Wednesday, April 27, 2016

লেখাপড়ায় আমি বরাবরই গাধা মার্কা ছিলাম এটা আমার বিভিন্ন লেখায় বিভিন্ন সময় উল্লেখ করেছি


লেখাপড়ায় আমি বরাবরই গাধা মার্কা ছিলাম এটা আমার বিভিন্ন লেখায় বিভিন্ন সময় উল্লেখ করেছি। শুধু লেখাপড়া কেন কোন ব্যাপারেই আমার কোনদিন কোন উচ্চাভিলাষ ছিলোনা।যা পেতাম তাতেই খুশী থাকতাম। যারা আমার ঘনিষ্ঠ ছিলো বা আছে তাদের সবারই জানার কথা এটি।আজ একটু পড়াশোনা নিয়ে আলাপ করি।

লেখাপড়ায় আমাকে অমুকের মত হতে হবে বা তমুক আমার চেয়ে পড়াশোনায় ভালো এগুলা মাথায় কোন দিন আসেনি। আমি আমার মত করে পড়াশোনা করে গেছি।কোন টার্গেট নিয়ে পড়াশোনা করিনি।স্কুলজীবন থেকেই আমি কোনমতে পড়াশোনা চালিয়ে গেছি।মারাত্মক বিপর্যস্ত রেজাল্টও করছি। ক্লাস নাইনে অংকে একবার ডাবল জিরো পাইছিলাম, ক্লাস এইটে ইংরেজীতে ১১ পাইছিলাম।কিন্তু কোন ক্লাসেই ফেল করিনি।এক চান্সেই উপরের ক্লাসে প্রমোশন পাইতাম। এগুলা বলতে আমার কোন দ্বিধা বা সংকোচ নেই।


মেট্রিক পরীক্ষার দুদিন আগে ২৯ শে এপ্রিলের ঝড় আর জলোস্বাচ্ছে বইপত্র সহ বাসার সব মালামাল বিধ্বস্ত, সবকিছু নতুন করে সাজিয়ে নিয়ে জীবন আবার শুরু,দু মাস পরে পরীক্ষা শুরু দিনে দুবেলা পরীক্ষা, পাঁচটি পরীক্ষা হওয়ার পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারনে পরীক্ষা বাতিল, শিক্ষা জীবন এক অনিশ্চয়তায়, দু মাস পর আবার পরীক্ষা দিলাম, রেজাল্ট যা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।জীবনে বসন্তও চলছে। আর এভাবে তাইরে নাইরে করতে করতে ইন্টারমিডিয়েট শেষ করলাম।বি,কম পরীক্ষা সামনে অথচ কোন প্রস্ততি নেই। সারা বছর হান্ডু হান্ডু করে কাটিয়ে দিলাম।তার উপর পরীক্ষার আগে আগে ব্যক্তিগত এক সমস্যায় আমি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। তখন আমি জামশেদ ভাই এর কাছে প্রাইভেট পড়তাম, উনি আমার অবস্থা দেখেে আমার বাসায় এসে বলে গেলেন আমার দ্বারা পাস করা সম্ভব নয়। জামশেদ ভাই েএর কথায় মনে জেদ চাপলো। প্রচুর পরিশ্রম করলাম এ পরীক্ষার সময়। সারাদিন সারারাত পড়াশোনা করেছি পরীক্ষার সময়।রেজাল্ট হচ্ছে জামশেদ ভাই এর সব ছাত্র দের মাঝে আমিই সবচেয়ে ভালো করলাম।

মাস্টার্স পড়া অবস্থায় আমার চাকুরী হয়ে গেলো ঢাকায়। পরীক্ষার সময় ঢাকা থেকে সারাদিন অফিস করে রাতের ট্রেনে চিটাগাং এসে পরীক্ষা দিয়ে আবার রাতের ট্রেনে ঢাকায়। পুরা পরীক্ষার সময় টা এভাবে ঢাকা চিটাগাং করতে হয়েছে।ফলাফল হচ্ছে আমার মেট্রিক থেকে মাস্টার্স সব গুলো পরীক্ষার মাঝে সবচেয়ে বেশি এভারেজ নাম্বার পেয়ে ২য় শ্রেণীতে মাস্টার্স পাশ করলাম। অবশ্য আমার প্রতিটি পরীক্ষার রেজাল্টই ছিলো ২য় বিভাগ/শ্রেনীর।

সাধারনত স্কুলে র টিচার রা ভালো ছাত্রদের খুব ভালোবাসেন ,স্নেহ করেন। কিন্তু আমার মত গাধা মার্কা থার্ড বেঞ্চের স্টুডেন্ট স্যারদের যে স্নেহ ভালোবাসা পেয়েছি তা অনেক ভালো ছাত্রও পায়নি এ কথা আমি বুক ফুলিযে গর্ব করে বলতে পারি।

এই সেদিনও আমাদের শ্রদ্ধেয় অবিনাশ স্যার ফোন করে আমাকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এ স্নেহ, ভালোবাসা ,সম্মান আমি কোথায় রাখি ?

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss