Thursday, April 14, 2016

আবহমান কালের মানুষ


১৯৯১ সালের ২৯ শে এপ্রিল। সম্ভবত রাত ১ টা কি দেড় টা। আমার ঘুম ভেঙে গেল।দেখি আমাদের বাসায় নিচতলার সব মানুষ।বুঝতে সময় লাগল। উঠে দেখি পানিতে সব ভেসে যাচ্ছে। খোয়াড়ে হাস মুরগির চিতকার। বের হতে পারছেনা।এমন সময় মানিক ভাই বলে উঠলেন, খালাম্মা, দরজা খুলে দেই যাতে মুরগি গুলো বের হয়ে বেচে যেতে পারে।আম্মা নিষেধ করলেন।সেদিন বুঝলাম, পশুপাখি দের প্রতি উনার কি টান।শুধু পশুপাখি না বাচ্চাদের প্রতিও ছিল উনার প্রগাঢ় স্নেহ। তাদের সাথে গল্প করতে,গল্প বলতে, ভুল করলে শাসন করতে উনি খুব পছন্দ করতেন।

কাউকে ভালবাসি বলে ফেলা যত সহজ, সারাজীবন এর জন্য তার দায়িত্ব নেয়া তত সহজ নয়।কিশোর কুমার নাকি তার ভালবাসার মানুষকে রাস্তায় রেখে আসতেন না,বাসায় নিয়ে আসতেন।মানিক ভাইও তাই।তিনি শুধু মুন্নি আপাকে ভালবাসেন নি সাথে সারাজীবন এর জন্য তার দায়িত্ব নেবার দুঃসাহস দেখিয়েছেন,যা সবাই পারেনা। 

যেখানে সবাই বিশেষ দিন গুলোতে পরিবার নিয়ে আনন্দ করে


যেখানে সবাই বিশেষ দিন গুলোতে পরিবার নিয়ে আনন্দ করে,সেখানে আমার মত কিছু মানুষ ছুটে চলে অন্যদের আনন্দ গুলোকে সুন্দর করতে। ছুটে যায় এখান থেকে ওখানে। কেউ করে দেশের জন্য,কেউ পরিবারের জন্য। কিন্তু মনটানা মাঝে মাঝে অবুঝের মত কাঁদতে থাকে নিরবে। যা শুধু সে নিজে বুঝে, আর কেউ না।আজ সকাল থেকে বাহিরে,দুপুরে খাবার টাও একসাথে খেতে পারলাম না। আর এখন যাচ্ছি কুমিল্লা। আসব কাল রাতে। সবার দোয়া কামনা করি,যেন ভালভাবে ফিরে আসি।

সারাদিন কি আমাদের ঘরের কাজ করতে হইবো


সারাদিন কি আমাদের ঘরের কাজ করতে হইবো।আমাগো কোন শখ আললাদ নাই।আমরার কি নববর্ষের একটু মজা করতে ইচছা করে না।আপনারা কি কন।দেখলাম ভাইয়েরা কত মজা করতাছে,আর আমরা খালি চুলা ঠেলতাচি।কে কি খাইবো,কারে,কি দিমু।বিকালের নাসতা কি,দুপুরে,রাতে কি খাইবো আর পারি না।মন চায় কোন খানে পালায় যাই।আবার চিনতা করি জামো কই।আজকের কথাই ধরেন সকালে উঠে তিন রকমের ভতা,দুইরকমের মাছ ভাজি দি পানতা খাইবো।এরপর দুপুরে দশ বারো রকমের সবজি রাননা,লইটটা মাছ ঝোল,আবার ফ্রাই,মাছের দু পেয়াজা,বেগুন ভাজী,দেশি মরগির রেজালা এতো কাজ করতে করতে আর fb তে ঢুকতে পারিনি,কে কোথায় কি মজা করতাছে একটু দেখতে ও পারিনি।ঐ দিকে বন্যা আপা আবার ইলিশ চাইচে সব ভাইগো কাছে এডাও অনেক পরে দেখচি।একটুও শান্তি নাই খালি কাজ আর কাজ কই যাই কনতো।।।

মধুসুদনের বিদেশ যাত্রা (ফুল অ্যান্ড ফাইনাল)


হাটতে হাটতে খিলগাঁও চলে গেল সে । সেখানে এক হুজুরের সাথে পরিচয় হল । হুজুর বলেছে তাকে বিদেশ পৌঁছে দিবে । কিন্তু হুজুরের সাথে ১ ঘণ্টা না কাটাতেই পুলিশ তাদের দু জনকে ধাওয়া করল । কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা ধরাও পরে গেল। কাহিনি হল হুজুর ‘মুখলিশ’ জঙ্গি সংগঠনের সহকারী প্রধান । মধুসুদনের বুঝতে বাকি রইলো না হুজুর তাকে সিরিয়ায় জিহাদে পাঠাতে চেয়েছিল । দু'দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ আর হাল্কা পাতলা লাঠির আদ রে মধুসুদনের জান যায় জান যায় অবস্থ্যা ।এবার নিজেকে বাচানোর জন্য পুরুষত্বের বাহন দেখানো ছাড়া আর কোন পথ রইল না । তাকে ছেড়ে দেয়া হল । কারাগার থেকে বের হয়েই সে সোজা গ্রামে চলে গেল । বিয়ে যদি হয় খারাপ কি ? অন্তত বিদেশ যেতে গিয়ে পুলিশের দাবড়ানি খাওয়ার চেয়ে । ছোটোবেলা থেকে জেনে আসা শত্রুর প্রতিশোধ নেয়াও হবে ।
(সমাপ্ত)

আমার ছেলের আরবী পড়ানোর শিক্ষক মোটামুটি আধুনিক মন মানসিকতার


আমার ছেলের আরবী পড়ানোর শিক্ষক মোটামুটি আধুনিক মন মানসিকতার। ফেসবুক ইউজ করে ভাইবার, ইমো সবই আছে। নিয়মিত ক্রিকেট খেলার খোঁজখবর রাখে। আমাদের এলাকার মসজিদের খাদেম। বয়সে আমার অনেক জুনিয়ার। নাম রাসেল।

অন্যন্য দিনের মত আজ সকালে ছেলেকে পড়াতে এসেছে। হুজুর কে নাস্তা দিতে গিয়ে শুনি সে আজ নফল রোজা রেখেছে। জিজ্ঞাসা করতেই জানলাম বাংলা নববর্ষে সবার কল্যান কামনায় তার এই নফল রোজা।

আমি নিজে ব্যক্তিগত ভাবে তেমন ধর্মকর্ম পালন করিনা, কিন্তু নববর্ষের অনেক ডামাডোলের কৃত্রিম কল্যান কামনার ভিড়ে, নববর্ষে সবার জন্য নীরব কল্যান কামনা করার হুজুরের এই পদ্ধতি টি খুবই ভালো লেগেছে।

মধুসুদনের বিদেশ যাত্রা (পার্ট -২)


ভোর রাত্রেই পালালো মধুসুদন । সেই সম্ভবত জগতের প্রথম বর যে নিজের বিয়ের আগে পালাচ্ছে । পকেটে কিছু টাকা আছে তাই কোন সমস্যা নেই । সোজা ঢাকা চলে এসেই হোটেলে উঠলো মধুসুদন । কিন্তু ভোর রাত্রেই রেড পড়ল হোটেলে । দ্বিতীয় বারের মত আবার পালাতে হল তাকে । ব্যাগ ট্যাগ রেখেই পালানোতে এই যাত্রায় মধুসুদনের চোখে শুধু অন্ধকার । পকেটে টাকা নেই,মনে শান্তি নেই । কেমন করে দিনটাও কেটে গেল । কমলাপুর রেলষ্টেশনে রাত পার করার প্ল্যান নিয়েই কোন মতে সেখানে পৌঁছেও গেল সে । কিন্তু রাত্রে ঘুমানোর পর শুরু হয়ে গেল গোলাগুলি । চোখ খুলেই দেখল একটা লাশ পড়ে আছে । কিছু করার নেই,সবাই পালাচ্ছে । তারও পালানো লাগলো । পৃথিবী ব্যাপী সব গ্যাঞ্জাম তাকেই ঘিরে হয় নাকি ? সবাই ঘুমাচ্ছে আর সে দৌড়াচ্ছে আর দৌড়াচ্ছে………..
(চলিবে )

মধুসুদনের বিদেশ যাত্রা (পার্ট -১ )


মধুসুদনের ছোটোবেলা থেকেই ইচ্ছা বিদেশ ভ্রমনের । কৈশোরে পা দিতেই বিষয়টা আরও মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো । এইবার তার বিদেশ যাত্রা ঠেকায় কে ? বিষয়টা এরই মধ্যে তার বাবার কানেও পৌঁছে গেল । এরপর তাকে ঘরে বেধে রাখার জন্য বিয়ে ছাড়া অন্য কোন পথ দেখলেন না পিতামশাই । কিন্তু মদুসুদন কি কম নাকি? সে দাবি করে বসলো রজকিনীকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবে না । পিতামশাই রাজি হলেন । মধুসুদন মনে মনে খুশি । কারণ ছোটোবেলা থেকেই রজকিনির সাথে মধুসুদনের দা-কুমড়া সম্পর্ক । রজকিনির রাজি হবার কোন আশা নাই । রাতে বাসায় ফিরেই মধুসুদন তো পুরাই থ । আগামী সপ্তাহে রজকিনির সাথে মধুসুদনের বিয়ে । রাতে ঘুম আসে না । মধুসুদনের একটাই দুঃখ ...চাইলাম জল,পাইলাম শরবত ।
(চলিবে)

আজ (১৩.৪.১৬) আমার অফিসে মামুন এসেছিল


আজ (১৩.৪.১৬) আমার অফিসে মামুন এসেছিল, আসলেই সে যোগ্য প্রচার মন্ত্রী, চিটাগাং থেকে আমাদের গ্রান্ড আড্ডা র সিডি নিয়ে এসেছে। সারারাত জার্নি করে ভোরে তার ফ্যামিলি কে কেরানিগঞ্জ রেখে আবার মোহাম্মদপুর থেকে কাজি ও বনানি থেকে রেজা ভাইকে নিয়ে আমার অফিসে। এই গরমে আর ঢাকা শহরের যানজটে এভাবে দৌড়াদৌড়ি আর যাই হোক আমার পক্ষে অসম্ভব। থ্যানক্স মামুন। 

গ্রান্ড আড্ডা র সিডি আমার কাছে আছে। আমি এটি সেভ করে রেখেছি। কারো প্রয়োজন লাগলে আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি দেয়ার চেষ্টা করব।

গরম ভালোই পড়েছে


গরম ভালোই পড়েছে, সাথে গরমের প্রভাবটা, সবার মনে, মারাত্মক আকার ধারন করেছে। সামান্য কথাতেই কোর্ট কাছারি বসে যাচ্ছে। সকালে বাসায় বললাম, অল্প কয়টা টাকা দেও, পকেট খালি, উনি ছ্যাত করে উঠলেন! তুমি টাকা দিয়ে কি করবে? ঘরে চুপচাপ বসে থাকো! পেজের ভাই বোন গুলিও খুব গরম। যে, যেভাবে পারছে, সে ভাবেই ঝারতেছে! হাতের কাছে গোলা বারুদ থাকলে, মনে হয়, এতক্ষনে দুই/চারটা হাসপাতালে ভর্তি হতো! কেও ইলিশ খাবে, কেও খাবেনা, কেও সাজু/গুজু করে বেড় হবে, কেও বলবে, খবরদার, এই সব করা যাবেনা! আল্লাহ, কোন দিকে যামু? মেয়েকে নিয়ে একটু বের হবো, মেয়ের অংকের মাস্টার এসে হাজির! মাস্টার আরো এক কাঠি সরেস! কট্টরপন্থী! সারাফ সোনা, বাইরে যেতে হবেনা, বাইরে খামাকা ধুলা/বালি খাওয়ার মানে হয়না! মেয়ে আমার ছল ছল চোখে, আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়ের মা খুশি! আমি ভয়ে ভয়ে মাস্টোর কে বললাম, বস, আজ কে একটু অল্প পড়িয়ে, ছুটি দিয়ে দেন। আমি আর সারাফ, সন্ধ্যায় একটু গান সুনতে যাবো। চরম বিরক্তি নিয়ে, মাস্টোর বললো, দিচ্ছি ছুটি, তবে এটা ঠিক না! মাস্টোর মানুষ কিছু বললাম না, আরে বেটা আজকে হলো, বাংলা নববর্ষ। আমরা হলাম বাংলা ভাষা ভাষি মানুষ। আমাদের নতুন বছরের শুরু, আমরা তো একটু আনন্দ করবোই। 

উৎসব ভাতা বৈশাখ ১৪২৩


উৎসব ভাতা, আনন্দের বার্তা তাই না!!!!
সরকার কিছু একটা ঘোষনা দেয় আর আমাদের ১৩টা বাজে। আচ্ছা বলতে পারো সারা দেশে কতো জন সরকারী কর্মচারী!!!!? সরকার কি পারেনা সব প্রতিষ্ঠানকে সরকারী সিডিউল মেনটেইন করাতে। যারা পারবেনা তাদের আলাধা অডিটের ব্যবস্থা রাখলে আরো ভালো হতো।
সত্যি কথা বলতে কি, আমরা না পারি তাল মিলাতে আবার না পারি ছাড়তে।
রিতীমতো জীবন জীবিকার যাতাকলে পিষ্ঠ হয়ে পেষ্ট হয়ে আছি।
তারপরও আমরা আশাবাদী, সকলের জন্য রইলো শুভ নববর্ষ.... ভালো থাকবেন সবাই আগামীতে...