ছোট বেলায় একটি খেলনা গাড়ি দেখেছিলাম দোকানের তাকে সাজানো,আব্বাকে বলতে সাহস হয়নি ঐ টা কিনে দেয়ার, ওই ছোট বয়সেই বুঝতাম আব্বার সীমিত আয়, আসলে আর্থিক সংকট আমাদের একটু তাড়াতাড়িই ম্যাচিউরড বানিয়ে দিয়েছিলো।তখন ভাংতি পয়সা জমাতাম ভেবেছিলাম ঐ জমানো পয়সা দিয়ে একদিন গাড়িটি কিনব। এখন মনে পড়লে হাসি পায়, কোন দিন ওই পরিমান পয়সাও জমেনি গাড়িটি ও কিনতে পারিনি।
কাপড় চোপড় নিয়ে কখনও বিলাসিতা করতে পারিনি, ক্লাস নাইনে যখন পড়ি তখন একটা জিনসের প্যান্ট কিনে ছিলাম ৬০০ টাকা দিয়ে, কি যে যত্ন করতাম প্যান্ট টার , প্যান্ট টি প পড়লে কোথাও বসতাম না, যদি প্যান্ট টি ক্ষয় হয়ে যায়। তারপরেও আমাদের কলোনীতে সবার সাথে মিশতে কোন সমস্যা হয়নি,কলোনীর প্রায় সবারই তো আমাদের মত অবস্থা।
লেখাপড়ার খরচ চালাতেও হিমশিম খেতে হয়েছে, আমার পরম সৌভাগ্য আমার মামারা অকৃপন ভাবে আমাদের সহায়তা করেছেন, কোন কিছুই আটকে থাকেনি তাদের কল্যানে।
৯১ এর ঘুর্নিঝড়ে বাসার সাদা কালো টিভি টি নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। পরে প্রায় তিন বছর লেগেছিলো আরেকটি টিভি কিনতে, অনেক কষ্টের জমানো টাকায় আব্বা টিভি টি কিনেছিলেন।
জীবনে প্রথম কক্সবাজার গিয়েছি চাকুরিতে ঢুকার ৮ বছর পরে। কোন দিন সাহস করে আব্বার কাছে কক্সবাজার যাওয়ার টাকা খোঁজতে পারিনি। এখন আমি দেশের বাইরেও যেতে পারি, জার্নি করি যতটুকু সম্ভব লাক্সারিয়াস।
আজকে আমি যতটুকু এসেছি আমার বাবা মার পরেই আমার মামাদের অবদান, তাদের সহায়তা না থাকলে হয়ত................। আর আল্লাহর রহমত তো ছিলোই।
আমাদের সন্তানেরা যেমন দেখেনি আমাদের আনন্দ ময় শৈশব, তেমন দেখেনি অনেক শখ আহ্লাদ অংকুরেই বিসর্জন দেয়ার চাপা কষ্ট। তারা সব সময় ভালো থাকুক, এটাই আমাদের ভালো থাকা।
No comments:
Post a Comment