Friday, October 9, 2015

আজ আমি আর কোথাও যাব না


আজ আমি পতেংগা সিবিচ যাব।কিন্তু জানি স্টিল মিলস কলোনি র গেইট এ আসা মাত্র আমার আর যাওয়া হবেনা।ওখানেই থেমে যাব।তারপর হাটতে হাটতে কলোনি র গেইট এর দিকে যাব।পুরোপুরি হ্যালুসিনেশনে চলে যাব।দেয়ালটা উঠে কলোনি র সেই আগের গেইট হয়ে যাবে।আমি যেন দুপুরে মায়ের পাশে শুয়ে আছি, কখন মা চোখ বন্ধ করবেন এই আশায়।মা ঘুমালে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে আমি বের হবনা।হয়ত আতিক ভাইয়ের কাছ থেকে আনা আনন্দ বিচিত্রা দেখতে থাকব।বড় বোন স্যারের কাছ থেকে এসে আমাকে বকা দিবেন ম্যাগাজিন ঘেটেছি বলে।তবুও বন্ধ হবেনা আমার এ অভ্যাস।

কিংবা রোদ থাকলে আমি টুল নিয়ে দরজার ছিটকিনি খুলে চলে যাব রিপা আপাদের বাসায়।দেখব গোলাম হোসেন চাচা একা একা শ্রীদেবীর কোন ছবি দেখছেন।আমি গিয়ে বসব উনার পাশে।যদিও শ্রীদেবীকে আমার ভাল লাগেনা,ভাল লাগে জুহি চাওলাকে।রিপা আপা থাকলে হয়ত দেখতে পারতাম।

মামলার ধারা - ৪২০

জানি ইচ্ছা পূরণ হবেনা



স্যরি আজ দুটি পোস্ট দিয়ে ফেললাম একই দিনে। ঘুম আসছে না। কিছু কিছু দিন এমনই থাকে। কিছুতেই ঘুম আসতে চায় না। আমরা যখন সি টাইপের তিনতলা বাসাটায় ছিলাম আমি রান্না ঘরের সাথের কোনার রুমটায় থাকতাম। এই রুমটার মজা হল এটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো। অনেক রাত হয়ে গেলে একটু নির্জনতা পাওয়া যেত। তখন মাঝে মাঝে আজকের মতো কিছু রাত আসতো যখন ঘুম নিরুদ্দেশে যেত। আমি খোলা জানালা দিয়ে আকাশে তাকিয়ে থাকতাম। জানালার পাশের নারকেল পাতা নক্ষত্রের আলো দিয়ে কত ভুত প্রেত যে আঁকত আমার মশারীতে। কত রাতে যে আমি উল্কার খসে পড়া দেখেছি। উল্কা পরার সময় নাকি মনে মনে কোন ইচ্ছা প্রকাশ করলে সেই ইচ্ছা পূরণ হয়। যতবার উল্কা পরতে দেখেছি ততবার আমি একটা ইচ্ছাই করেছি। ইচ্ছা পূরণ হয়নি। কত রাত দেখতাম স্টিলমিলের চোঙ্গাগুলো দিয়ে ধোঁয়া বেরুচ্ছে আর জেটির সোডিয়াম বাতির আলোয় কেমন লাল হয়ে উড়ে যাচ্ছে ধোঁয়ারা। স্টিলমিল নিয়ে কত ছোট ছোট সপ্নের মতো স্মৃতি আমার। অফিসার্স ক্লাবের গেটের সামনের রাস্তার নিচের ড্রেন ভেঙ্গে গেলো একবার। সিমেন্ট ঢালাইয়ের ঝামেলাতে না গিয়ে একটা এক ইঞ্চি স্টিল শীট কেটে ওখানে বসিয়ে দেয়া হল। ওখান থেকে টাঙ্কির দিকে এগিয়ে গেলে নতুন পিচ দেয়া রাস্তায় একদম ছোট একটা গর্ত। প্রতি রাতে আড্ডা দিয়ে বাসায় ফেরার পথে ডি টাইপের ওয়াশার টাঙ্কি থেকে পানি খেয়ে একমুখ পানি বয়ে নিয়ে এসে ওই গর্তে ফেলতাম। দিনের পর দিন কোন কারন ছাড়া এই ছেলেমানুষি খেলা খেলেছি আমি। মেডিকেল গেটের কাছ দিয়ে খালপাড়ে ঢুকতেই একটু সামনে বাম পাশে একটা বিশাল পাথর। পাথরটা বর্ষায় ঝোপঝাড়ে ঢেকে যায় আর শীতকালে বেরিয়ে আসে। পাথরের পাশেই একটা গর্ত। সেই গর্ত থেকেই কলোনির যত ব্যাডমিন্টন কোর্ট আর খেলার মাঠে দাগ টানার চুন যেতো। আমরা এটাকে চুনের খনি বলতাম। আরেকটু এগুলেই একটা পানির পাইপ খালের উপর দিয়ে আড়াআড়ি পার হয়ে গেছে। ছেলেরা পাহাড়ি ছাগলের মতো তরতর করে ওই পাইপ পার হয়ে বিএইচ১ এর পিছন দিয়ে শর্টকাট মেরে দিত। আমি কখনো ওই পাইপ পার হতে পারিনি। সাহসের বড় অভাব ছিল। খালপাড়ের জংলা থেকে পাকা তোকমা খুঁজে বের করে খেতে খেতে চলে যেতাম পুকুর পাড়ে। পুকুর পাড়ের কোনায় মসজিদের কাছের ঝোপে এক জোড়া টিয়া বাসা করেছিল। ওদের সামনে তোকমা ছুঁড়ে দিলে মাঝে মাঝে পায়ে চেপে ধরে খুঁটেখুঁটে খেত আর মাঝে মাঝে ফিরেও তাকাতো না। উড়ে চলে যেতো। 

গানের নাম "পাপড়ি"। হ্যাঁ, আজম খানের পাপড়ি।



আজ সকালে অফিসে যাওয়ার সময় পরিচিত একটা গান কানে এলো। বহু বছর পর গানটা শুনলাম। গানের নাম "পাপড়ি"। হ্যাঁ, আজম খানের পাপড়ি। পাপড়ি কেন বোঝেনা তাই ঘুম আসেনা। আমার প্রজন্মের মানুষের জীবনে আজম খান একটা বিশাল অংশ জুড়ে আছে। আজ সারাদিন গুরুকে মনে পড়ছিল। ৫ জুন গুরুর মৃত্যু বার্ষিকীতে গুরুকে নিয়ে আমি দুলাইন লিখেছিলাম।


আমি তখন ক্লাস সিক্স কি সেভেনে পড়ি। তখন টেপ রেকর্ডারের যুগ। বাজারে TDK, Sony কোম্পানির ষাট মিনিট আর নব্বই মিনিটের টেপ কিনতে পাওয়া যেত। আমরা আবার নষ্ট হয়ে যাওয়া টেপ থেকে ফিতা খুলে এখানে ওখানে টানা দিয়ে বেঁধে রাখতাম, বাতাস এলে ভ্রিইই ভ্রিইই শব্দ হয়। আমরা বলতাম ক্যাসেটের গানগুলোই বাজছে। তখনো আমাদের বাসায় কোন ক্যাসেট প্লেয়ার নেই। গান নিয়েও তেমন ধ্যান ধারনা ছিলনা। সেসময় আমাদের ক্লাসে নতুন একটা ছেলে ভর্তি হল, নাম জয়নাল আবেদিন। তার বাবা হুজুর ধরনের মানুষ। সফেদ দাড়ি আর তিনগজি আলখাল্লা পড়ে থাকে। জয়নাল ছেলেটা পিছনের বেঞ্চে আমার পাশেই বসত বেশির ভাগ সময়। কথাটথা হতনা খুব একটা। সারাদিন গুনগুন করে অদ্ভুত সুরে কি যেন গাইতো। অনেক চেষ্টা করেও ওর গানের কথা আবিস্কার করতে পারিনি অনেকদিন। একদিন ক্লাসে স্যার নেই, ব্যাপক হইহল্লা হচ্ছে। সম্ভবত চীনা আলম তার স্বভাবসুলভ খবিসি জোকের ভাণ্ডার খুলে বসেছে, সবাই হাহা হোহো করছে। জয়নাল পিছনের বেঞ্চে বসে একা একা গুনগুন করে যাচ্ছে। হইচইয়ের কারনে একটু জোরেই গাইছে। আমি কুত্তার মত কান বাগিয়ে বসে আছি যদি কিছু বুঝা যায়। শেষ দুটা শব্দ শুধু বুঝতে পারছি "তোমাকে আমার"। হঠাৎ একটু বেশিই জোরে গেয়ে ফেলল আর আমিও শুনে ফেললাম। "হৃদয়ের টানে আরো কাছে আনে তোমাকে আমার"। কেমন অদ্ভুত নিয়ম ভাঙ্গা সুর। আমরা তখনো "তোমার বাড়ির সামনে দিয়ে মরন যাত্রা যেদিন যাবে" ধরনের সুর শুনে অভ্যস্ত। গানের কথা আবিস্কার করে আমি ক্লাসে মোটামুটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটালাম। এরপর বহুদিন জয়নালকে আমরা "হৃদয়ের টানে" নামে ডাকতাম। 

আমার ডায়েরির ছেড়া পাতা ( সুমন বিশ্বাস )


আমি কখনোই রাইটার ছিলাম না, লিখতে যে খুব ভালো লাগে তাও না। আমি সারা জীবন বাধ্য না হলে কোন কাজ করিনা আজো ঠিক তেমনি আছি। আমি সত্যি বদলাতে পারি না । জসিম ভাই এর জন্য আজ আমি বাধ্য হয়ে আবার লিখতে আসলাম । গ্রুপে আমরা না থাকলে মজা হয় না। আমরা বলতে পুরো ৫০০+ ম্যাম্বার। এত বড় ভাই /বোন আছে অনেকের সাথেই এই গ্রুপেই প্রথম পরিচয় হলো। জসিম ভাইয়ার কথা শুনেই মনে হলো ফ্রেন্ড দের নিয়ে কিছু লিখবো ।

আমার ফ্রেন্ড , কাকে নিয়ে লিখবো ? ফেসবুকে আমার মতো নিরামিষ মানুষের ফ্রেন্ডলিষ্টে ৩৭১ জন ফ্রেন্ড !!! ভার্চুয়াল ফ্রেন্ড সিয়াম/রাব্বির কথা দিয়ে না শুরু করলে ফ্রেন্ডশিপ এর গল্প পুর্নতা পায় না , জাহাঙ্গির,কাজী, কাইয়ুম, রায়হান দের ছাড়া আমি নিজেরে খুজেই পাইনা । পলাশ এর সাথে কথা বলে যে আনন্দ টা খুঁজে পাই তারো তুলনা হয় না। কত যে ফ্রেন্ড আমার গুনে শেষ হবে না । সবার সাথেই মোটা মুটি যোগাযোগ আছে । ফ্রেন্ডশিপ কিভাবে করতে হয় এইটা যার কাছে শিখেছি সেই শুধু নেই আমার কাছে । এক সাথে বড় হয়েছি , কত ঝগড়া করেছি, গাল ফুলিয়েছি , কথা বলা বন্ধ করেছি। স্যাররা মিলিয়ে দিয়েছে আবার ফ্রেন্ডশিপ হয়েছে , অনেকবার দূরে চলে গিয়েও ফিরে এসেছে এখন তো আমাদের মাঝে কত দুরুত্ব আমাদের দেশ আলাদা , আমাদের দু জন কে আরো আলাদা করে দিয়েছে দুই দেশের মাঝে দেয়াল হয়ে থাকা কাটা তার। আমার আদর্শও হয়তো সুমনের কাছ থেকে আরো দূরে সরিয়ে দিয়েছে । দূরে সরে গিয়েই হয়তো আমি আরো বেশি অনুভব করতে শুরু করেছি । সময়ের সাথে বন্ধুত্ব আরো শক্তি শালি হচ্ছে। 

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss