Monday, September 28, 2015

"খোলা চিঠি"

- Mahabub Rasel

লেডিস & জেন্টেল CSM,

আমরা আসলে কি মিস করি? আমাদের গর্ব কি? CSM কলোনি, নাকি CSM কলোনির মানুষজন ? আমরা সবাই যদি CSM কলোনির না হয়ে অন্য কোন কলোনির হতাম, ধরে নেন আমাদের কলোনির নাম ছিলো " ভুতের কলোনি", তাহলে কি আমাদের মন মানুষিকতা অন্য রকম হত ? আমারতো তা মনে হয় না কারন আমরাই CSM কলোনির পরিবেশকে এমন ভাবে বানিয়েছিলাম যার কারনে আমরা CSM কলোনিকে মিস করি গর্ব করি

“ হারামজাদা হোলাইন !!!”

- Mahabub Rasel

কলোনির একটা ব্যাপার খেয়াল করলে এখন মজাই লাগে, আমাদের স্কুলে পড়তো বা স্টিল মিলস চাকরি করতেন এমন অনেকেই কলোনির বাহিরে খালপাড়ে ( বার্মা পাড়ার পাশে ) থাকতেন প্রায় সময় খালপাড়ের সাথে ফুটবল বা ক্রিকেট ম্যাচ নেওয়া হত যেদিন ম্যাচ হত আমরা যেহেতু কলোনির, তাই তাড়াতাড়ি চলে যেতাম বড় মাঠে প্র্যাকটিস করতাম, ঘড়ির দিকে তাকাতাম আর অপেক্ষা করতাম খালপাড় দল কখন আসবে?

বাহ, খালপাড় দল জার্সি, ট্রাউজার, জুতা, মোজা পরে ফিটফাট হয়ে একজন একজন করে আসা শুরু হয়েছে F-12 নাম্বার বিল্ডিং এর পাশে দেয়ালের উপর দিয়ে ( যেখানে একটা লোহার গেট ছিলো, সারা জীবন বন্ধই ছিলো ), প্লেয়ার এর সাথে কিছু কিছু দর্শকও আসতেছে!!! খেলা শেষ হলে আবার যেভাবে এসেছিলো, সেভাবেই দেয়ালের উপর দিয়ে চলে যেত মাঝে মধ্যে আতিক কাকা হামলা করলে বল ব্যাট রেখেই দেয়ালের উপর দিয়েই পালাতো, হা হা হা

CSM সৃতিচারনা (১ম অধ্যায়)


মরহুম আজিজ স্যারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক
আল্লাহ স্যারকে জান্নাতবাসী করুন। আমিন।

আজিজুর রহমান ওরপে আজিজ স্যার। একটি নাম। একজন মুর্তিমান আতংক। আমার সময়ে এমন কোন পোলাপান ছিলনা, স্যারের নাম শুনে ভিমরি খেয়েছে। স্যারকে দেখলে সহপাঠীরা ১০২ হাত দুর দিয়ে চলাফেরা করতো। আমি তখন ক্লাস থৃীতে পড়ি। দুষ্ট হিসাবে মাএই নাম কামাতে শুরু করেছি। এই সময় আমাদের ক্লাসে মহা কঠিন এক বই এল নাম repid reder. আসম্ভব কঠিন। আব্বা পড়লেন বিপদে। এমন সময় আব্বার মাথায় বুদ্ধি এল এক ঢিলে দুই পাখি মারতে হবে। অর্থাত আমার দুষ্টামি + পড়ালেখা দুটই কন্ট্রোল করতে হবে। আর এ কাজের জন্য একমাত্র উপজুক্ত হলেন আজিজ স্যার। একদিন আববা আমাকে সাথে নিয়ে স্যারের বাসায় (F-10) গেলেন। বলিলেন, আজিজ ভাই, ছেলেকে আপনার কাছে দিয়েছিল গেলাম। চামড়া মাংস আপনার, আমার জন্য হাড্ডি রাখিলে চলবে। একথা শুনে স্যার দাত বের করে এমন এুর হাসি দিলেন ভয়ে আমার আত্মরাত্মা শিউরে উটলো। স্যার বললেন, সিরাজ ভাই আপনি কুন চিন্তা করবেন না। আপনার কথা ভালভাবে পালন করা হবে। আমি ক্লাস থৃী থেকে ফাইভ পর্যন্ত প্রাইভেট পড়েছি স্যারের কাছে। এই দীর্ঘ সময়ে স্যার তার কথা রেখেছিলেন আমার পিঠের বারটা বাজিয়ে। সে সময়ে স্যারের একটা কমন ডায়লগ ছিল, পড়া শিখলে ভাল না শিখলে আরও ভাল। আমার জীবনে বেত মেরে স্যারকে ক্লান্ত হতে দেখিনি কখনও। প্রতিদিন নব উদ্দমে বেত মেরে যেতন। আমাকে পিটাতেন তিন বেলা। ভোরে ও বিকালে ওনার বাসায় আর সকালে ইস্কুলের ক্লাসে। ওই যে আববাকে কথা দিয়েছিলেন। আমি নিয়মিত মার খেতাম আর মনেমনে বলতাম, কত মারবি মাইরা ল, একদিন তোরে আমি খুন করি হালামু। মার খাওয়ার কিছু সময় পর ভূলে যেতাম কারন সাগরের আম্মা মানে স্যারের ইস্ত্রী আমাকে রুটি ভাজি দিয়ে নাস্তা করাতেন প্রায় সকালে। কি স্বাদ তার! অতুলনীয়। এভাবে অনেক দিন কেটে গেল। আমি তখন ফাইভে পড়ি। একদিন টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছিল। আমি বাসা থেকে প্রায়ভেট পড়ার নাম দিয়ে বেরিয়ে স্যারের বাসায় না গিয়ে বই খাতা আমাদের মুরগীর খোয়াড়ে লুকিয়ে তার পিছনে নারকেলের চোবড়ায় আগুন দিয়ে খেলছিলাম। বৃস্টির জন্য স্যার ইস্কুল থেকে বাসায় ফিরছিলেন আমাদের বাসার পিছন দিয়ে। কিভাবে যেন আমাকে দেখে ফেললেন। বললেন, কিরে কোহিনূর আজ পড়তে যাস নাই কেনো? বললাম, স্যার আজ আম্মার অসুখ তাই যায়নি। স্যার বললেন চল তোর আম্মাকে দেখে আসি। আমি তখনই শেষ। আমাকে নিয়ে বাসায় গেলেন। আম্মাকে বললেন, ভাবি আপনার কি অসুখ হয়েছে? মা বললেন, আমারতো কিছু হয়নি। সাথে সাথে স্যার কাহিনি বুজে ফেললেন। আমাকে হুংকার দিয়ে বললেন, আজিজের লগে মামদোবাজি! আজ তর দইদিন কি আমার একদিন। আমাকে টেনে নিয়ে গেলেন ইসমাঈলদের বাসায় (জিগার আপাকে পড়াতেন তখন)। অতঃপর....অতঃপর মনের মাধুরী মিশিয়ে ওনার জীবনের স্রেষ্ট মাইরটা দিলেন আমায়। এক মাইরে আমি কোহিনূর একদম সোজা। এত বছর পরেও শিউরে উঠি। যারা আজিজ স্যারকে পায়নি তাদের কাছে আমার এ লেখা নিছক গল্প মাএ। স্যার আপনার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। আমার প্রায়মারি লাইফে আমাকে পিটিয়ে আমার ভিত্তি সোজা করেছিলেন বলেই আজ আমি এই অবস্থানে আসতে পেরেছি। স্যার আপনার সাথে আমার শেষ দেখা রিমন- মেরির বিয়েতে ২০০৫ সালে। আজ আপনি নেই। কিন্তু মিশে আছেন আমার জীবনে ওতোপ্রতোভাবে। মহান আল্লাহ আপনাকে জান্নাতবাসী করুক। আমিন।

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss