আড্ডা হচ্ছে আতিক ভাই রেজা ভাই আর বুবুর মধ্যে
আতিক খবর শুনছিস ?
কোন খবর রেজা ভাই ?
পাগল দুইটা চিটাগং এ গিয়ে কো কো শুরু করছে ?
রাসেইল্লার পেট রকেটের মতো ছুটছে কিন্তু নইম্মার কি হলো ?
কাল জসিম ফোন করে বলল নইম্মার চোখে পেইন হচ্ছে ?
এই দুইটারে ঢাকা থেকে দৌড়ায় একদম ঠিক করছেন রেজা ভাই , আমারে জ্বালায় মারলো নইম্মা ।
মুহাহাহাহাহাহাহাহহাহাহা ...... ( হেসে উঠলো দারোগা বুবু)
এই জন্য বুবু একটা পার্টি দেন ।
কিন্তু আমাদের সিএসএম টিভি চ্যানেলের কি হবে । টি আর পি তো পরে যাবে ?
রেজা ভাই টেনশন নিয়েন না। নইম্মা আর রাসেল রে দিয়ে দুই দিন ট্রেনিং দেওয়ালেই সব্যসাচী প্রোগ্রাম চালাতে পারবে। ওর মধ্যে একটা পাওয়ার আছে ।
বুবু চেচিয়ে উঠলেন আরে এই কাজ করবেন না রেজা ভাই। ঐ দুই ইতর এর হাতে সব্যসাচী পরলে দুই দিনে অসভ্য হয়ে যাবে grin emoticon
আচ্ছা আগে দেখি পাগল দুইটার কি অবস্থা। জসিম/নাজমুল ওদের টেক কেয়ার করছে ।
হ্যালো জসিম পাগল দুইটার কি খবর ? আছে না গেছে ?
এই তো জমে টানে এক দিকে সিএসএম টানে অন্য দিকে ।
সি এস এম টিভি তো চালাতে হবে কি করবো বল ? আচ্ছা এক কাজ কর সব্যসাচিরে দিয়ে সিএসএম এর কাজ করাতে হবে। ওই দুইটারে দিয়ে সব্যসাচী রে একটু ট্রেনিং করানোর ব্যবস্থা কর ।
আচ্ছা বলছি ।
নাজমুল ভাই এসে আমাদের মধুভাত খাওয়ালো। এখন তোকে মূজাম্মেল ভাইয়ার চেম্বারে নিয়ে যাবো । দুই এক দিনে ঠিক হয়ে যাবি । জসিম ভাই রাসেল রে রাইস স্যালাইন খাওয়ালো । একটু সুস্থ হচ্ছি মনে হচ্ছে ।
যথারীতি শুরু হলো সিএসএম ট্রেনিং ক্লাস, অসুখের মধ্যেও মাফ নাই , কাজের বিনিময়ে খাদ্য কি জিনিষ বুঝতে পারছি
আমাদের স্টুডেন্ট মাত্র দুই জন ইমু & জনি
আমাদের আজ কের সাবজেক্ট চিঠি
ভাইয়া এখন তো কেউ চিঠি লিখে না ? টি আরপি নিচে নেমে যাবে বলে সাবজেক্ট চেঞ্জ করতে বল্লো ইমু
এমা ওয়াটসন দেখো চিঠি তে তুমি যেভাবে তোমাকে প্রকাশ করতে পারবে এস এম এস দিয়ে কোন দিন তা পারবে না। ধরো তুমি অনেক দূরে থাকো অনেক দিন পর তোমার মা কে চিঠি লিখলে । খালাম্মা এই চিঠি পেয়ে একবার স্বাভাবিক ভাবেই পড়বে কিছুক্ষন পরে আবার পড়ে কাদবে, আবার নাজমুল ভাই কে দেখাবে , আবার ঘুমানোর আগে চিঠিটা বেড় করে একটু চোখ বুলাবে। তোমার হাতে লিখার উপর নিজের হাত রাখবে । তোমাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করবে। যা কোন দিন এস এম এস দিয়ে হবে না । চিঠি টা হচ্ছে ভালোবাসার একটা কঠিন মাধ্যম। এইখানে আবেগ থাকে......
বুঝতে পারছি নমি ভাই, আপনি বড় বেশি পকর পকর করেন , একবার ফ্লোর পাইলেই হইলো আর ছাড়তে চান না ।
রাসেইল্লা দেখলি এইটারে দিয়ে হবে। কমু ভাই/ মামুন ভাইদের সমানে পচানি দেয়া যাবে
আচ্ছা টি ব্রেক দিলাম । রাসেইল্লা ওয়াস রুম থেকে ঘুরে আয়। পরের ক্লাস তুই নিবি ।
জসিম ভাই অনেক কষ্ট করছেন আমাদের জন্য। বেচারা আমাদের ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাওয়া হতে শুরু করে ট্রেনিং পর্যন্ত সব জায়গায় আমাদের নিয়ে আসছেন। জসিম ভাই কে নিয়ে একটা প্রোগ্রাম করতেই হবে।
ক্লাস শুরু । আমাদের ডিন স্যার রাসেইল্লা লেকচার শুরু করলেন
সব্যসাচী তুমি নিজেকে একটু জাগিয়ে তুলো। নিজেকে ভাঙ্গো। ইমু অনেকটা রেডি হয়ে গেছে ।
কি ভাবে রাসেল ভাই ? ভাংলে ব্যাথা পাবো তো
ফিস ফিস করে রাসেইল্লা রে বললাম বারুদ এর মধ্যেও আছে দেখলি
চিঠি নিয়ে নমি হাল্কা লেকচার দিয়েছিল , ব্যাটা একটু কম বুঝে বলে ডিটেইলসে যেতে পারে নাই । আমি ডিটেইলস এ যাচ্ছি।
আমিও ইমুর সাথে এক মত চিঠি কেন ? ভালো লাগছে না । এখন কি লাভ লেটার কেউ লিখে ?
এখন কেউ লিখে না বলেই প্রেমের আবেদন টা কমে এসেছে । আজ তুমি সোনম রে এস এম এস দিচ্ছো সে রিপ্লাই না দিলে দিচ্ছো কারিনারে। এইখানে ও রেসপন্স না হলে আরেকজন কে খুজে নিচ্ছো। তুমি যে ব্যর্থ হচ্ছো এইটা তোমাকে স্পর্শ করছে না । কারন এই যন্ত্রের ভিতর আবেগ ঢুকিয়ে দেয়া যাচ্ছে না, তুমি চিঠি লিখে যেভাবে নিজেরে প্রেজেন্ট করতে পারবে তা ইমেইল দিয়ে পারবেনা। তুমি একটা কবিতা লিখে তোমার ঐশ্বরিয়ারে দাও সে রিফিউজ করলে কিংবা এক্সেপ্ট করলে দেখো কেমন লাগে ? বুক ফেটে চৌচির হয়ে যাবে । কিন্তু এই এস এম এস / ইমেইল এর দরকার নাই তা কিন্তু বলছি না। আবেগের জায়গায় কখনো যন্ত্র দিয়ে হয় না ।
আরেকটু ডিটেইলস বলেন রাসেল ভাই
ধরো আমাদের জসিম ভাই। তার প্রেম পুর্নতা পেয়েছে চিঠির মাধ্যমে। একটা চিরকুট পুরা জীবন কে আনন্দের সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে। সে দিন যদি চিরকুট না দিয়ে ভাবি একটা এস এম এস দিতো তা যদি ইথারে হারিয়ে যেতো কিংবা জসিম ভাই এর সিম চেঞ্জ করার কারনে মিস হয়ে যেতো আমরা কি ইতিহাসের একজন বিখ্যাত প্রেমিক যুগল কে হারাতাম না?
কিন্তু চিঠি ও তো মিস হতে পারতো ?
চিঠি মিস হলেও অপসন হিসেবে বার্তাবাহক ছিল । এস এম এস মিস হলেও ফ্রেন্ড দের দিয়ে ম্যাসেজ দেয়া যায় কিন্তু তখন ব্যাপারটা আবার সেই যন্ত্র থেকে বেড় হয়ে আসার প্রক্রিয়াতে চলে আসা হলো
বুঝতে পেরেছি। এই জন্যই কি আমাদের আরেক জন জসিম ভাই সৃষ্টি হয় নাই ?
ঠিক তাই। জসিম ভাই যেভাবে যুদ্ধ করে বিজয়ের হাঁসি টা হেসেছেন এই রকম যুদ্ধ করতে আমি কখনো কাউ রে দেখি নাই। ঐ যে পাশে দাঁড়িয়ে আছে ঐ ভদ্রলোক সারা জীবনে একটা মেয়ের নেক নজর এসে পরে নাই ঐ টার উপর
রাসেইল্লা আমারে কিছু কইলি ?
না মামা তোর রুপের প্রশংসা করতেছি
চিঠির ভাষা কি রকম হবে?
আমার পেটে মিস কল দিচ্ছে আমি আর থাকতে পারছি না নমি লিকসার (লেকচার) দে ?
চিঠির ভাষা সহজ হতে হবে , মেয়েরা একটু হাম্বা টাইপের হয় কঠিন ভাষায় কিছু লিখলে বুঝবে না । তুমি তোমার চিঠিতে নিজেরে প্রেজেন্ট করবে। প্রেম ভালোবাসায় পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ টুকু খুব জরুরি । জসিম ভাই এই শ্রদ্ধাবোধ টুকু রাখতে পেরেছেন বলে আমাদের কাছে উনি শ্রেষ্ঠ প্রেমিক হিসেবে উপাধি পেয়েছেন
কিন্তু কি ছিল সেই সি এস এম – এর ইতিহাসে ঠাই পাওয়া চিরকুটে ?
“ আমি জানি না কাল কি হতে যাচ্ছে ?
হয়তো একটি হারিয়ে যাচ্ছে একটি জীবন
হয়তো নতুন করে শুরু হবে আমাদের জীবন
হয়তো এই ভুবনে আজই আমাদের শেষ চিঠি
হয়তো এই চিঠিই আমাদের বেচে থাকার প্রেরনা হয়ে উঠবে
আমি জানি না কাল কি হতে যাচ্ছে?
যাই ঘটুক আমি জানি তুমি কি ? আমাদের ভালোবাসা কি ?
ভালো থেকো সব সময়, অন্তত আমার জন্য ’’ ( কাল্পনিক)
জসিম ভাইয়ার এই (কাল্পনিক) চিঠি কে দাঁড়িয়ে সম্মান জানালো ইমু/ জনি । তারপর আর কিছু বলার থাকে না। আমি যখনি রোমান্টিক কোন গল্পে হাত বুলাই সবার আগে আমার জসিম ভাইয়ার নামটা ভেসে উঠে। হয়তো সবাই এইভাবেই আমাদের জসিম ভাই কে কল্পনা করে।
No comments:
Post a Comment