প্রথমেই টলির প্রতি কৃতজ্ঞতা;আমার বাবাকে নিয়ে চমৎকার একটা স্মৃতি চারনের জন্য।
সেই সাথে প্রয়াত পিতার প্রতি শ্রধ্যা জানিয়ে তাকে নিয়ে নিজের কিছু স্মৃতিগাথা :
১. তখন আমি থ্রিতে পড়ি । বাবা-ই আমার পড়াশুনার তদারকি করেন। একদিন " আমার পোষা পাখী " বিষয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে একটা রচনা লিখতে বললেন। আমি খুশি মনে যথাসময়ে তা লিখে জমা দিলাম। বাবা পুরাটা পড়ে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন।
কিছুখখন এভাবে থেকে যখন মুখোমুখি হলাম তখন দেখি বাবার চোখ ছলছল। শুধু বললেন " খুব সুন্দর হয়েছে তবে 'পাখী' বানানটা একজায়গায় ভুল হয়েছে। ওটা ভুল করা ঠিক হয়নি "
২. ১৯৭৭ সালে স্টীল মিলে HSC / BSc পাশ কিছু জুনিয়র / সিনিয়র অপারেটর নিয়োগ হবে। বন্ধু বান্ধব সবাই দরখাস্ত করলো। আমিও করতে চাইলাম কিন্ত বাবা বাধ সাধলেন।
সাত ভাই-বোনের টানাটানির সংসার, আমি চাকরি করলে সংসারে কিছুটা হলেও সাছছন্দ আসবে -যুক্তি দেখালাম।মাকে দিয়ে সুপারিশ করালাম। তিনি কিছুতেই রাজী হলেন না। শুধু মাকে বললেন -
" আল্লাহ চায়তো ও অপারেটর না, ইঞ্জিনিয়ার হবে। "
৩. ইঞ্জিনিয়ারিং এর রেজাল্ট হলো। আব্বা আমাকে লাভ লেনে তবলীগের মারকাজ মসজিদে নিয়ে গেলেন। সেখানে দিল্লী থেকে এক মুরব্বী এসেছেন,তার দোয়া নিতে। মুরব্বী আমাকে দোয়া করলেন আর গায়ে হাত বুলিয়ে বললেন-
" মাশাল্লাহ! ফোরমানকা ল্যাড়কা ইঞ্জিনয়ার বন গিয়া"
আব্বা মুখে প্রশান্তির হাসি নিয়ে বললেন-
" আলহামদুলিল্লাহ "
এই হলো আমার বাবা। (যাকে আমরা আব্বা বলেই ডাকতাম) যার অপরিসীম ত্যাগ আর দোয়ার বরকতে আজ আমরা সব ভাইবোন গুলো এ পরযায়ে আসতে পেরছি।
" আব্বা,তুমি যেখানে আছ,ভালো থেকো,শান্তিতে থেকো। "-- মহান আল্লাহ পাকের কাছে - এটুকুনই আমাদের প্রাথনা ।
পুনশ্চ :' পাখি' বানানটা তখন 'পাখী' হিসাবে লেখা হতো। আমি 'পাখি' লিখে ভুল করেছিলাম।i
No comments:
Post a Comment