Sunday, December 20, 2015

পরের দিন ছিল ফ্রি ডে



পরের দিন ছিল ফ্রি ডে। কোনো কাজ নেই ঘুরাঘুরি ছাড়া। সকালে নাশতা খেয়ে হোটেল থেকে চেক আউট করলাম।এর মাঝেই নাজমুল ভাইয়ের ফোন। আমরা দুপুরে একসাথে খাব। কোথায়? সেন্টমারটিন এ। আমি জানি চার পাচ জনের কথা,কিন্তু গিয়ে দেখি রবাহুত হয়ে আরো কয়েকজন এসেছেন। আমার সাথে আসা ছেলেমেগুলা পতেংগা যাবে কাজেই ওখানে যাবার পথে স্টিল মিলে যাবার ইচ্ছা প্রকাশ করলাম। 

সবাই মিলে তিন গাড়ি ভরে গেলাম। কি যে পরিবরতন!!! আমার চোখে ভাসছিল সেই ৯০ এর চিত্র। আমরা কলেজ বাসে করে যে রাস্তা ধরে যেতাম সেই রাস্তায় গাড়ি যাচ্ছিল।একটুও চিনতে পারছিলাম না। সব পাল্টে গেছে। ঢাকা ঢাকা ভাব এসে গেছে একটা। অনেক ফাস্টফুড এর দোকান,অনেক শপিংমলের উপস্থিতি ভাল লাগছিল না। গাড়ি একসময় কাস্টম হাউজের সামনে দিয়ে গিয়ে ব্রীজটায় উঠলো। আগে কলেজ বাসে যেতে যেতে খুব মন চাইতো এই ব্রীজটার রেলিং ধরে দাড়িয়ে ছবি তুলব।আমার চোখ খুজছিল সেই পুরানো সময়,পুরানো চেহারা। লিটনকে গাড়ি থামাতে বলাতে ও থামালো কিন্তু নেমে ছবি তোলার আগ্রহ হারালাম। এত ভীড়। 


আগে মনে হয় এত ভিড় ছিল না বা থাকলেও মনে নেই। তবে ব্রিজের নিচে রেল লাইন,বিশাল বিশাল কন্টেইনার গুলাই শুধু আমাকে আগের সময়ে নিতে পেরেছিল।একটু এগিয়ে ডানে বে শপিং সেন্টার। তখন এটা নতুন চালু হয়েছে।এখন পুরানো ভাব চলে এসেছে। বানৌজা ঈঁশা খা গেইট অপরিচিত লাগলো। আশে পাশে এত দোকান যে তার মাঝে থেকে স্টিল মিলের গেইট পাওয়া মুশকিল। ঢুকে মনে হল কোথায় এলাম।মেইন অফিসটা আছে। আমরা গাড়ি নিয়ে চলে গেলাম স্কুলে। আমার স্কুল না,কিন্তু আমি অনেক ছবি দিয়েছি। ওটাতে আমার যা ছিল তা শুধুই স্টিল মিলে ঢুকতে পেরেছি এই বিষয় অন্য কোনো আবেগ আমার মাঝে ছিল না। 

রেজাভাই,জামশেদ ভাইরা যেন স্কুল জিবনে ফিরে গিয়েছিলেন।তাল মিলিয়েছি সবার সাথে। হাটছি, আমার চেনা ত কিছুই নেই। পুলক সুজন ওরা আমাকে দেখাচ্ছে সব। খালপাড়,আমরা আবার খালে দাড়িয়ে ছবি তুললাম,যা এখন ভরাট হয়ে সুন্দর একটা রাস্তা হয়েছে। আতিকদের বা আতিক কাকাদের বাসার কাছে একটা মসজিদ ছিল ওটা দেয়ালের অন্যপাশে চলে গেছে। আমি খুজছিলাম আমরা সি টাইপে যে বাসায় ছিলাম সে বাসার সামনের রাস্তাটা,যেটা পানির ট্যাংকি পার হয়ে সোজা চলে গেছে স্কুলের দিকে। পেলাম না,অনেক উঁচু দেয়াল দিয়ে রেখেছে। সবচেয়ে কষ্ট পেলাম বি টাইপে ঢুকে।বিল্ডিং টা যেন ভুমিকম্প কবলিত একটা ধ্বংসস্তূপ। কনক্রিট গুলো পড়ে আছে,আর বি টাইপের পাশে সি টাইপ অব্দি পুরা জায়গা নিয়ে নতুন বিল্ডিং বানিয়েছে। সামনের মাঠটাই আছে শুধু আগের মত। কিন্তু মাঠের ওপাশে,সোনালী ব্যাংক এর সামনের সেই রাস্তা আর নেই, মানে আছে কিন্তু দেখা যায়না। 

Restricted area র তকমা সেঁটে দিয়েছে। খুব মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। একটা জায়গা এইভাবে পাল্টাতে হবে কেন বুঝলাম না।সেই পানির ট্যাংকি টাও নেই। কিছুই নেই। জেক্স যেখানে ছিল সেখানে দেয়াল ভেংগে ওটাকেও বি টাইপের অংশ বানানো হয়েছে। এখন বড় পরিসর নিয়ে বি,সি আর ডি টাইপকে include করা হয়েছে। কেমন যেন লাগলো। অপ্রাসঙ্গিক ভাবেই কথাটা বলি। আড্ডার ভেনু নিয়ে একসময় খুব হইচই করেছে কেউ কেউ যে আড্ডা হবে স্টিল মিলে,ওখানে গিয়ে আমি বুঝলাম এরা কতটা বোকা। স্বপ্নে বসবাস। কিছুই আর নেই। সিবীচে আর গেলাম না। স্টিলমিল এ ঢোকার অনুমুতি পেয়েছি আর কি লাগে। ফেরার সময় মন খারাপ লেগেছে খুব। ট্রেনে বসে ভাবলাম রচনাটা শেষ করেই ফেলি।

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss