Monday, April 11, 2016

মুখ চেনা সেই মানুষ গুলো


জীবিকা নির্বাহের জন্য কিছু মানুষের পদচারনা ছিলো সি এস এম কলোনীতে। কারো ছিলো নিরব পদচারনা কেউ করতো হাকডাক। হাকডাক ওয়ালা জীবিকা নির্বাহী সেই কাগজের ফেরী ওয়ালার সুর করা এই কাগেএএএএএজ পুরানো বই খাতা পেপার বিক্রির কাগেএএএএএজ হাকটি আজো কানে বাজে। জুতা সেলাই করা সেই মুচির এই সেলাইইইই, কটকটি ওয়ালার টুংটুংগীর শব্দ কিম্বা মিল্ক ভিটার ভ্যানের প্যা পু প্যা পু শব্দ গুলি ছিলো কলোনী বাসীর কাছে পরিচিত শব্দ এই মুখ গুলো ছিলো চেনা মুখ।

আজকে যাইতাসি বাপের বাড়ি


,পোলার Exam শেষ কি মজ।ষটীলমিলস যাওয়ার কথা মনে হলে আমার আর রাতে ঘুম হয়না অথচ আমার বাসা থেকে ষটীলমিলের জেতে মাএ দইশ টাকা গাড়ি ভাড়া।৪৫ মিনিটে বাসায় চলে যাই।বড় ভাই,ভাবী,ছোট ভাইবোনরা খালি কখন জুবায়েরর examশেষ হবে এদিন গনে।আজকে আমাদের বাসায় সবাই অনেক খুশি কারন আমি জাব।অনেক দিন পরে যাচছি।ষটীল বাজার,মুনবেকারির পরোটা আরও কত কি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।আললাহ হাফেজ।

অতিথি


যেখানে সীমান্ত তোমার সেখানে বসন্ত আমার
ভালোবাসা হৃদয়ে নিয়ে আমি বারেবার আসি ফিরে ডাকি তোমায় কাছে..........
বাস ফেনীর মহিপাল ক্রস করার পর এই গানটা ক্যাসেটে বাজতে লাগলো। এমনিতে আবেগ আপ্লুত হয়ে ছিলাম এই গান বাজতে শুরু করায় আবেগ নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে গেলো দুই চোখ বেয়ে পানি পড়তে শুরু করলো নিরবে। এটাকে কান্না বলে না। আবেগে চোখ বেয়ে এভাবে পানি পড়াকে কি বলে আমার জানা নাই। 

সি এস এম কলোনী ছেড়ে নাটোরে চলে এসেছি একমাস আগে ১৯৯৮ সালের ৪ ঠা মার্চ। কলোনী ছেড়ে চলে আসার পর এই প্রথম আবার কলোনীতে যাচ্ছি তাই এতো বাধ ভাংগা আবেগ।বাস যতই চট্টগ্রামের কাছাকাছি পৌছাচ্ছে আমার আবেগ ততই বেড়ে চলেছে। শীতাকুন্ড পার হয়ে এসেছি। আর কিছুক্ষনের মধ্যেই চট্টগ্রাম শহরে পা রাখবো। চিন্তা করছি নেমে প্রথমে কোথায় যাবো রাত তখন বাজে দশটা তাই সিদ্ধান্ত নিলাম এতো রাতে আর কলোনীতে যাবো না। বৌ বাজার পানির কলে বন্ধু ডালিমদের বাসা তাই দেওয়ানহাটে বাস থেকে নেমে ওদের বাসায় গেলাম। মাত্র একমাস আগেই চিটাগাং থেকে বিদায় নিয়েছি কিন্তু ওদের বাসার সবার ব্যবহারে মনে হলো কয়েক যুগ পর পরিবারের কোনো সদস্যের সাথে দেখা। রাতের বেশীর ভাগ সময় কাটলো ডালিমের সাথে গল্প করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে আমার আর তর সয় না কখন পৌছাবো কলোনীতে। সকাল দশটার দিকে ডালিমকে সাথে নিয়ে রওনা হলাম বেবী ট্যাক্সি চড়ে। পরিচিত শহরটাকে দেখতে দেখতে পৌছে গেলাম চিরচেনা স্টীলমিলস বাজারে। ট্যাক্সি থেকে বাজারেই নামলাম। ভাই ভাই বেকারি তে দেখা বন্ধু সিরাজের সাথে আরো অনেক পরিচিত মানুষের সাথে। বাজার গেট দিয়ে কলোনীতে ঢুকতেই লেখাটা চোখে পড়লো " থামুন, আপনার পরিচয় দিন"। বুকের ভিতর কেমন যেনো করে উঠলো কি পরিচয়ে আমি কলোনীতে প্রবেশ করছি? জন্ম থেকে বেড়ে উঠা এই কলোনীর সাথে আমার সম্পর্ক টা এখন কি? আমিতো আর এই কলোনীর বাসিন্দা নই। জন্ম, বেড়ে উঠা, হাসি আনন্দের হাজারো স্মৃতি বিজড়িত এই কলোনীতে আমি এখন অতিথি। 

কলোনীতে থাকতে সব সময় বাপের কাছে নালিশ আসতো আমার নামে


কলোনীতে থাকতে সব সময় বাপের কাছে নালিশ আসতো আমার নামে, বাপটা খুবই ভালো বলে আমাকে মারতো না, সব সময় বুঝাইতো আব্বা কারো মনে ব্যাথা দিয়োনা,কেউ যেন তোমার জন্য আমাকে কিছু বলতে না পারে,নিজের সন্মান রেখ আমার টা ও রেখ,কে শুনে কার কথা এই কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে ধোয়ার মতো বের করে দিতাম,প্রতিদিন না হলে সপ্তাহে একদিন হলেও নালিশ আসতো,বাবা তো বিরত্ত হয়ে বহু কিছু করলো আমার জন্য তা আশা করি সবাই অবগত আছেন,আর কলোনীতে যাদের কে জালাতন করতাম তারা তো জলতো আশাপাশের সবাইকে জালিয়ে রাখতো এই ছেলে ভালো না আমুকের এই ছেলের জন্য আমার ছেলেটাও খারাপ হয়ে যাচেছ,আমি সবসময় জানতাম কলোনীর তে ছোট বড় সবাই আমাকে টেরা চোখে দেখতো,এই ভাবে কলোনী জীবন পার করে এসেছি,কলোনীতে যে দাগ গুলি রেখে এসেছি মানুষের মনে তা সবাই আজীবন মনে রাখবে সযত্মে,দুই যুগ এর কাছি কাছি পর পেইজ এর মাধ্যমে সবাই আবার একসাথে হয়েছি,প্রথম প্রথম খালি দেখতাম কে কি লিখে কোনো আওয়াজ করতাম উকি ঝুকি মারতাম,না দেখলাম কলোনী আগের মতোই আছে যাই কলোনীতে ডু মেরে আবার আগের মতো ফাজলামি করে আসি,আগেও ডেমকেয়ার ভাবে চলতাম, এখন ও ডেমকেয়ার ভাবে চলি,পাথক্য তখন সাথে বহু সঙী ছিল এখন একলা সব মোকাবেলা করতে হবে,কলোনীতে ভুলেও জন্মদিন পালন হতোনা মায়ের জন্য,মা আবার ধমে কড়া,কিন্তুু পেইজে আসার পর দেখলাম Mohammad Nazrulটিংকা ওরফে টিংকু Aslamuddin Mamun মামুন্না ওরফে মামুন সবার জন্মদিন এর ব্যাপারটা সবাইকে জানিয়ে দিচেছ বহুত বহুত ভালো লাগতো কিন্তুু কেউ কে আমি জন্মদিনে কমেনট করতাম না বেশি হলে লাইক দিতাম কারণ জন্মদিন টা আমাদের ফ্যামিলিতে চল না আমিও বিভিন্ন বই পড়ে জানতে পারলাম এটা মুসলমান দের জন্য উচিত না,গতকাল আমার জন্মদিন গেলো মনে করছি কি আর হবে গতানুতিক ভাবে মামুন হয়তো আমার জন্মদিন টা সবাইকে জানিয়ে দিবে কেহ দেখবে তো কেউ দেখবে না, আজ জন্মেছি না তাই আজ বেশি সময় দিতে পারি নাই কলোনীর এবংআমার জগতের বিভিন্নজনের ফোন করে ধরতে পারি না এই জন্য হাত জোড় করলাম,রাতে পেইজে টাইম লাইনে ডুকে তো অবাক নিয়মবহিভুত ভাবে আমাকে Atiq Csmআমার দোস্ত Ahsanul Tariqueআমার গুড়া কালে সঙী,আর যতারীতি মামুন, টিংকু ও দেখি আমার জন্মদিনের বাতা চারিদিকে আযান দিয়া প্রচার করতাছে,আর এই আওয়াজ শুনে কলোনীতে সকলে আবার সজাগ হলো জানি না কলোনীতে কে কি মনে করতো আমাকে দেখলে তা তো আগে বলে দিয়াছি,তো এবার ও মনে করছিলাম সবাই আমার জন্ম দেইখখা আবার টেনশন করে লো হাই প্রেশার হয়ে যাবে আমার ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো এবার কলোনীতে এসে,এতো এতো মানুষ আমার জন্মকে সাগতম জানালো সত্যি আমি পুরাই তাসকি খাইলাম বুঝলাম এরই নাম ভালোবাসা, দীঘজীবি হউক কলোনীর সকলের ভালোবাসা সকলের জন্য,(ধন্যপাতা জানিয়ে কারো হাত ঘ্র্যাণ করতে চাই না আল্লাহ যেন আমারে সামনের বছর আবার আরো নতুন করে জন্মায়)

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss