তোমাদের সবার লেখা পড়তে পড়তে ঝাপসা হয়ে আসছিল চোখ। আর বারবার মন ছুটে যচ্ছিল সোনালী শৈশব-কৈশরের স্মৃতি মাখা আমাদের প্রিয় স্টীল মিল কলোনীতে। তোমাদের সাথে একটু যোগ করি।ওখানে আমাদের সব কিছুই এক রকমই ছিল। তখন প্রাইমরিতে পড়ি । ঈদের দিন যেন সবার বাসাই আমাদের বাসা।তাই না? দিনভর দল বেধে প্রত্যেক বাসায় নক করো- সালাম করো-সোজা ডাইনিং টেবিলে বসে পড় । চাচীরা যেন এ দস্যি বাহিনীর জন্য প্রস্তত হয়েই থাকতেন।তবে আমাদের বাবা চাচাদের কঠিন শাসনের ভিতর ঈদের রাত্রীটাই ছিল স্বাধীন। তখন সবে একটা সাদা-কালো টেলিভিশন অফিসার ক্লাবে আসছে । ওটাই তখন আমাদের প্রিয়তমা দর্শনের মত ব্যাকুলও দূরন্ত করে তুলতো। প্রয়োজনে গার্ডের সাথে দূর্ব্যবহার করে হলেও আমারা ঢুকে পড়তাম TV দর্শনে।
এরপর যখন এইট/নাইনে পড়ি তখন program-এ থাকতো গভির রাত্রে ডাব চুরি ।ঈদ-স্বাধীনতায় কখনো কখনো আমাদের ভেতরকার অতি সহসী প্রেমিক নায়ক মৃগীরোগীর কাঁপন নিয়ে প্রিয় মুখের সামনা-সামনি হতেন। সেটা ছিল নায়ক-বন্ধুদের আরো উত্তজনাকর মুহুর্ত।কোন নায়ক বিরস বদনে কেউ আবার বিশ্বজয়ের ভাব নিয়ে ফিরত।
এখন ঈদ এলেই তাড়া করে শৈশব। নস্ট্রালজিয়ায় এলোমেলো হয়ে যায় বর্তমান। কোথা দিয়ে কি হয়ে গেল। কপূরের মত সোনালী দিন গুলো হারালো। নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল আমাদের প্রিয় স্টীল মিল কলোনী। এখন তাকিয়ে দেখি আমার সন্তানের ঈদ। যেমন দেখতো আমার মা-বাবা, চাচা-চাচিরা। তেমনি করে মিলাতে চাই সব। কিন্তু সময় পাল্টেছে। এখন হাতে হাতে প্রযুক্তি। রাস্তার মোড়ে মোড়ে বাজে কান ফাটানো বিজাতিয় মিউজিক। সাথে উন্মত্তো নৃত্য। কখনও কখনও ঝড়ের গতিতে গাড়ি ছোটানো। এটাই এখন নতুনদের ঈদ সংস্কৃতি। আধুনিক ছেলে-মেয়েদের কাছে আমাদের ঈদ আনন্দ এখন বড্ড বেশি সেকেলে। বড্ড বেশি বোরিং।
-----সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা--সবার জন্য শুভকামনা।
২৫/০৯/১৫
No comments:
Post a Comment