Thursday, December 3, 2015

"কলোনী ও কান্না - ৩"


২৯শে এপ্রিল ১৯৯১ এর ভয়ংকর ঘুর্নিঝড়ের সময় আমরা ছিলাম F/2 বিল্ডিংয়ে নীচ তলায় এই দিন আর রাতের বিস্তারিত সবকিছু সবারই জানা আমার এই ঘটনাটা এর / দিন পরের বন্যার পর নিচতলায় যাদের বাসা ছিলো, বাসায় থাকার মত পরিস্থিতি মোটেও ছিলো না কারো এমতবস্থায় বন্যার পরদিন আমরা উঠলাম F-1-10 নাম্বার বাসায় বাসাটি ছিলো বাতেন কাকার তিনি একাই থাকতেন, তার পরিবারের সবাই থাকতো সন্দ্বীপ

পরদিন আমরা বাতেন কাকার বাসায় উঠার পর যা দেখলাম, তিনি অস্থির হয়ে আছেন, কখন সন্দ্বীপ যাবেন, তার পরিবারের মানুষের জন্য তিনি ছিলেন খুবই চিন্তিত শুধু তিনি চিন্তিত ছিলেন বললে ভুল হবে, বিল্ডিংয়ের সবাই চিন্তিত ছিলেন কারন তখন সন্দ্বীপে তার পরিবারের লোকজন কি অবস্থায় আছে, তা খবর নেওয়ার কোন উপায় ছিলো না তিনি তড়ি-ঘড়ি করে চলে গেলেন সন্দ্বীপ কিভাবে গেলেন জানি না!!! তবে ছুটে গেলেন


বাতেন কাকা যাবার দুই দিন পর খবর এলো, বাতেন কাকা তার বাড়ী থেকে চট্রগ্রাম আসার সময় লঞ্চে উঠার সময় বজ্রপাতে মারা গেছেন !!!!

এমনিতেই প্রতিদিন বন্যার বিভিন্ন করুন আর মর্মান্তিক ঘটনা শুনে, দেখে সবাই আতঙ্কিত, মর্মাহত, বিস্মিত এর মধ্যে এমন একটা দুঃখ জনক খবর !!!!! খবরটা বিল্ডিংয়ের এবং কলোনীর সবাইকে আরো বেশী চিন্তিত করে তুললো ঘটনা কতটুকু সত্যি তা জানারও কোন উপায় নেই তাৎক্ষনিক ভাবে সবচেয়ে বেশী চিন্তিত ছিলাম আমরা, কারন যার বাসায় উঠলাম, পরিবারের খবর নিতে গিয়ে তারই এমন করুন পরিনতি !!!!

পরদিন সঠিক খবর এলো, বাতেন কাকা লঞ্চে উঠার সময় বজ্রপাতে মারা গেছেন তবে F-1-10 বাতেন কাকা না, মার গেছেন F/2 বিল্ডিংয়ের আরেক বাতেন কাকা তিনিও বন্যার পর তার পরিবারের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন, তার বাড়ীও ছিলো সন্দ্বীপ

যেই বাতেন কাকাই মারা যান না কেন, ঘটনাটা ছিলো কলোনীর সবার জন্য খুবই দুঃখ জনক

আসলে মানুষের জীবনে মৃত্যু কখন কিভাবে আসে কেউ বলতে পারে না এটা ছিলো ১৯৯১ সালের বন্যায় আমাদের কলোনীতে মারা যাওয়ার তৃতীয় ঘটনা

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss