তখন সবে হাফ-প্যান্ট ছেড়ে লুঙ্গি পড়া শুরু করেছি।থাকি চট্টগ্রাম ষ্টিল মিল কলোনীতে। প্রথম প্রথম একটা ভাব নিয়ে চলতে লাগলাম। যাক এতো দিনে বড় (সিয়ানা) হয়েছি। কিন্তু কিছু দিন যেতেই সিয়ানা হওয়ার বিড়ম্বনায় আমাদের যা-তা অবস্থা। কোন দিন ঘুম থেকে উঠে দেখি কোমরের লুঙ্গি গলায় পেঁচানো। আবার কোন কোন দিন লুঙ্গি খাটের নিচ থেকে কুড়িয়ে পড়তে হয়। সমবয়সিদের মাঝে এ নিয়ে দুষ্টামী আর হাসা-হাসির অন্ত নেই। তখনো ঠিক মত লুঙ্গি বাঁধতে শিখিনি। দেখা গেল সবাই মিলে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছি---এর মধ্যে কারো লুঙ্গি আস্তে করে খুলে পড়ে যাচ্ছে। তার কো--ন খবর নেই। সর্তক করতে করতে লুঙ্গি ততক্ষনে হাটুর নিচে। বেচার লজ্জায় আধ-মরা। এর উপর আমাদের নতুন আবিস্কার হঠাৎ টানদিলে লুঙ্গি পড়ে যায়।তখন আমরা ঘন ঘন আবিস্কার চর্চা করছি আর ভিকটিম লুঙ্গি সামলাতে সামলাতে বজ্জাত লুঙ্গি-কুলঙ্গার ততক্ষণে পগার পার।এই বেলায় সবাই সতর্ক হই। পুনরায় ফেলে দেয়া হাফ প্যান্ট পড়ে, উপরে লুঙ্গি পড়া শুরু করলাম।
পরিস্থিতি যখন এই চলছে সেই সময় একদিন বাসা থেকে নিচে নামতেছি।আমাদের নিচ তালায় ওরা বেশ কয়েক বোন ছিল। তার মাঝে এক জন ছিল আমার পরের ক্লাশের ছাত্রী। তাকে দেখলেই বুকে ঢাক বাজার দ্রাম দ্রাম শব্দ পাই। সেদিন তাকে সিড়িঁ মুখে দেখে দাঁড়িয়ে গেলাম। সেও তাই করলো। কথা বলছি । সাধারণ কথা।এ দিকে বুক থেকে অসাধারন ঢাকের শব্দ শুনছি। হঠাৎ সে কিশোরী অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে বললো—‘তোমার লুঙ্গি পড়ে যাচ্ছে’।এ কথায় ঢাকের শব্দ গায়েব। কানের মধ্যে পিন---ন----ন করে অদ্ভুৎ হুইসেল বাজতে থাকলো। নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম—‘সমস্যা নাই। নিচে হাফ প্যান্ট আছে’।সেই থেকে তাকে দেখলে আর ঢাকের বাজেনা শুনিনি তার বদলে কানে একটা পিন---ন---ন শব্দ হতে থাকতো।
এখানেই কি শেষ? না। মসজিদে বিশেষ করে তারাবি নামাজে আমরা ইবলিসের দল দাঁড়াতাম সবার পিছনে।দেখা গেল কেউ সেজদায় গেছে পেছন থেকে পা দু’খানা টান দিয়ে তাকে সটান করে শুইয়ে দিল।আবার একজন আরেক জনের লুঙ্গি হেচকা টান মেরে খুলে দিয়ে তড়িৎ বড়দের কাতারে মিলে গেল।এভাবেই চলতো আমাদের খতম তারাবি। এমনি এক দিন। আমি এক রাকাত থেকে উঠে দাঁড়িয়েছি। বাপ্পি(বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী) ইবলিশের মত দ্রুত টান দিয়ে আমার লুঙ্গি নামিয়ে দিল।আমার ভীষণ জেদ চেপে গেল। আমি লুঙ্গি তুললাম না। ব্লু-রংরে হাফ প্যান্ট পড়ে আমি নামাজে দাঁড়িয়ে আছি।(সে এক দেখার মত দৃশ্য) আমার আশে পাশে ইবলিশদের মধ্যে নিচু গলায় খিক খিক হাসির বন্যা বইছে। দেখি ওরাই আবার লঙ্গি তুলে দিয়ে পড়ানোর চেষ্টা করছে (যারা নিজেদেরটাই ঠিক মত পড়তে পারেনা) বাপ্পি কানের কাছে মুখ এনে বললো—‘মাফ চাই ভাই তুই লুঙ্গি পড়’ আমি গভির ধ্যানস্থ নামাজির মত অনঢ়। দু’জনে দেখলাম লুঙ্গটা আমার প্যান্টের কোমরে খুজে দিল। আমার আশ-পাশ ফাঁকা। খানিক ক্ষণ বাদে বড়দের ধমক খাওয়ার ভয়ে নামাজ মাথায় তুলে বাহিরে চলে এলাম। কারো মুখে কোন কথা নেই শুধু দম বন্ধ করা খিক খিক হাসি। আমাকে দেখে ওদের খিক খিক আরো বেড়ে গেল। কি আর করবো আমিও ওদের খিক খিকে যোগ দিলাম।
No comments:
Post a Comment