Thursday, April 28, 2016

গতকাল দুপুরে বাবার ফোন, নিডোকার্ড স্প্রে


গতকাল দুপুরে বাবার ফোন, নিডোকার্ড স্প্রে( বুকে জ্যাম লাগলে স্প্রে করতে হয় জিহবার নিচে) আগেরটা শেষ আরেকটা যেনো আমি অফিস ফেরাতে নিয়ে আসি।পুরো আগ্রাবাদে খুঁজে না পেয়ে শেষে বড়পুলে পেলাম।বাসায় যাওয়ার পর বাবা বলল দুপুর থেকে বুকে ব্যাথা, বুক জ্যাম হয়ে আছে।প্রথমে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা ভেবেছিল।স্প্রে দুইবার দেওয়ার পরেও যখন বুকের জ্যাম চলমান,ফোন দিলাম বাল্যবন্ধু মুরাদ কে।মুরাদের পরামর্শেই কাছের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ইসিজি করলাম,মুরাদ আসলো,দেখলো ইসিজি রিপোর্ট (হার্ট রেট ১৯৮,নরমাল থাকে সাধারনত ৬০-৯০)।সেখানে বমি করলো এক দফা।মুরাদের পরামর্শে দ্রুত চিটাগাং মেডিকেলে গেলাম ইমার্জেন্সীতে,এক পিয়ন সপ্রনোদিত হয়ে কুপন নিয়ে ইমার্জেন্সী ডাঃ এর কাছে ইসিজি রিপোর্ট নিয়ে গেলো, ডাঃ দ্রুত ভর্তি হতে বলল।সেই পিয়ন স্ট্রেচারে করে সিসিইউ তে নিয়ে গিয়ে সেখানে আরেক দফা ইসিজি করা হলো,তারপর সব রিপোর্ট নিয়ে ডিউটি ডাঃ এর কাছে নিয়ে গেলো,সেই পিয়ন ঔষদের লিষ্ট নিয়ে আমাকে দিয়ে বলল ১০০ টাকা দেন আর এই ঔষধ গুলো নিয়ে আসেন।প্রথমে ভাবলাম ১০০টাকা কোন কাজে হয়তো কিন্তু পরক্ষনে তার বিদায়ে বুঝে নিলাম তার সপ্রনোদিত কাজের টিপস।মনে মনে ভালোই লাগলো,কারন আমার জীবনে সরকারী মেডিকেলে এই প্রথম ইমার্জেন্সি রোগীকে ভর্তি করানোর অভিজ্ঞতা।আর এই ব্যাপারটা শেয়ার করার উদ্দেশ্যে একটাই যারা আমার মত এই প্রথম তাদের জন্য কিছু জানানো।আসলে চিন্তা করে দেখুন আমাদের বাবা চাচারা বড় অসুখের চিকিৎসা মানেই বুঝত এই চিটাগাং মেডিকেল।


রোগীর ইমার্জেন্সী দেখে সাময়িক মেঝেতে থেকে ECG heart rate monitor সহ বেড পেলাম তাও এক পিয়ন এর কারবার।Continuous মনিটর চলছে,হার্ট রেট ১৯৪।ইঞ্জেকশন এবং ঔষধ দেওয়ার হার্ট রেট কমে আসলো ১৭২।ডিউটি ডাক্তার দুইজন ছিল,দুইজনেই খুব ভালো এবং ঠান্ডা মাইন্ডের ছিল,যে কেউ ডাক দিলেই দেখলাম খুব সহজভাবে দ্রুত এসে চিকিৎসা করছে।বাবার হার্ট রেট ১৬৭-১৮০ উঠানামা করল।যখন ১৭৬ এ ডিউটি ডাক্তার বলল এই রেট কমপক্ষে ১৫০ এর নিচে নেমে আসতে হবে, এভাবে থাকলে রোগীর যে কোন কিছু হতে পারে তাই শেষ চিকিৎসা DC Shock।আমার কাছ থেকে সিগনেচার নিলো DC Shock পরবর্তী খারাপ কিছু হলে তারা দায়ী থাকবেনা,কেমন যেনো ভয় লাগলো।আল্লাহ ভরশা করে সাইন করে দিলাম।ভোর ৬ঘটিকায় ঘুমের ইঞ্জেকশন দেয়ার পর শক দেয়া হলো,স্পার্ক করে বাবার শরীরটা প্রায় ১.৫ ফিট উপরে উঠলো।মনিটরে ভেসে উঠলো হার্ট রেট ৬৭।আলহামদুলিল্লাহ।

ডাক্তার লিখে দিলো Revert successful. সবাই দোয়া করবেন আমার বাবা মা সহ সকল বাবা মা'র জন্য এবং আমার বন্ধু মুরাদের জন্য সে যেনো অনেক অনেক বড় ডাক্তার হয়ে দেশ ও দশের চিকিৎসা করিতে পারে।আমিন।।

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss