আন্তরিকতায় আমরা মুগ্ধ।[আহারে, আমার সারাফের মা ক্যারে, লোপা ভাবীর মত হইলো না??]। কত কিছুই না, আমাদের জন্য রান্না করেছে। ইচ্ছামত খাইছি। ডায়াবেটিস বাড়লে বারুক!!

ভাবী আপনি কি জানেন!! জিয়ার বয়স এখন ৫৩!!!!!!! বিশ্বাস হয়না?? শাজাহানের কাছে দলিল পত্র আছে!! জিয়ার বয়স ৫৩ হলে, আমি/শাজাহান/মোল্লাও-৫৩ বছর!! তাই কালকে আমরা একমত হয়েছি, আমরা ৪৭-এর উপর আমাদের বয়স বলবো না!!!! আগামি ৩ বছর জন্য ৪৭ বছর আমরা ফিক্সড করে নিয়েছি!! নিরু/নাজমুল/জসিম এখন্ও ৪০-এর কোঠায়!! এটাও আগামী ৩ বছরের জন্য ফিক্সড করা হইলো!!!

আবারও ২৬টা বছর পর!! নবাবিতে একটি চমৎকার আয়োজন। বন্ধু শাজাহানের জন্মদিবস পালন। ছোট/বড় ভাই-বোনেরা একত্রিত হয়েছিলো। কেক কাটা সাথে খাওয়া দাওয়া। আন্তরিকতা পুর্ন একটি সন্ধ্যা/রাত কেটে গেলো। গতকাল শনিবার-টি, শাজাহান শুধু আমাদের জন্য-ই বরাদ্দ রেখেছিলো। বন্ধুটি দারুন আশাবাদি, আমাদের csm-পেজ নিয়ে। পাশে থাকো বন্ধু তুমি, এই আমাদের কামনা। অজস্র ধন্যবাদ বন্ধু শাজাহান-কে, আমাদের csm-পেজের পক্ষ থেকে।

ধন্যবাদ ৯৫- ব্যাচ কে। স্কুল- প্রাংগনে একটি সুন্দর আয়োজন করার জন্য। আড্ডা শেষে, সবাই মিলে ছুটে গেলাম কাঠঘর। চা-চক্র পর্ব। খোকনের বাসায়। দারুন একটি সময় কেটে গেলো। অজস্র ধন্যবাদ ৯৫-ব্যাচ সহ অন্যান্য ছোট ভাই/বোনদের, একটি অসাধারন দিন উপহার দেওয়ার জন্য।

তোমাকেও অজস্র ধন্যবাদ, csm-পেজ, আমাদের বার/বার মিলিত হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।।

গতকাল সুজনের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম


গতকাল সুজনের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম,আমাকে ৪০০ করতে হলে কতটা আরো বাকী। লিখা লিখতে হবে।সুজন আমি তোরে কইয়া রাখলাম এককেরে চারশ হলে আমারে জানাবি।সিএসএম পেজে ৩০০+ লিখেছে আতিক ভাই,জনি২০০+ লিখেছে।আর কমু ভাই ১০০ + ও লিটন ৫০+ সবাই কে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।রেজা ভাই ১০০ কাছাকাছি।এ পেজে সবাই মন খুলে লিখি শুধু এমন কিছু লিখবোনা যাতে আরেকজনের মনে কষ্ট পায়।তাই আমরা সবাই লিখে যাই,কারন এখানে সব আমরা আমরাইতো।শাহজাহান ভাই,স্বপন ভাই,ও অপু ভাইয়ের কাছেও সিএসএমের স্মৃতি নিয়ে লিখা আশা করি।

কলোনিতে স্কুল বা কলেজে পড়াকালীন সময়ে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকলে


কলোনিতে স্কুল বা কলেজে পড়াকালীন সময়ে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকলে দুপুর বেলা সাধারণত আমাদের কোন কাজ কাম থাকতোনা। বিকাল চারটা পর্য্যন্ত ইউনুসের দোকানও বন্ধ থাকতো। তাই আমাদের, বিশেষ করে আমি, Mamunur Rashid Rashed পলাইয়া, Monirul Islam Monir দুলির আড্ডা ছিল ট্যাংকির তলা, বাজারের ভাই ভাই স্টোর অথবা কলোনির আনাচেকানাচে। এরকম এক দুপুরে কলোনির আনাচেকানাচে ঘুরতে ঘুরতে আমি আর পলাইয়া রাশেদ সি টাইপের একটি বিল্ডিং এর পিছনের ডাস্টবিনের কাছে চলে গেলাম। ডাস্টবিনের কাছে দেখি এক তোড়া লিখিত কিছু কাগজ। আমার অভিজ্ঞ চোখ কাগজ গুলো দেখেই বুঝে গেল এগুলো সব প্রেম পত্র। কাগজ গুলো ডাস্টবিন থেকে তুলে আনার পর দেখা গেল ঠিকই সব গুলা প্রেম পত্র। কলোনি র এক বড় আপা কলোনির আরেক বড় ভাইকে চিঠি গুলো দিয়েছে ( তারা অবশ্য এখন সুখী দম্পতি)। পরদিনও আমি রাশেদ গেলাম ওই স্থানে, সেদিনও আরো কিছু প্রেম পত্র পেলাম। আহ কি সে ভাষা ছিল পত্র গুলার, আবেগের সাথে বাস্তবতার কি অপূর্ব সমন্বয় ছিলো সেই চিঠি গুলোয়।

হলফ করে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি ওই রকম ভাষার চিঠি এই জেনারেশনের পোলাপান কোনদিন লিখতেও পারবেনা এবং ওই যোগ্যতাও হবেনা।

আজকাল বয়স হলেও সকলে দেখি বয়স হয়েছে মানতে চায় না মানসিক দিক দিয়ে


আজকাল বয়স হলেও সকলে দেখি বয়স হয়েছে মানতে চায় না মানসিক দিক দিয়ে।খুব ভাল।এতে করে আমাদের শারিরীক-মানসিক দুইদিকেই মঙ্গল হয়।সহজে রোগ-ব্যধি,প্রতিকূল পরিস্হিতি কাবু করতে পারে না। ছোট থাকতে বাবাকে দেখে এসেছি তরুণদের মত চলা ফেরা,পছন্দও রং-চঙা।সব ধরনের গান-বাজনাও পছন্দ করেন উনি।অনেক ক্ষেত্রে আমার,মার অসস্থি হতো।এখন বয়স ৭৮ বছর হবে।বিভিন্ন রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে।তারপরও মনে হয় বেঁচে আছেন মনের জোরে।বয়সটাকে গুরুত্ব না দিয়ে মনকে প্রাধান্য দিয়েছেন।দোয়া করি,উনার এই জোর বজায় থাকুক।উনি আরো দীর্ঘায়ু হউন।

তখন ৯০ এর গন আন্দোলন চলছিল


তখন ৯০ এর গন আন্দোলন চলছিল, সন্ধ্যার পরে বিবিসি আর ভয়েস অব আমেরিকা শোনার জন্য কলোনির চাচা ভাতিজা সবাই গিয়ে হাজির হতাম জেক্সের সামনে, দেশের পরিস্থিতি নিয়ে সবার মাঝে উদ্বেগ থাকলেও সন্ধ্যার পর জেক্সের সামনে ওই সময়টায় সবার মাঝে উৎসব ভাব বিরাজ করতো। 

এমনই এক সন্ধ্যায় Md Shafiul Alam ভাই তার মোটর সাইকেল নিয়ে জেক্সের সামনে আসলেন। সেখানে আমি আর দুলিওও ছিলাম। শফি আলম ভাইয়ের মোটর সাইকেল টি দেখে দুলি আবদার করলো সে একটু চালাবে। দুলি তখনো মোটর সাইকেল ভালোমতো চালাতে পারতোনা, সেটি আবার শফি আলম ভাই জানতেন না। যা হোক দুলি মোটর সাইকেল স্টার্ট দিয়ে একটু দুরেই সি টাইপ মাঠের কাছে গিয়ে ব্যালেন্স হারিয়ে মোটর সাইকেল সহ চিটপটাং। শফি আলম ভাই তার মোটর সাইকেলের জন্য হায়হায় করছেন, আর ওদিকে সবাই খবর শোনা বাদ দিয়ে আহত দুলিকে নিয়ে ব্যস্ত। আল্লাহর অশেষ রহমত, দুলি আমাকেও মোটর সাইকেলের পিছনে সেদিন তার সাথে উঠতে বলেছিল, কিন্ত আমি আর উঠিনি।

এগুলো কলোনির স্বাভাবিক ও সাধারণ ঘটনা ছিল, কিন্ত এখন মনে পড়লে প্রতিটি ঘটনাই আমার কাছে অসাধারণ মনে হয়।

সততা, নিষ্ঠা আর অভিজ্ঞতার প্রতীক ছিলেন তিনি


সততা, নিষ্ঠা আর অভিজ্ঞতার প্রতীক ছিলেন তিনি। একজন অপরিচিত ব্যক্তিও উনাকে দেখলে উনার প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে আনবে। যার সততার গুণাবলী আজো সবার মুখে মুখে। এবং চিরদিনই তাঁর সততা ও নিষ্ঠার কথা সবাই মনে রাখবে। তিনি ছিলেন একজন নিভৃতচারী স্বল্পভাষী মানুষ। আজ ১লা আগষ্ট এই ভালো মানুষ টির প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী। আর তিনি হচ্ছেন আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় মরহুম সাইফুল আমিন চাচা। 

প্রকৃতির কি খেয়াল!! একটু আগে মরহুম সাইফুল আমিন চাচার বড় ছেলে মিঠু ভাইকে তার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্ট দিয়েছি আর একই তারিখেই মিঠু ভাইয়ের বাবার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী র পোস্ট দিচ্ছি।

মরহুম সাইফুল আমিন চাচা কর্মজীবনে স্টিল মিলে ছিলেন আমার বাবার সরাসরি বস। আমার বাবা ছিলেন চাচার খুবই স্নেহধন্য ও নির্ভরযোগ্য সহকর্মী। আমার বাবার পরম সৌভাগ্য যে উনার মত একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তির অধীনে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন।

আমরা মরহুম সাইফুল আমিন চাচার জন্য দোয়া করি, যেন পরমকরুনাময় উনাকে জান্নাতবাসী করে রাখেন।

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss