Tuesday, October 20, 2015

কিছু পাওয়া আর কিছু চাওয়া



প্রচন্ড অনিচ্ছা সত্ত্বেও ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে আমার প্রিয় মাতৃভূমি ছেড়ে অজানা এক দেশ ইউরোপ এর শান্তপ্রিয় নোবেল এর দেশ সুইডেনে পাড়ি জমিয়েছিলাম উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশের জন্য কিছু করব এই আশায়। তার আগে আমার ক্যারিয়ার এর সবচেয়ে ভাল চাকরিটি ছেড়ে দিয়ে আসা লেগেছিল। এখনো মিস করি আমার ক্যারিয়ার সেরা সেই টেলিকমিনিকেশন এর জবটি কে। কত জেলায় না গিয়েছিলাম এই জব এর কারনে, কত মজাই না ছিল সেই সময়।


যাক যে কথা বলছিলাম, সুইডেনে যেদিন প্রথম নামলাম তখনই আবার চলে যেতে মন চেয়েছিল নিজের মাতৃভূমিতে ...কারন প্লেন যখন ল্যান্ড করছিল তখন নিচে তাকাতেই দেখলাম সুধু সাদা আর সাদা বরফে ঢাকা তার মাঝে প্রচন্ড শীত তাপমাত্রা -৮ টু -১০। তারপরও বাবার কথা ভেবে মনকে বুজ দিলাম, কারন বাবার অনেক ইচ্ছে ছেলে আমার উচ্চশিক্ষা নিক। কি আর করা বাবার ইচ্ছাই জয় হল, থেকে গেলাম সেই যাত্রায়...। সেই থেকে শুরু হল আমার জীবনের এক কঠিনতম নতুন অধ্যায়। শুরু হল নিজের কাজ নিজে করা নতুন রান্না-বান্না শিখা সাথে সাথে লেখাপড়া করা। তারপর ও ভাল লাগত কারন আবার ব্যাচেলর লাইফ ফিরে পেয়েছিলাম বলে, সে এক অন্য রকম অনুভুতি। সেই সুখের আমেজ কাটাতে না কাটাতেই আমার প্রিয়তমা স্ত্রী পরের বছর ভিসা পেয়ে আসল সুইডেনে, তারপরই পরিসমাপ্ত ঘটল বেচারা মাসুদের ব্যাচেলর লাইফ।

এরপর আর পিছনে ফিরে তাকানোর টাইম ছিল না। নতুন দেশ, নতুন মানুষ সবই আস্তে আস্তে ভাল লাগা শুরু হল। সাথে সাথে নতুন নিয়ম কানুনও সুইডিস সরকার অনুমোধন করল এই দেশে পারমানেন্টশিপ নেয়ার। দেশে ফিরে যাবার প্রচন্ড ইচ্ছা থাকলেও নিয়মের বেড়াজাল থেকে আর বেরিয়ে আস্তে পারি নাই সেই দেশ সেরা অ্যাড এর মত...মনে আছে কি এই অ্যাড এর কথা banglalink fisherman advertise। নিচে শেষের দিকে তার লিঙ্ক দিলাম...(জাস্ট ফর ফান)।

চিন্তা করলাম নিয়মের বেরাজালে থেকেই, আমাকে বাহির হতে হবে এই জাল থেকে। সেই নিয়মের আবর্তনে পারমানেন্টশিপ পেলাম এবং সাথে পেলাম আমাদের কলিজার টুকরা একমাত্র ছেলে আতীব হাসানকে।
তারপরও কাজ একটা বাকি ছিল সেটা হল সুইডিস সিটিজেনশিপ, অরে বাবা এমনিতে কি আর পাওয়া যাবে সিটিজেনশিপ... পাক্কা দুই বছর অনেক অপেক্ষা ও ইনভেস্তিগেট (investigate) করার পর আপনাদের সকলের দোয়ায় আমি, আমার স্ত্রী, আর আমার এক ছেলে ও আর এক কলিজার টুকরা আমার কন্যা আরিবা হাসান (যার জন্ম এই বছরের জানুয়ারী তে) এখন সেই জাল ছেড়ে বাহিরে আস্তে পেরেছি অর্থাৎ সুইডিস সিটিজেনশিপ (Swedish Citizenship) পেলাম লাস্ট উএক (last week) এ। আলহামদুলিল্লাহ...। সকলে দোয়া করবেন।

সেই সাথে সাথে আমার প্রান প্রিয় সিএসএম কলোনি কে পেয়ে আমি এখন তিন দেশের বাসিন্ধা(বাংলাদেশ, সুইডেন, সিএসএম)। ইয়েস, সিএসএম আর এখন একটা কলোনি না আমার কাছে এইটা এখন আমার সমস্ত আত্মাজুড়ে। তাই সবার কাছে আমার আকুল আবেদন,
আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে আমরা আর সিএসএম কে হারাতে দিব না যত প্রতিকুলতাই আসুক না কেন আমারা একতাবদ্দ থাকব, ইনশাআল্লাহ। সেই সাথে সকল সিএসএম এর ভাই বোনদের কে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি কারন আপনাদের সক্রিয় অংশ গ্রহন করার জন্যই আজকের এই অনেক স্বাদের, সপ্নের, প্রানের সিএসএম কলোনি অথবা সিএসএম কান্ট্রি।

পরিশেষে সবাই দোয়া করবেন আমাদের তারিক ভাইয়ের জন্য।

ধন্যবাদ সকলকে।

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss