Wednesday, April 27, 2016

ইচ্ছে


আবার যদি কলোনি লাইফ ফিরে পাই, তাহলে কি করব।বন্ধু দের অনেক সময় দেব। হুম,মানিক, সুজন, সালাউদ্দিন, আসিফ, রাফি, আফরোজ, রনবীর সহ অন্য বন্ধুদের সময় দেয়া উচিত ছিল।কিন্তু দেয়া হয়নি।মনে হত স্কুলে এত সময় একসাথে কাটাই আবার আলাদা করে কেন।তাছাড়া নিজের চারপাশে একাকীত্ব এর দেয়াল তুলে সবার কাছ থেকে আলাদা করে রাখতাম। যখন আমার ক্লাসের বন্ধুগুলো একসাথে হতে শুরু করল, ঘনিষ্ঠতা বাড়তে শুরু করল,তখন আমি কলোনি থেকে চলে আসলাম।

বন্ধুরা একসাথে হলে তাদের মধ্যে কি আলাপ হয়, একসাথে সময় কাটাতে কেমন লাগে এইগুলো আমার কোনদিন জানা হয়নি।জানা হয়ত আর হবেনা।

তবে স্কুলে থাকতে আমার মনে হত সবাই আমাকে তেমন পছন্দ করে না।কিন্তু যতদিন গিয়েছে, আমার ধারনা যে ভুল, তা প্রমানিত হয়েছে।দূরে গিয়েও যে তারা আমাকে ভুলে যায়নি বরং শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে তাদের কোন তুলনা হয়না তাই মনে হয়েছে।তাই কলোনি লাইফ ফিরে পেলে ওদের সাথে সময় কাটাতে চাই

১০০ তে আশিও না


আমি নিজেও জানতাম না কখন এত লিখা লিখে ফেলেছি।হয়ত সুজন না বললে কোনদিন জানাই হত না। আতিক ভাইয়ের মত এত লেখার বিষয় আমার মাথায় আসে না। তাই পারিনা।তাছাড়া পেশাগত ব্যস্ততা ত আছেই।আছে আশেপাশের মানুষগুলোর প্রতি দায়িত্ব। নিজের জন্য সময়।এত কিছুর ভীড়ে কখন যে এত গুলো লিখে ফেলেছি বুঝতে পারিনি।

আগে লিখতাম বিভিন্ন স্মৃতি চারন মুলক লিখা।তারপর এল বিশেষ কাউকে নিয়ে লিখা।এরপর ইদানীং ছবি মানে কলোনি র বিভিন্ন ছবি দেখলে মনে পড়ে লিখার বিষয় এর কথা।।

তবে এই লিখা কলোনি আর তার মানুষগুলো র প্রতি ভালবাসা, আন্তরিকতআ আর দায় বদ্ধতা থেকে।

বিদায় বেলা


স্কুলে প্রতিবছর এস এস সি পরীক্ষা যারা দিবেন, সেই ভাই বোন দের বিদায় দেয়া হত। এইজন্য আমাদের ছোটদের কে অল্প টাকা দিতে হত।প্রয়াত হামিদ স্যার ভয় দেখাতেন, যারা টাকা দিবে না, তাদের কে বিদায় দেয়াহবে না।এই ভয়ে আমি প্রতি বার বিদায়ের জন্য নির্ধারিত চাদা দিতাম।

বিদায়ি ভাই বোন দের হাতে ফুল আর উপহার তুলে দিতেন ১০ ম শ্রেনীর ভাই বোনেরা।মনে মনে ভাবতাম আমি কবে ওদের মত বিদায়ি ভাই বোনদের হাতে উপহার তুলে দেব কিংবা তাদের উদ্দেশ্য এ বক্তব্য রাখব। 

কিন্তু আমার সেই চাওয়া অপূর্ণ থেকেই গেছে।আমি বিদায়ী ভাই বোনদের হাতে ফুল বা উপহার তুলে দিতে পারিনি।আবার নিজেও কোন প্রকার বিদায় পাইনি। এ নিয়ে আফসোস হল আসলে এই অনুভুতি গুলো কখনোই আর পাওয়া হবে না। কারন সেই সময় বা বয়স কোনটাই আর নেই

সারাদিন মন ও মেজাজ মোটামুটি ভালো ছিল


সারাদিন মন ও মেজাজ মোটামুটি ভালো ছিল। একটু আগে মনটা খারাপ হয়ে গেছে, যদিও মেজাজ এখনো ঠিক আছে। অথচ মন খারাপ হওয়ার মত কিছু না।

সব জায়গায় তো আর কিছু বলা যায়না, বলার এখতিয়ারও থাকেনা। মনে হয় ইচ্ছা করে এই মনটা খারাপ করে দেয়। ধুর..... (মনে মনে ব্যাচেলর ছবির মারজুক রাসেলের বিখ্যাত একটি স্ল্যাং বললাম)। দেক যার যত ইচ্ছা মন খারাপ করা দেক।" সমুদ্রে পেতেছি শয্যা শিশিরে কি ভয়" অবস্থা আমার। আমার এখন চিল্লাইয়া "হয় যদি বদনাম হোক আরো আমি তো এখন আর নই কারো" গানটা গাইতে ইচ্ছা করতেছে। আচ্ছা গান টা কে গাইছিল, জাফর ইকবাল?
কিছুদিন ধরে জংগলে বসবাস করতে ব্যাপক মন চাইতেছে। নাকি সোজা দক্ষিন দিক মানে সমুদ্রের দিকে হাটা দিমু, এটাও বিবেচনা করতেছি।

লেখাপড়ায় আমি বরাবরই গাধা মার্কা ছিলাম এটা আমার বিভিন্ন লেখায় বিভিন্ন সময় উল্লেখ করেছি


লেখাপড়ায় আমি বরাবরই গাধা মার্কা ছিলাম এটা আমার বিভিন্ন লেখায় বিভিন্ন সময় উল্লেখ করেছি। শুধু লেখাপড়া কেন কোন ব্যাপারেই আমার কোনদিন কোন উচ্চাভিলাষ ছিলোনা।যা পেতাম তাতেই খুশী থাকতাম। যারা আমার ঘনিষ্ঠ ছিলো বা আছে তাদের সবারই জানার কথা এটি।আজ একটু পড়াশোনা নিয়ে আলাপ করি।

লেখাপড়ায় আমাকে অমুকের মত হতে হবে বা তমুক আমার চেয়ে পড়াশোনায় ভালো এগুলা মাথায় কোন দিন আসেনি। আমি আমার মত করে পড়াশোনা করে গেছি।কোন টার্গেট নিয়ে পড়াশোনা করিনি।স্কুলজীবন থেকেই আমি কোনমতে পড়াশোনা চালিয়ে গেছি।মারাত্মক বিপর্যস্ত রেজাল্টও করছি। ক্লাস নাইনে অংকে একবার ডাবল জিরো পাইছিলাম, ক্লাস এইটে ইংরেজীতে ১১ পাইছিলাম।কিন্তু কোন ক্লাসেই ফেল করিনি।এক চান্সেই উপরের ক্লাসে প্রমোশন পাইতাম। এগুলা বলতে আমার কোন দ্বিধা বা সংকোচ নেই।

২৯ এপ্রিল ১৯৯১


মনে হয় একবার কিছুটা স্মৃতি চারন করেছিলাম। তাটপর ও আবার লিখলাম।

সন্ধ্যা হতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, রাত বাড়ার সাথে সাথে বৃষ্টি ও বাতাসের গতি বাড়তে লাগলো।টেলিভিশনে ১০ নাম্বার মহা বিবদ সংকেত ঘোষনা দেওয়া হচ্ছে কোনই কিছুই মনে করিনি,সবাই ভাবছে আগেতো এরকম দিয়েছে।

কিন্তু রাত একটা থেকে হঠাৎ আমাদে ই টাইপ ১২ নাম্বার বিল্ডিং এর সামনে কলোনীর দেয়াল টা পরে যায়,এবং দেয়ালের ঐ পাশ্বে খাল পার রোডে যে বস্তি ছিল তা কোথায় উড়িয়ে নিয়ে গেছে তা বলতে পারবো না।কিছু সময় পর মানুষ চিল্লা চিল্লি করতে লাগলো পানি পানি বলে,আমাদের নিচ তলার লোকমান মামা ও শাহাদত হুজুরদের বাসার সবাই আমাদের বাসায় এক কাপরে চলে আসে, কারন কিছু বোঝার আগেই পানি ২ তলার মাঝামাঝি সিড়িতে চলে আসে,কলোনীর দেয়ালের বাইরের অনেক পরিবার এসে উঠে,তখন সব মানুষ একক হয়ে গিয়েছে।বাচ্চাদের ঘুমাতে দিয়ে মা - চাচীরা পাশে বসে শুধু আল্লাহকে ডাকছিল।আমরা চিন্তা করছিলাম পানি আর বাড়লে কি করবো।আমি ও রোমান মামা আমাদের পিছনের দরজা খুলে ছাদে যাওয়ার পথ করা যায় কিনা দেখছিলাম।আমরা দুজনে মিলেও দরজা বন্ধ করতে কষ্ট হচ্ছিল,কারন বাতাসের গতি খুব বেশী ছিল।ভোরের দিকে বাতাস কমলে ও পানি কমেনি,নিচ তলার কেউ বাসায় যেতে পারছিল না।কারন বাসায় তখন কাদাঁ একাকার।আর লবন পানিতে সব কিছুই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

ভাইগ্নারে তোর কথাই তো ফইলা গেল


ভাইগ্নারে তোর কথাই তো ফইলা গেল, তুই কইছিলি যাদের জন্ম জুন মাসে তারা খালি ক্রাশ খাইবো, জীবন হইব ক্রাশময়,মামারে আমার জন্মতো এই জুন মাসেই।কি ভবিষ্যৎ বানী করলি, সকাল হইতে না হইতেই ক্রাশ খাইয়া গেলাম। অফিসে আসার পথেরে মামা গাড়িতে বইসা বইসা বিরাট এক হিস্টুরি লেখছিলাম, লিখতে লিখতে আংগুল ভোতা কইরা লাইসি। সেই লেখা পোস্ট করতে গিয়া দেখি লেখা তো পোস্ট হয়ই নাই, উলটা লেখাটা কই জানি হারায় গেছে।তোর জুন মাসের প্রভাবে সকাল বেলায় এই ক্রাশ টা খাইলাম রে। আমারে বাঁচা রে মামা। তোর ভবিষ্যৎ বানী চেঞ্জ কর।

আহ মজার আলুর ভর্তা


১৯৯১ সাল ২৯শে এপ্রিল। সকালে স্কুলে ছিল s.s.c. পরীক্ষার্থীদের বিদায়ের অনুষ্ঠান। বিকালে শুনলাম সম্ভবত ৮ নং বিপদ সংকেত। সন্ধার পরেই হয়ে যায় ১০ নং। অল্প অল্প বৃষ্টিও হচ্ছে। তারপর রাতে ঘুম ভাংল মানুষের চিৎকারের শব্দে। ঘুম থেকে উঠে দেখি বিল্ডিংটা জাহাজ হয়ে গেল। পানিতে যেন ভাসছে।আমাদের বিল্ডিংটা ৩ তলা হওয়াতে অন্যান্য বিল্ডিং থেকেও মানুষেরা আসল। সামনে বিল্ডিং এর রিনা আপারাও আসল।প্রচুর বাতাসে দেখি নাবকেল গাছ গুলো নুয়ে পরছে আবার উঠছে। সকাল হলো ভাইয়া চলে গেল খেজুর তলায়। সেখানে আমাদের আত্মিয় থাকে। ওনাদের নিয়ে আসল। ভাইয়া এসে বলল কলোনির বাহিরে রাস্তায় লাশ আর লাশ পরে আছে। বিশ জনের মত মানুষ তখন আমাদের বাসায় থাকল। ১ম কয়দিন ভালোই খেয়েছি। যেহেতু ফ্রিজে মাছ মাংস ছিল। কারেন্ট নাই। তাই ফ্রিজও বন্ধ। ফ্রিজের খাবার শেষ হওয়ার পর শুরু হলো আলু ভর্তা খাওয়া। প্রায় ১মাসের মত আলু ভর্তা খেয়েছি।বাসায় রিনা আপারা ১ সপ্তাহ পর্যন্ত ছিল আর আমাদের আত্মিয়রা ছিল এক মাস। তখন আলু ভর্তা কিযে মজা লাগত। মাছ মংস খাওয়া নিষেধ। ডায়রিয়া হবে বলে। আরমাছ বলে লাশে মুখ দিছে এগুলোর জন্য। তাই আলু ভর্তাই নিরাপদ খাবার ছিল। আর তখন সত্যি আলু ভর্তা খেতে কিযে মজা লাগত। প্রায় এক মাস আলু ভর্তা খেয়েছি তারপরও মজা লাগত।

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss