আজ বাবার একটা স্বপ্ন পূরণ হল। আজ আমার আনন্দের দিন,কিন্তু আমার চোখে পানি।কারন আজ যে বাবা নেই।খুব মনে পড়ছে বাবার কথা।কেন জানি আমার fb বন্ধুদের আমার শৈশবের কিছু কথা বলতে মন চাচ্ছে,জানি না ভাল হবে কিনা।তবে এটা বলতে পারি অনেক বড় ভাই,বোনরা আমাকে চিনতে পারবেন,যারা CSM কলোনীতে থাকতেন। বাবার নাম আমি বলব না।
আপনাদের মাঝে রেখে দিলাম,যদি চিনতে পারেন তবে নাম এমনি তে উঠে আসবে।হা আমি সে মানুষের সন্তান,যিনি ছিলেন স্টিল মিলস এর একজন সিনিয়র ক্রান ড্রাইভার।চাকুরির পাশাপাশি যিনি কলোনীর মানুষের কবর খনন করতেন।জানি না কত মানুষের কবর তিনি খনন করেচিলেন। তাছাড়া তিনি বরষা কালে মাছ ধরা, শীত কালে শাক সবজির চাষ,সহ নানা কাজে বেস্ত থাকতেন। কোন কাজকে তিনি ছোট করে দেখতেন না।আর এই কোরবানির সময় তিনি মানুষের গরু কাটার কাজ নিতেন।
কোরবানির সময় যখন এক এক করে কলোনিতে গরু আসতে শুরু করে তখন বাবার কাছে গিয়ে বলতাম আব্বু এবার কিন্তু গরু আনতে হবে,বাবা বলতো ঠিক আছে স্টিল মিল বাজার থেকে গরু কিনব। খুশি হয়ে সবাইকে বলতাম এবার আমাদের কোরবানি দিবে।তখন স্টিলমিল বাজারে হাট হত সোমবার আর বৃহস্পতিবার। হাট আসে, শেষ হয়ে যায়, সবার গরু আসে কিন্তু আমাদের গরু আসেনা। অন্নের গরুর কাছে গেলে তারিয়ে দিত বন্ধুরা।মন খারাপ করে বাসায় এসে কান্না করতাম। বুঝতে পারতাম না কেন বাবা কোরবানি দিতে পারতেন না।আজ সব বুঝি।কোরবানির দিন বাবা আমাকে সাথে করে অন্নের গরু কাটার জন্নে নিয়ে যেতেন। আমার ভাল লাগতো না, তবুও যেতে হত। ফিরে আসার সময় বাবার হাত ধরে বলতাম,বাবা আমরা কি কখনো কোরবানি দিবনা।বাবা হেসে বলতো দিব দিব,যখন তুই বড় হবি,তখন দিব। একটা গরু কোরবান দিব।তুই আর আমি মিলে সেটা কাটবো।
গত ৮ বছর ধরে কোরবান দিচ্ছি, এই বার প্রথম একলা দিলাম। সব কিছু হল,কিন্তু বাবা তুমি যে আমার পাশে নাই। তোমার রেখে যাওয়া সেই ছুরি ধামা সব আছে, শুধু তুমি। খুব মনে পরে বাবা তোমাকে। বাবা তোমার সন্তান বলে নিজেকে পরিচয় দিতে খুব গরবিত মনে করি।তুমি আমাকে টাকা পয়সা,গাড়ি বাড়ি দিয়ে যেতে পারনি ঠিকি,যা আমি তোমার কাছ থেকে পেয়েছি তা আমার কাছে বড় পাওয়া। তোমার মত সৎ এবং যে কোন ভাল কাজ করার শক্তি ই আমাকে সামনে নিয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। তুমি শুধু দয়া করো।
No comments:
Post a Comment