জীবনের শত চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আল্লাহ্র অশেষ মেহেরবানীতে কিছুটা স্বস্তিদায়ক স্থির জীবন অতিবাহিত করছি। ১৯৬৮ সালে আমাদের প্রথম বাসা বড় মাঠের ওয়াল এর সাথে ই-টাইপ এর দ্বিতীয় বিল্ডিংটিতে। দুই-তিন বছর পর আমরা হোসেন আহম্মদ পাড়া মস্জিদের লাগোয়া ডি-টাইপের যে বিল্ডিংটি আছে তার সি-ইউনিটে দোতলায় বাসা পাই। কিছুদিন পর আমরা ১৯৭৩ বা ৭৪ সালে সি/১০/এ তে নিচতলার বাসায় চলে আসি। এর পর ৭৬ সালে বাসা পরিবর্তন করে চলে আসি সি/৯/সি এর দোতলায়। যা ছিল কলোনিতে ঢোকার গেইটের সাথে লাগোয়া। যেখানে কেটে যায় আমার জীবনের ১৮টি বছর। যার সাথে মিশে আছে আমার আনন্দ বেদনার অনেক স্মৃতি।
৭৭সালের ১৪ ই এপ্রিল বাংলা ১লা বৈশাখে ঘটে যায় আমার জীবনের এক মর্মান্তিক দূর্ঘটনা। এই তারিখে আমার মা ও মেজবোন সহ মোট ৯জন আত্মীয় স্বজন মেঘনা নদীতে মাইক্রোবাস ডুবিতে মৃত্যুবরন করেন। এর সাথে সাথে শুরু হয় আমার জীবনে সুখ দুঃখের জোয়ার ভাটার আর এক অধ্যায়। আর এই সময়ে আমার বাবার অসীম ত্যাগ ও অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে আমরা এই দুঃখের সাগর পারি দিই, যা সি,এস,এম- কলোনির প্রায় সবারই জানা। ৮৮সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী যখর আমার এইচ,এচ,সি পরীক্ষার টেষ্ট চলছিল তখন আমার বাবার সিভিয়ার হার্ট এটাক হয়। ডাক্তার আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিল। আমি জানতে পারি এ ধরনের রুগিরা ৫ বছরের বেশী বাচে না। শুরু হয় আমার জীবনের অনিশ্চয়তা ও অজানা গন্তবে পথ চলা।
জীবনে চলার পথে শুরুতে স্বপ্ন এবং উচ্চাশা ছিল আমেরিকা গিয়ে এম,বি.এ শেষ করে জীবনকে সুন্দর করে সাজাবো। বাবার এক ছেলে হ্ওয়ার কারনে ও দাদার অনেক সম্পত্তি থাকার কারনে সামর্থেরও কমতি ছিল না। কিন্তু জীবনের বাস্তবতায় ও পিছুটানে আমার সেই উচ্চাশা এবং স্বপ্ন কোথায় যেন হারিয়ে গেল। হয়ে গেলাম দিশেহারা গন্তব্যহীন পথিক, আমার জীবনের সেই উচ্চাকাক্ষা, বাস্তবতার মাঝে পড়ে আমি হয়ে গেলাম অসহায় লক্ষহীন এবং অন্ধকারে পতিত এক পথিক। এরই মাঝে আমার দু,চারটা লাইন আমাকে সব সময় সাহস জুগিয়েছে অন্ধকারে পথ দেখিয়েছে এবং আত্মবিশ্বস নিয়ে চলার শক্তি জুগিয়েছে। আমার সেই দু,চারটি লাইন আপনাদের উদ্দেশ্যে নিবেদন করলাম।
উচ্চাশার মরিচীকা মোর সাথী হয়ে রয়।
নিয়তির পরিহাসে মোর সুখ দ্বার আটা,
তবু পেছনে চাওয়া নয়
নদীতে জোয়ার আসে থেমে গেলে ভাটা।
মোঃ সাইফুল ইসলাম রাকিব
মোবাইলঃ 01819135326
No comments:
Post a Comment