সময় মত সেহেরী খেয়ে ফজরের নামাজটা পড়ে শুয়ে পড়লাম। কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছিল না(প্রচন্দ চোখে ঘুম থাকা সত্ত্বেও কারন গতকালও খুবই কম ঘুমিয়েছি)। চোখে শুধুই সিএসএম এর স্মৃতি গুলো ভাসছিল এবং আজ আবার সিএসএম কলোনীর ইফতার মাহফিল বলে কথা তো ঘুমতো আসবেই না যতক্ষণ পর্যন্ত উপস্হিত হতে না পারি(আমার আমিকে চিনিতো)। চিন্তা করছিলাম তিন/চারেক ঘন্টা ঘুমিয়ে দশ বা এগারটার(মাননীয়া সরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলা ছিল দশটার দিকে যেন ডেকে দেয় কিন্তু কি জন্যে! সেটা বলিনি কারন আমি জানি যে, বললে আমাকে ডেকে দিবে না) দিকে রওনা দিব কিন্তু বিধিবাম একবার এপাশ হয় তো আবার অন্য পাশ ঘুম কিছুইতে আসছে না যদিও চোখে ঘুম আছে। পড়লাম মহা যন্ত্রণায়, ঠিক যেন গেলবার গ্রান্ড আড্ডার মত, তখন তো রাতের বারটা বাজেই রওনা দিয়েছিলাম এবং না ঘুমিয়ে সারাদিন আড্ডায় খোশ মেজাজে ছিলাম। তাই বুজলাম, এবারও না ঘুমিয়ে সারাটা দিন কাটাতে হবে।
পুরনো সব স্মৃতি(শৈশব এবং কৈশর) মনে পড়তে পড়তে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাড়ে পাঁচটা(৫.৩০)। উঠে বসলাম এবং চিন্তা করলাম ঘুম আর আসবে না, এখন রওনা দিলে ঘন্টা সাড়ে তিন ঘন্টার মধ্যে পৌছাব এবং মনে মনে ভাবলাম, পৌছে সেই প্রানের সিএসএম কলোনীর বাজার এবং এর আশপাশ ঘুরব কারন সত্যি কথা বলতে কি সেই ৯৮' সালে যে চলে আসলাম, তারপর প্রায় ১৯ টা বছরে আর কোনদিন ওদিকটাই যাওয়া হয়নি আসলে যাওয়া হয়নি বললে ভুল হবে ইচ্ছে করে যাইনি(বন্দর টিলা পর্যন্ত গেছিলাম) কারন আমার কিছুতেই ভাল লাগবে না এবং খুবই আবেগ আপ্লুত হয়ে যাব(আমার আবার আবেগটা একটু বেশী যা এই মুহুর্তেও মনের ক্যাভাসে কাজ করছে মনে হচ্ছে কেউ আমার ভেতর ঢুকে Shajib Kumer Dey দার মত ড্রামস বাজাচ্ছে)।
(ওমা ! লিখতে লিখতে ৩০ কিঃমিঃ অর্থাৎ চকরিয়া বা চিরিঙ্গা ক্রস করলাম এবং মাঝের মধ্যে খুবই বিরক্ত হচ্ছিলাম গাড়িটার জন্যে যে এতো ঝাকুনি দিচ্ছে বলার মত না, লিখতে সমস্যা হচ্ছিলো। পরে দেখলাম না গাড়ির তো কোন দোষ নেই। মূলত ডিজিটাল দেশের ডিজিটাল রোডের দোষ)।
যাই হোক, শুয়া থেকে উঠে মাননীয় সরাষ্ট্র মন্ত্রী (গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন) কে ডাকলাম এবং বললাম উঠো(অনেকটা ভয়ে কারন আমি জানি ওনি ঝগড়া করবেন এবং এর ঔষধ আমার কাছে আছে)।
তো উঠলো এবং আমি বললাম আমার সাদা , লাল দাড়ি ওয়ালা পান্ঝাবী(ওর স্টীল আলমীরাতে রাখা আছে, যে আলমীরা আমি খুলতে পারিনা) টা দাও। সে তো হা করে আমার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলো। বলল কি বলো এইসব! কয়টা বাজে? বললাম সকাল সাড়ে পাঁচটা। সে বলল তো পাগল হলে নাকি! এখন পান্ঝাবী পড়ে কোথায় যাবা? কেন তোমাকে বলছিলাম না যে দশটায় ডেকে দেওয়ার জন্যে একটু কাজ আছে। একটা ইফতার মাহফিলে যাব অনেক দুরে। সে বলল কোথায় সেই দুর টা! বললাম ইসলামাবাদ। ইসলামাবাদ(চট্টগ্রামের পূর্বের নাম টা ঘুরিয়ে বললাম)।সে বলল সে তো তুমি ইফতারের ১৫ মিনিট আগে হলেও যেতে পারবা(আমাদের পাশের ইউনিয়ন এর নাম ইসলামাবাধ)। বললাম এই ইসলামাবাদ আর সে ইসলামাবাদ না। এটা আমার প্রানের ইসলামাবাদ। সে বলল এই তুমি কি বলছ এই সব আবোল টাবোল!
বললাম আরে না, চট্টলা যাব। সে বলল চট্টলা মানে? বললাম চ ট্ট গ্রা ম। সে বলল তুমি কি সত্যি পাগল হলে নাকি! যতটুকু জানি তুমি ইফতার মহফিল দাওয়াত পরও তো যাওনা, তাও আবার শুধু চট্টগ্রামে যাবা ইফতারি খাওয়ার জন্যে। বললাম সিএসএম কলোনীর ইফতার মাহফিল(ওর আবার ধারণা আছে সিএসএম কি! কারন উনারা আমরা ওখানে থাকতে প্রায় সময় বেড়াতে যেত(আমার সরাষ্ট্র মন্ত্রী আমারই সেজ আন্টির সেজ মেয়ে)। সে বলল দিতে পারব না, ঘুমাও। বললাম তুমিও চলো ভাল লাগবে। সে বলল তুমি পাগল বলে আমি তো পাগল না। বললাম দাওনা বের করে! এবং সিএসএম কলোনী যে কি তোমাকে আমার সমস্ত অস্তিত্ব দিয়ে বুঝিয়ে বললেও তুমি বুঝবে না এবং বললাম ঠিক আছে এসে তুমি যা চাও কিনে দিব প্রমিজ(ঔষধ)। সে বলল ঠিক তো। বললাম ১০০% ঠিক। বলল ঠিক আছে কিন্তু এই বান্দর মার্ক চেহারা এবং ন্যাড়া মাথায় সিটিজি যাবা! বললাম ধ্যাৎ! কথা বাড়িও না। শুধুই পরাণ টা থাকলেই হবে।
তারপর মমতাময়ী আম্মা কে ডাকলাম এবং বললাম একটু সিটিজি যাচ্ছি রাতে ফিরব। আম্মা বলল কি কাজ? বললাম এই একটু কাজ(বলিনি সিএসএম ইফতার মাহফিলে যাচ্ছি কারন গেল বার গ্রান্ডা আড্ডায় নিয়ে যাইনি বলে আম্মা আমার তিনদিন আমার সাথে অভিমান করে কথা বলেনি)।
এবং তাড়াহুড়া করে বেরিয়ে পড়লাম সিএসএম ইফতার মাহফিল এর উদ্দেশ্যে। আল্লাহ সহায়....
ফিআমানিল্লাহ।
(কেন যে লেখতে গেলে আমার লেখা গল্পগুলো বড় হয়ে যাই বুঝি না। তাই পড়তে পড়তে বিরক্ত বোধ করলে এবং কোন ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)।
খুব মন দিয়ে লেখার কারনে এতক্ষণ বাহিরে তাকানো হয়নি এবং লেখার শেষে বাহিরে তাকালাম, দেখলাম এই মাত্র Midway inn (চুনতি, লোহাগাড়া) ক্রস করলাম। এবং ইনশাআল্লাহ ঘন্টা দুই থেকে আড়ায় এর মধ্যেই প্রানের শহর CTG তে হবো।
নোট:-
"ইয়ে দোস্তি হাম নেহী তোড়েঙ্গে,
তোড়েঙ্গে দম মাগর।
তেরা (CSM) সাথ না চোড়েঙ্গে।"
No comments:
Post a Comment