Saturday, December 12, 2015

এটা আমার নানুর বাড়ী


ছোট বেলায় বার্ষিক পরীক্ষার শেষে যখন নানুর বাড়ী ঢাকায় বেড়াতে যেতাম- তখন অন্যান্য খালাতো ও মামাতো ভাই ও বোনেরা আসতো। নানুর বাড়ীতে হতো আমাদের বাৎসরিক মিলন মেলা। আমার ব্যবহারে তারা অসন্তুষ্ট হলে- নানীকে যেয়ে না বুঝে তারা বলতো- এটা আমার নানুর বাড়ী। 

মিয়া ভাইকে চলে যেতে বলো। আমার নানী তখন হাসির ছলে বলতো-নানু ভাই, আমার পাঁচ আঙ্গুলের যেটাকেই কাটি, সেটার থেকেই রক্ত বের হবে সুতরাং আমি কোন আঙ্গুলই কাটতে পারবো না। তাহলে আমি ব্যাথা পাবো। সুতরাং আমাদের যে কোন কিছু ধরে রাখতে পাঁচটা আঙ্গুলের দরকার আছে। হয়তো আঙ্গুল গুলো ছোট-বড় কিন্তু কাজের দিক থেকে কোন টারই অবদান কম নয়।


ছোট বেলায় যখন আমরা নতুন হাটতে শিখি তখন কিন্তু আমরা পড়ে যেয়ে ব্যাথা পেলেও হাটা শিখার ইচ্ছা টাকে বাদ দিই না, উঠে আবার নতুন করে হাটার চেষ্টা করি। এভাবে এক সময়ে হয়তো আমরা ভালো ভাবে হাটতে শিখে যাই। মাসুমের ক্ষেত্রেও হয়তো তেমন একটা কিছু হয়েছে বলে আমি মনে করি। প্রথম দিকে দেখতাম সে শুধূ লাইক দিতো। তার পর সে লিখা শুরু করলো। নতুন গাড়ীচালকের মতো সে হয়তো ভুল করে বসলো। হয়তো, সে লেখার ভাষার সাথে মনের ভাষার সামঞ্জস্য ধরে রাখতে পারে নি। তার আপন ভাই জসিম আমাদের ক্লাসমেট ছিলো। অসম্ভব রসিক ও প্রানবন্ত ছিলো সে। তার ভাই হয়ে মাসুম খুব একটা খারাপ হবে বলে আমার মনে হয় না। এখন শুধু সময়ের ব্যাপার, কারণ সময়ই আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষক।

এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যাক্তি রোদ-ঝলমলে এক সকালে একটা সুন্দর ভবনের সিড়িতে বসে আছে। তার সামনে একটা কাগজে বড় বড় অক্ষরে লেখা, আমি অন্ধ, আমাকে একটু সাহায্য করুন। মার্কেটিংয়ের একজন লোক সেই সিড়ি দিয়ে উঠছিলেন। তিনি দেখলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধি ব্যক্তিটির সামনের হ্যাটটায় মাত্র একটি আধুলী পড়েছে। তিনি ভবনের কাজ সেরে ঘন্টা দুয়েক পরে নামলেন। দেখলেন, ঐ একটা আধুলীই পড়ে আছে টুপিতে। তিনি তখন কাগজের বোর্ড টা হাতে নিয়ে নিজের পকেট থেকে মার্কার কলম বের করে কাগজের উল্টো পিঠে লিখলেন, “আজকের দিনটা খুব সুন্দরকিন্তু আমি তা দেখতে পারছি নাতিনি কাজে বেরিয়ে গেলেন। ঘন্টা দুয়েক পরে ফিরে এসে দেখলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিটির টুপিটা টাকায় টাকায় ভরে গেছে। এই উদাহরন টা এজন্য দিলাম- ফেসবুক বন্ধ হওয়ার আগে- বালিকা ও মাসুমের পরবর্তী কমেন্ট গুলিতে কেউই ধর্য্যের পরিচয় দেয় নাই বলে আমার মনে হয়।

আর জনি..! আমি তো ওর দারুন ভক্ত। ওর কমেন্ট গুলি পড়ে মন ভরে যায়। আমি আগে কমেন্ট করতাম না। কিন্তু জনির কমেন্ট গুলি দেখে, আগ্রহে আমি মোবাইলে বাংলা সফ্টওয়ার লোড করলাম। ছোট কালে যখন বাগান করতাম- তখন মরিচ, টমাটোর চারা লাগানোর কয়েকদিন পর দেখতাম- হয়তো কোন কোন গাছ পানি অথবা রৌদ্রের কারণে দূর্বল হয়ে অকালে ঝরে যাচ্ছে। তখন গাছটাকে তুলে না ফেলে বাচানোর জন্য সঠিক উপায় বের করার চেষ্টা করতাম।
আর বুবু তো বুবুই..! বালিকা, এতই সবার আপন তার সমন্ধে আমার কিছু লেখার সাহস নাই। শুদু এইটুকু বলবো,-“মায়ের দুধের যেমন কোন বিকল্প নাই, তেমনি আমাদের সি, এস, এম, এও বালিকার কোন বিকল্প নাই


একটি মানুষকে অন্য একটি মানুষের ভালো লাগার পিছনে বিভিন্ন কারণ থাকে এবং তার মধ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণ অন্যতম। তাছাড়া মানুষটির ব্যাক্তিগত গুনাবলী একটি বিশেষ আকর্ষন। আমার ধারনা- সিএসএম কলোনী ও পেজটাকে ভালোবাসতে পারলে কানা, খোঁড়া, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ভালোমন্দ সব মানুষকেই ভালোবাসা সম্ভব। মানুষ তার পোষা বিড়ালটিকে যতটুকু ভালোবাসে, অন্য মানুষকে যদি ততটুকু ও ভালোবাসতে পারতো, তাহলে এক মানুষ কখনো অন্য মানুষের সাথে ঝগড়াঝাটি করতে পারতো না এবং দূর হতো সব ভেদাভেদ, বন্ধ হতো কথা ছুড়াছুড়ি এবং স্বর্গ নেমে আসতো আমাদের সিএসএম এর পেইজটাতে।

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss