নভেম্বর মাসের শেষের দিকের দিন।যেদিন বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হত।সেদিন ক্লাসে
প্রয়াত হামিদ স্যার এসে বলতেন, তোমরা সবাই ১৬ ঈ
ডিসেম্বর সকাল ছয়টা বাজে স্কুল মাঠে হাজির থাকবে।যারা থাকবেনা,তাদের রিপোর্ট কারড পাবেনা।দেখা যেত এই ভয়ে ১৬ঈ ডিসেম্বর
আমার মত অনেকেই স্কুল মাঠে শীতের আরামের ঘুম কে হারাম করে ঠান্ডা কে বুড়ো আংগুল
দেখিয়ে শীতের কাপড় গায়ে চাপিয়ে হাজির হত।হামিদ স্যার সবাইকে লাইন করে সারিবদ্ধ করে
দাড় করাতেন।তারপর মেইন অফিসের দিকে নিয়ে যেতেন।আমরাও ধাক্কাধাক্কি করে স্যারের
পিছু পিছু যেতাম।সবাই রংগন ফুল দিয়ে ঘেরা গোলাকার বাগানের চারপাশে দাড়াতাম।
তারপর শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে সম্মান জানানো, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, এবং স্কুলের সিনিয়র আপুদের জাতীয় সংগীত গাওয়া।তারপর শুরু হত
জিলাপি বিতরণ। দুইটা বা তিনটা জিলাপি নিয়ে বাসায় ফেরা।ভোরের সূর্যটা হয়ত একটু একটু
করে উকি দিতে থাকে তখন।ব্যালকনিতে ফুটে থাকা জবা ফুলগুলোকে সেদিন আরো লাল মনে
হয়।এমন সময় দূরে মাইকে বাজতে থাকত শাহনাজ রহমত উল্লাহ র গাওয়া, "একবার যেতে দেনা" কিংবা সাবিনা ইয়াসমিন এর,
" একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার"।অথবা
টিভিতে রুনা লায়লার কন্ঠে, "আমায় গেথে দাওনা
মাগো"গানটা। গানগুলো শুনতে শুনতে দেশের জন্য মনটার আদ্র হয়ে উঠত। সেদিন কলোনি
তে অনেকে পিকনিকের আয়োজন করত।কেউ কেউ দল বেধে বিজয় মেলায় যেত।সবার মধ্যে যেন
বিজয়ের আনন্দ। কলোনি র অনেক বছরের বিজয়ের দিনগুলো যেন এভাবেই আসা যাওয়া করত।
এখন আর হামিদ স্যার নেই, স্কুলটাও
নেই।বিজয় দিবস গুলো যেন মন নস্টালজিয়া ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনা
No comments:
Post a Comment