Saturday, September 12, 2015

ডাবে অরুচি অতপর


তত দিনে আমাদের ডাব গাছের প্রতি আগ্রহ প্রায় শূণ্যের কোঠায়। কেননা ডাব অপরশেনে ঝুকি বেশী। এর মধ্যে কয়েকবার ধরা খাই খাই করেও কোন মতে বেঁচে গেছি। তবে “ডাব অপারেশন পুকুর পাড়” এ মিশনে একেবারে লেজে গোবরে অবস্থা হয়ে ছিল। সেটাই বলি---এক বিকেলে আমাদের "বেশামাল লুঙ্গি গ্রুপে"র আনাড়ি সদস্য জসিম(ইঞ্জিনিয়ার),রতন আরো কে কে যেন ছিল মনে করতে পারছিনা এসে বললো পুকুর পাড়ের একটা গাছে বেশ ভাল ডাব হয়েছে। ওমনি আমার চোরা মন নেচে উঠলো। ওদেরকে আনাড়ি বললাম এ কারনে আমাদের দলের দক্ষ/পাকা চোর বাপ্পি,ফারুক,হরুন,মোজাম্মেল,জামশেদ ওরা কেউ ছিল না। যাক নামাজের নাম দিয়ে বাদ এশা অপারেশনে নেমে পরলাম। দলের মধ্যে আমি একমাত্র গেছো বান্দর/হনুমান।ওরা গাছ দেখিয়ে দিল আমি তড়িৎ তিন লাফে গাছের আগায়।ডাব ছিড়ছি নিচে ফেলছি। আনাড়ি গুলি সব ক্যাচ মিস করলো।ফলাফল ধুম ধুম আওয়াজ। আমি তখনো মনের আনন্দে ডাব ছিড়ে যাচ্ছি। হঠাৎ জসিম চাপা গলায় বললো—‘ওই লোক আসতেছে’। বলেই ওরা উধাও। আমি নামার পায়তারা করতে করতে গাছ তলায় লোক হাজির।তখনো আমার হাতে একটা ডাব। সিন্ধান্ত নিলাম এ লোকের মাথায় ডাব মেরে ভাগবো।যেই ডাব ছুড়বো একি! এতো জামশেদের আব্বা !! সর্বনাশ! গাছ তাহলে জামশেদের। চোরের ঘরে চুরি !! ডাবসহ আস্তে মগডালে পাতার আড়ালে লুকালাম। এরমধ্যে মসজিদের কোনা থেকে গার্ড আংকেল হাজির। গার্ড আর জামশেদের আব্বা উপরের দিকে তাকিয়ে আমাকে খুজে বের করার আপ্রান চেষ্টা করছে আর বিশাল আকারের ‘নেমে আয়’ বলে হুংকার দিচ্ছে। আমি নিশ্চিত আমাকে তারা দেখেনি। ভুঁয়া চিল্লাচ্ছে। হঠাৎ চাচা চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো----‘পেয়েছি, নেমে আয় তোর গায়ে হলুদ গেঞ্জি আমি দেখছি’। আমি তখন কট হয়ে যাওয়া চোর কারন আমার গায়ে হলুদ গেঞ্জি! লুঙ্গি গোজ/কাছা মারা।


দ্রুত সিন্ধান্ত নিলাম লোকজন আরো আসার আগে নেমে যাবো।বুদ্ধি করে অন্ধকার দিকে গা আড়াল করে নামতে থাকলাম। চাচা আমার মুখ দেখার জন্য চেষ্টা করছেন। আমি বিপরিত দিকে মুখ লুকাচ্ছি। গাছের মাঝ বরাবর আসার পর সোজা চাচার সামনে ধুম করে লাফ দিয়ে পড়লাম। চাচা আকস্মিক ঘটনায় ভয় পেয়ে পিছন দিকে তিন লাফ আমিও ঝেড়ে ই-টাইপ কোয়াটারের দিকে দৌড়। গার্ড আংকেল ভারি বুটের আওয়াজ তুলে ধর ধর করে পিছু নিলো। পুকুরের কোনায় আসতে আসতে লুঙ্গি বিট্রে করে নিচে নামা ধরলো দু’হাত লুঙ্গী বুকে তুলে এক দৌড়ে বড় মাঠের অন্ধকার কোনায়। সেখানে সোনার চাঁদদের এক চোট নিয়ে বললাম –‘আমার সেন্ডল কই’ ?

“আনি নাই”-----তাদের জবাব। 
আরেক চোট ওদের ধূনে দুরু দুরু বুকে বাসায় ফিরলাম। রলিভাই দরজা খুলে দিল। দেখি বারান্দায় আমার ফেলে আসা সেন্ডল(!) আব্বা তখনো নামাজের জায়নামাজে। “নামাজের নাম দিয়া কই গেছিলি? জামশেদের আব্বা আসছিল। যাও দিবোনে”। আহা তারপর যা দিল না! এক্কেবারে সমগ্র বাংলাদেশ ৫টন ট্রাকের উপর ২০টন। যাক এসব কারনেই আমরা ডাব গাছের দিক থেকে চোখ অন্য দিকে নিলাম---------।

আমাদের টার্গেট এখন মুরগি। মুরগী নিধন ও ভোজনের উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা ----কোথ্থেকে যেন ইকবাল(বিলকিসের ইকবাল) চাদরের নিচে করে বিশাল এক মোরগ ধরে আনলো। স্থান স্কুল সংলগ্ন এফ টাইপ কোয়াটারের পিছনের জঙ্গল ।রান্না চলছে। হটাৎ ইকবাল মোরগের চামরা দেখে আর্তনাদ করে উঠলো---“ও বাজি রে, এটা তো আমাদের মোরগ”। বড় হুজুরের ছেলে রশিদ হড়িতে মাংশ নাড়তে নাড়তে বললো---“এখন খইলে অইবো না ? মোরগ ডেকচিৎ সিদ্ধ অর”। ইকবাল বললো---এ জন্যই তো মোরগটা চাদরের নিচে নেয়া মাত্র পায়খানা করে দিয়ে বুঝাতে চেয়ে ছিল---ওর পরিচয়” মাংশ ভাগে বেশী খেয়েও ইকবালের মন আর ভাল হলো না।

(আরো আছে আগামী পর্ব)
১২/৯/১৫

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss