Sunday, October 18, 2015

ঢাকায় গিয়েছিলাম তারিককে ভালবাসা জানাতে


ঢাকায় গিয়েছিলাম তারিককে ভালবাসা জানাতে। আমি, জসিম ভাই, পুলক এবং টিপু। রাতের ট্রেন। এমনিতেই আমার জার্নিতে ঘুম হয়না। তার উপর রাতভর জসিম ভাইয়ের মজার মজার কথা। কমলাপুর পৌঁছানোর আগে বন্ধু রিপনকে ফোন দেওয়ার কথা ছিল। অথচ উল্টো ৫.৩০ থেকে সেই আমাদের ফোন দিয়ে জেনে নিচ্ছিল আমরা কতদূর। যাই হোক সকালে কমলাপুর পৌঁছে বন্ধু রিপন আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। 

রিপনকে বললাম, বাইরে নাস্তা করে তোর বাসায় যাই। ও ভীষন রেগে বলল, তোর ভাবী চিতল পিঠা বানিয়ে রেখেছে। গেলাম রিপনের বাসায়। গরুর মাংস দিয়ে চিতল পিঠা খেলাম আমরা। তারপর সবাই ফ্রেশ হয়ে নিলাম। ভাবী খুব চাপাচাপি করল খিঁচুড়ী খেয়ে যাওয়ার জন। সময় কম, রেজা ভাই অপেক্ষা করছে বলে সবাই রেজা ভাইয়ের অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। রেজা ভাইতো, ভালবাসার ঢালি নিয়ে বসে থাকেন। 


CSM এর কাউকে দেখলে ভালবাসা ঢেলে দেন। আমরাতো চট্টগ্রাম থেকে গিয়েছি। এর মধ্যে আতিক এসে পৌঁছালো। কিছুক্ষন আড্ডা দেওয়ার পরেই দুপুরে খাওয়ার জন্য হাঁটা দুরত্বে রনির(রেজা ভাইয়ের ছোট বোন) বাসায় গেলাম। মেয়েটা তার ভাইদের জন্য অনেক কিছু রান্না করেছে। খাওয়ার সময় বার বার জিজ্ঞেস করছিল, ভাইয়া রান্না কেমন হয়েছে। সেখানে বাবু(রেজা ভাইয়ের ছোট ভাই) এর সাথে দেখা হল। ভাত খেতে খেতে তারিকের ঢাকায় পৌঁছানোতে তাড়াহুড়ো করে পপুলার হসপিটাল-এ পৌঁছলাম। তখনও তারিক আসেনি। 

একে একে csm এর ভাইয়েরা আসছে। রুবেল, সামি, জাবেদ, পুলক, টিপু, আপেল, আরিফ, রাজন, পাপ্পু, রমজান, নাসের এবং আরো অনেকে। যাদেরকে খুব ছোট দেখেছি। তারিক এসে পৌঁছালো। জরুরী বিভাগের ডাক্তার তারিককে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলো। ৬৬০ নং কেবিন বরাদ্দ দেওয়া হলো, তারিকের জন্য। আমাদের দেখে তারিক ভীষণ আনন্দিত। তাকে অসুস্থ বলে মনেই হচ্ছেনা। কেবিনে নেওয়ার পর সবাই আসতে শুরু করল। শায়লা এসেছিল তার বর ও বাচ্চা সহ। জসিম ভাই, রিপন, বাবু, বন্যা ও রনি আসল। শুরু হলো আড্ডা। আমরা যেহেতু রাতের ট্রেনেই চট্টগ্রাম ফিরব। ৭.৩০ এ কেবিন থেকে বের হলাম। বের হওয়ার সময় তারিকের কান্না মনটা ভীষণ খারাপ করে দিল। তারিকের চোখ মুছে দিয়ে বললাম, তোর এত ভাই-বোন থাকতে কাঁদছিস কেন। নীচে নেমে এসে সবাই একসাথে রাস্তায় দাঁড়িয়ে চা খেলাম। 

রনি ও বন্যা আমাদের সাথে দাঁড়িয়ে চা খেলো। একটু পরেই রফিক এসে সবাইকে নিয়ে স্টার কাবাব হাউজ-এ নিয়ে গেল। চা খেতে খেতে বন্যা বলল, নাজমুল ভাই আমি আপনাদের কমলাপুর ষ্টেশনে পৌঁছে দিব। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ড্রাইভার আছে কিনা। বন্যা বলল আমি নিজেই ড্রাইভ করবো। তার কথায় অবাক হলাম, চিন্তা করলাম এত রাতে আমাদের পৌঁছে দিয়ে তাকে আবার একা আসতে হবে। তারপরও নিজেদের স্বাচ্ছন্দের কথা চিন্তা করে রাজি হলাম। পৌঁছানোর পর তাকে যখন ধন্যবাদ দিলাম, বন্যা বলল বড় ভাইদের পৌঁছাতে পেরে আমি আনন্দিত। 

চাকুরীর সুবাদে বেশ কয়েক মাস আমি ঢাকায় ছিলাম। এছাড়াও মাঝে মাঝে আমাকে ঢাকায় যেতে হয়। কিন্তু ঢাকাকে আমার সবসময় বিরক্তিকর শহরই মনে হতো। কিন্তু গতকাল আমার CSM এর ভাই-বোনদের ভালবাসায় ঢাকাকে মোটেই বিরক্তিকর মনে হয়নি। CSM এর ভাই-বোনেরা তোমাদের সবাইকে আমার সালাম ও ভালবাসা জানাই।

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss