Monday, January 18, 2016

বাজারের টাকা মারিং কাটিং


বাজারের টাকা মারিং কাটিং করাটা ছিলো আমাদের দৈনিক হাত খরচ যোগাড়ের প্রধান উৎস। ৯০০ গ্রাম মাছ কিনে সেটাকে বাসায় ১ কেজি বলে চালিয়ে দেয়া বা ৩০ টাকার বাজার করে বাসায় ৪০ টাকা হিসাব দেয়া। সেই তখন থেকেই আমরা হিসাব বিজ্ঞানে পারদর্শী। এ জন্যই বোধ হয় আমাদের কলোনীতে কমার্সের ষ্টুডেন্ট বেশী ছিলো। (আমি নিজেও কমার্সের ষ্টুডেন্ট ছিলাম , হা হা হা)। প্রতিদিন সকালের একটি কমন দৃশ্্য ছিলো এ রকম --আমার এক বন্ধু বাজার শেষ করে এক হাতে বাজারের ব্যাগ আর আরেক হাতের আংগুলের কড়ায় হিসাব করতে করতে বাসায় যাচ্ছে, মানে ঐ হিসাব বিজ্ঞান চলছে আর কি। 


আর আমি এক সকালে দু হাত ভর্তি করে বাজারের ব্যাগ নিয়ে বাজার শেষ করে কলোনীতে ঢুকছি, গেটে দেখা আমাদের অপু ভাইয়ের সাথে তার প্রশ্ন “কিরে লাভ কেমন “ আর আমারও ঝটপট উত্তর “ বেশী ব্যাগে বেশী লাভ” , আসলে সেদিন বাসায় মেহমান আসবে বলে দু ব্যাগ ভর্তি বাজার করা হয়েছিলো। তখন ভাবতাম আহা প্রতিদিন কেনো মেহমান আসেনা, আর এখন ভাবি মাসের শেষের দিকে মেহমান, আর বাবার সীমিত আয়, হয়ত কারো কাছ থেকে ধার কর্জ করে এই বাজারের পয়সা যোগাড় করেছে। শুধু আমার বাবা নয় সীমিত আয়ের প্রতিটি বাবাই হয়ত এভাবে বাজারের টাকাটা যোগাড় করত।

তবে এই বাজারের টাকার আয় দিয়ে উচ্ছন্নে যাওয়ার মত আমরা কিছু করিনি, হোটেল খাজা আজমিরে বা এক টিক্কা হোটেলে (চায়ের দাম এক টাকা ছিলো বলে এক টিক্কা হোটেল ) ভরপেট চা নাস্তা করা আর সর্বোচ্চ হয়ত নেভী বা বনানী হলে সিনেমা দেখা, আর একটু বড় হওয়ার পর রোমান্স জনিত খরচ।

সীমিত আয় আর সীমিত চাহিদা ------------ এই নিয়ে ঐ জীবন টা আসলেই জমজমাট ছিলো।

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss