মোমিন চাচাকে আমি প্রথম দেখি নাজমুল ভাইদের তিনতলায় আসার পর। পুশন তখন অনেক ছোট।ওর নাম প্রথমে নাকি ছিল পূজা।পরে বদলে পুশন রাখা হয়।খুব স্মার্ট ছিলেন।আর চাচী ছিলেন খুব শান্ত। এর অনেকদিন পর উনারা আবার এলেন c1 এর তিন তলায়। ততদিনে প্রিন্স এর জন্ম হয়েছে। চাচা বাচ্চাদের খুব ভালবাসতেন। কলোনি র ছোট ছোট বাচ্চাগুলোকে নিয়ে ঘুরতেন। ওনারা যে বিল্ডিং এ থাকতেন, তার সামনে বসার জন্য কয়েকটা পাকা বেঞ্চ তৈরি করে দিয়েছিলেন যাতে গল্প করার জন্য বসা যায়। চাচা বলেছিলেন, দোলনা করে দিবেন কিন্তু পরে কতৃপক্ষ অনুমতি না দেয়ায় আর দোলনা আসেনি। বিকেল বেলায় চাচা অফিস থেকে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরে আসলেও প্রান খোলা হাসি লেগেই থাকত। একবার বেশ কয়েকটা বাচ্চা নিয়ে রিকশা করে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে চাচা এক্সিডেন্ট করলেন। অফিসার্স ক্লাবে কোন অনুষ্ঠান হলে সেটা কত টা সুন্দর করে করা যায় তাতে চাচা অগ্রনী ভূমিকা পালন করতেন।এসব ব্যাপারে চাচীর মনে হয় নিরব মানসিক সাপোর্ট ছিল। তাই হাজারো ব্যস্ততার মাঝে চাচা এই কাজগুলো করতেন।আমি কখনো চাচী কে কথা বলতে শুনিনি। শুধু গান গাইতে শুনেছি। পয়লা বৈশাখ আসার আগে চাচী র রেওয়াজ করতেন।পুশন কে সামনে বসিয়ে। মোমিন চাচাকে আমার খুব রোমান্টিক মানুষ মনে হত।একবার কলোনি থেকে আসার পর টিভিতে চাচা চাচী কে দেখাচ্ছিল। উনারা রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছেন।
এর অনেক বছর পর চাচা কে দেখলাম কে ইপি জেড এর গেস্ট হাউজে। সময় গড়ালেও চাচার আন্তরিকতায় এতটুকু ভাটা পড়েনি।বরং তা আরো বেড়েছে। এরকম সুন্দর আর ভাল মনের মানুষ সুস্থ ভাবে বেচে থাকেন আরো অনেক বছর, যাতে করে আমরা ভাবতে পারি, যান্ত্রিকতা আমাদের সবকিছু তে প্রভাব ফেললেও আন্তরিকতাটুকু কেড়ে নিতে পারেনি।

No comments:
Post a Comment