‘‘বিয়ে” নামক কার্যক্রমের মাধ্যমে
দুইজন নারী পুরুষের মধ্যে একত্রে থাকার যে সামাজিক চুক্তি হয় তাতেই একজন অন্যজনের
স্বামী বা স্ত্রী হয়েে উঠেন।
বছর 50 এক আগে তো চোখে দেখাও হত
না অথচ মৌলভী, পাদ্রি বা পুরহিত-দুইজনের
জন্য দোয়া, বাইবেল বা মন্ত্র পাঠ
করলেন চারজনের স্বাক্ষী থাকল আর আত্মীয় পরিজন পেট ঠেসে খাওয়া দাওয়া করল-ব্যস হয়ে
গেলা বিয়ে।
পর দিন থেকে ভাল লাগুক না লাগুক এক ঘরে এক ছাদের নিচে কাটিয়ে দাও জীবন ভর।
ব্যাপারটা গোলমেলে বলেই স্বামী স্ত্রী সম্পর্ক নিয়ে এ যাবৎকাল সবচাইতে বেশী জোকর্স
সৃষ্টি হয়েছে।
বাবা ছেলেকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় গেছেন-গাধার খাচার সামনে দাড়িয়ে ছেলে প্রশ্ন
করল-‘‘বাবা” ওটা কি?
‘‘ওটা গাধা”
‘‘আর ওর পাশে যেটা দাড়ানো”?
‘‘ওটা ওর স্ত্রী!” বাবা গাধারা কি বিয়ে করে?
‘‘হ্যা বাবা! সুধুমাত্র গাধারাই বিয়ে করে”। স্বামী বেচারী কতখানী হতাস হলে এ কথা বলতে পারেন।
তবে 50 বছরের আগেকার যুগ নেই-এ
যুগের ছেলে মেয়েরা যাচাই-বাছাই, ট্রায়াল, ট্রেনিং শেষ করে তবেই বিয়ে করছে। কিন্তু গোলমাল মিটছে না।
দ্বিথীয় জোকসটা বিয়ের ক্ষেত্রে একটা চিরন্তন বাণী-‘‘বিয়ের প্রথম ছয় মাস স্বামী বলে স্ত্রী শোনে পরের ছয় মাস
স্ত্রী বলে স্বামী শোনে আর বাকী জীবন দুইজনে বলে পাড়া প্রতিবেশী শোনে। আজকাল আইটির
যুগ। ফেইসবুকে বিয়ে হয়, মোবাইলে ডিবোর্স।
ঝগড়া না করে বিবাহিত জীবন কাটিয়েছে এমন কোন দম্পত্তি খুজে পাওয়া যাবে না। বিয়ে এবং
স্বামী স্ত্রী সংক্রান্ত যত জোকস পড়িছি তার অধিকাংশ জুড়ে রয়েছে স্বামী স্ত্রী ঝগড়া
এবং অবিশ্বস্ততা। বেশীর ভাগ জোকসই স্ত্রীর অপকর্ম নিয়ে লেখা, হয়ত লেখকরা দুঃখি স্বামী বলে তবে নাইন ইলেবেনের পর একটা
জোকস শুনে ছিলাম, উল্লেখ্য না করে পারছি
না। স্বামী, সুর্দশনা সেক্রেটারীকে
নিয়ে হোটেলের রুম বুক করে আনন্দ করছেন, অফিসের বাহিরে ‘‘ডোনডিস্টাব” কাড ঝোলানো-টেলিফোন মোবাইল, টিভি সব বন্ধ। টুইন টাওয়ার বিধস্ত হয়ে পড়েছে। স্ত্রী পাগলের
মত কান্নকাটি করছেন কারণ স্বামীর সেল ফোন আনরিচেবল। তাহার অফিস টুইন টাওয়ারের নিরা
নব্বই তলায়। বিকাল চারটায় হোটেল থেকে বেড় হয়ে স্বামী স্ত্রীকে ফোন করলেন-হ্যাই
ডারলিং।
স্ত্রী হাউ মাউ করে কেদে বললেন
ওগো তুমি কোথায়?
স্বামী বললেন
কেন?
রোজকার মত অফিসেই।
আমরা কথায় কথায় ভাল বাসার উদাহরণ দিই-শিরি ফরহাদ, লাইলী মজনু, হির-রঞ্জা,রাধা-কৃষ্ণ, রোমিও-জুলিয়েট,
কিন্ত একবারও মনে রাখি না যে এদের কখনই বিয়ে হয়
নাই। এরা চির জীবন প্রেমিক-প্রেমিকা ছিলেন স্বামী স্ত্রী হয়ে উঠেননী। তাদের মধ্যে
বাজার-সদাই, আত্মীয় পরিজন, ছেলে মেয়ে, কাথা-বালিশ,
স্কুল-কোচিং, গাড়ী বাড়ীর ঝামেলা ছিল না। তাই তারা অমর প্রেমের প্রতিক।
তবে কি বিবাহিত জীবনে প্রেম নেই? স্বামী স্ত্রী
ভালবাসাহীন সম্পর্ক। তাই বা কি করে বলি? রমনা পার্কে হাটছিলাম-প্রায় 75 এর এক ভদ্রলোককে
হাত ধরে আনলেন 70 এর এক মহিলা। বেঞ্চে
বসিয়ে আচল দিয়ে কপালের ঘাম মুছিয়ে দিলেন। বললেন- এখানে বসে থাক নড়োনা-তোমার দুর্বল
হার্ট বেশী হাটা যাবে না। আমি আর একটু হেটে আসি। ভদ্রলোক শিশুর মত হেসে বললেন-‘‘তাহলে কিন্ত তুমিও বেশী দুর যেও না হাটুর ব্যথাটা বাড়বে”।
ভালোবাসার গোলাপী আলোয় চার পাশটা যেন আলোকিত হয়ে গেল।
No comments:
Post a Comment