Sunday, January 17, 2016

ছোটবেলার কথা


ছোটবেলার কথা।শীতকালের দুপুরে বারান্দায় আসা কড়া রোদে কাঁচের বয়ামে করে জমাট বাঁধা নারকেল তেল রাখা হয়েছে তরল করার জন্য।হঠাৎ শোরগোল। কি ব্যাপার? বয়াম ভেঙে সারা বারান্দা তেলে তেলে মচ্ছব হয়ে আছে।কিভাবে হল,কে ভাংগলো বোঝা যাচ্ছেনা।জিজ্ঞাসাবাদেও কিছু জানা গেলনা।এর মধ্যে ছোট ভাইয়া মোটামুটি সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিলো । কড়া রোদে অনেক্ষণ রাখার কারনে অতিরিক্ত গরম হয়ে বয়াম ফেটে গিয়েছে। বড় হওয়ার পরও অনেকদিন পর্যন্ত এই ব্যাখ্যা গ্রহনযোগ্য ছিল আমার কাছে।তারপর হঠাৎ একদিন এই ঘটনা মনে পড়লো।ছোটভাইয়াকে জিজ্ঞেস করায় বল্ল, ওই বয়াম নাকি ওর পায়ের সাথে লেগে ভেঙে গিয়েছিল। আব্বার প্যাঁদানির ভয়ে কড়া রোদে অতিরিক্ত গরম হয়ে বয়াম ভাংগার সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যা।


ছোটবেলা থেকেই ছোটভাইয়া একটু বিজ্ঞানমনষ্ক ছিল।নানান রকম পরীক্ষা নীরিক্ষা চালাতো।মাঝে মাঝে আমার প্রতি দয়াপরবশ হয়ে আমাকেও সাথে নিত।কোত্থেকে জানি ও স্যালাইন যোগাড় করেছিল পাইপ সহ। খাওয়ায় স্যালাইন না।শরীরে পুশ করে যে অইটাকে কি স্যালাইন বলে এই মুহুরতে মনে পড়ছেনা।ভর দুপুরে চলতো পরীক্ষা নীরিক্ষা। স্যালাইনে পানি ভরে পাইপ ঢুকিয়ে দেওয়া হত বাসার দেওয়ালের ফাটা কোন অংশে।উদ্দেশ্য পানিটা কোনদিক দিয়ে বের হয় দেখা।আমাকে অইখানে বসিয়ে ভাইয়া অন্য কোন আবিষ্কারে মনোযোগ দিত। এভাবে ভর দুপুরে কয়েকদিন বসে থাকার পর দেখতে পেলাম পানিতে মেঝে ভিজে যাচ্ছে।আমিতো উত্তেজিত। কাহিনি কী?জাভেদের বিকার নাই। যেন এটাই স্বাভাবিক। এতদিন দেওয়ালের সিমেন্ট পানি শুষে নিয়েছে।এখন আর টানতে পারছেনা।তাই এই পরিণতি। 

বুঝতে পারছি আমারে শনিতে টানছে।নয়তো এই লেখা কেন লিখলাম।কয়েকদিনের জন্য নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখার সময় চলে আসছে।

No comments:

Post a Comment