Thursday, April 21, 2016

২৯ শে এপ্রিল ১৯৯১ নিয়ে আমার ছোট্ট একটা সৃতিচারণ


এপ্রিল মাস চলছে, ২৯ এপ্রিল ১৯৯১ এর কথা এই পেজ এর অনেকের মনে আছে। 

১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ভয়াল এই রাতে মুখোমুখি হয়েছিলাম ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের । আমার জীবনে প্রত্যক্ষ চোখে দেখা এক ভয়াবহ রাত । বাতাশের প্রচন্ড বেগ পাশাপাশি অঝোর ধারায় বৃষ্টি, কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই চারিদিকে শুধু পানি আর পানি । হাহাকার আর উৎকণ্ঠার মাঝে কিভাবে যে সেই রাতটা পার করে ছিলাম । সকাল বেলার দৃশ্য আরও ভয়াবহ চারিদিকে ভাসমান লাশের পর লাশ, মরা মাছ , গাছপালা গবাদি পশুর ধ্বংসলীলা । খাওয়া দাওয়ার নিদারুন কষ্ট । সহায় সম্পত্তি হারা মানুষের চিৎকার আজো ভেসে উঠে দুই চোখে ।

# ২৯_শে_এপ্রিল_১৯৯১_নিয়ে_আমার_ছোট্ট_একটা_সৃতিচারণঃ

১৯৯১, আমি তখন ক্লাস থ্রীতে পরি। আমাদের এই পেজ এর একজন নীরব, শব্দহীন, নির্বাক, চুপচাপ, নিঝুম, অরব, মুখচাপা, নিরূত্তর, অনুত্তর, স্বল্পভাষী মেম্বার নাফিয ইমতিয়াজ সজীব (ব্যাচ – ২০০৩,  শফিকুর রহমান কাকার বড় ছেলে) তখন BH-1 এর নীচ তালায় থাকতো। ঝড় চলাকালীন রাত ৩ তার দিকে যখন পানি অনেক বেড়ে গেল তখন নীচ তালা থেকে সবাই তাড়াহুড়া করে ২ তালায় উঠতে লাগলো। সজীব সম্ভবত ওর আম্মার কোলে ছিল, সজীব তখন খুব সম্ভবত শিশু শ্রেণীতে পরত। তাড়াহুড়া করে ২ তালায় উঠার সময় সজীব হটাত করে ওর আম্মার কাছ থেকে ছিটকে যায় এবং জলোচ্ছ্বাসের পানিতে ভেসে যেতে থাকে। এরপর ওর আম্মা অথবা অন্য কেউ একজন অনেক কষ্টে সজীবকে রক্ষা করে। আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে সজীব সেইদিন প্রাণে বেঁচে যায়। ঝড়ের পরদিন ৩০ এপ্রিল ১৯৯১ সকালে আমরা সবাই দলে দলে সজীবকে দেখতে যাই, সজীব চুপ করে ওর আম্মুর কোলে বসে ছিল, ওর আম্মুও ওকে জড়িয়ে ধরে চুপচাপ বসে ছিল আর কাদতেছিল এবং সেইদিন আমাদের বিল্ডিং এ এটাই ছিল আলোচণার মুল বিষয়।

এখন আমাদের সজীব অনেক বড় হইছে। গ্র্যান্ড আড্ডায়ও এসেছিল। যারা সজীবকে চিনেন না অথবা ভুলে গেছেন তাদের জন্য গ্র্যান্ড আড্ডায় তোলা সজীবের একটা ছবি পোস্ট করলাম। 

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss