Thursday, December 3, 2015

গতকাল টিভি নিয়ে একটি নষ্টালজিক লেখা পোষ্ট করেছিলাম


গতকাল টিভি নিয়ে একটি নষ্টালজিক লেখা পোষ্ট করেছিলাম এরপর থেকে মাথায় অনেক কিছু ঘুরছিলো।
সেই আমলে বাড়ির বড়দের মুখে মুখে আলোচিত একটি নাটক ছিলো সকাল সন্ধ্যা এবং এর পরে ঢাকায় থাকি সিরিয়াল।

সকাল সন্ধ্যা একটি বাংলা ধারাবাহিক নাটকের নাম। ১৯৮০-র দশকের শুরুতে এটি বিটিভি-তে সম্প্রচার হয়। প্রধান চরিত্রে ছিলেন পীযুষ বন্দোপাধ্যায় এবং আফরোজা বানু । তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাটক ছিলো এই সকাল সন্ধ্যা। আরেক ধারাবাহিক নাটক ঢাকায় থাকিতে অভিনয় করেছিলো ডাব্লিউ আনোয়ার পরে বাংলা সিনেমাতে আলীরাজ নাম নিয়ে অভিনয় করেন আর ছিলেন আমাদের তারানা ম্যাডাম (বর্তমানে ফেসবুক রিলেটেড প্রতিমন্ত্রী)। শুকতারা নামে আরেকটি ধারাবাহিক নাটক প্রচারিত হতো তখন, অবশ্য সেটি ছিলো যথেষ্ঠ সমালোচিত, সমসাময়িক কালে সময় অসময় নামে আরেকটি ধারাবাহিক নাটক ছিলো যেখানে রাইসুল ইসলাম আসাদের ন্যাড়া মাথায় মধু পাগলা চরিত্রের অভিনয় এখনো চোখে ভাসে।


এর পরের সময়গুলোতে আরো অনেক নাটক বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়ে ছিল ।
..এই সব দিনরাত্রি. বহুব্রীহি, সংশপ্তক, , কোথাও কেউ নেই, বারো রকমের মানুষ, ইত্যাদি। এইসব দিন রাত্রিতে টুনীর মৃত্যু সবাইকে নাড়া দিয়ে গিয়েছিলো,।
বহুব্রীহির ফরিদ মামা চরিত্রে আলী যাকেরের অভিনয় কিংবা আবুল হায়াতের বহিস্কার হও সংলাপ এখনো কানে বাজে। 

প্রায় ঈদেই আমজাদ হোসেনের ফানি নাটক জব্বর আলি সিরিজ পাওয়া যেত (সব ঈদে নয়)। আনন্দমেলা ছিল ঈদের প্রধান আকর্ষণ এবং যথারীতি নিরানন্দের। তখন এক একটা নাটক ছিল প্রায় এক ঘন্টার আর প্রতি সপ্তাহে নাটক ছিল মাত্র দুটা।আর বিজ্ঞাপনের অত্যাচার ছিলোনা বলতে গেলে। আর তাই ভাল ভাল নাটকের প্রতিযোগিতা চলত সেই সময়ে। 

সংশপ্তক নাটকে হুমায়ুন ফরিদির এবং ফেরদৌসি মজুমদারের দুর্দান্ত অভিনয়
কোথাও কেউ নেই নাটকে আসাদুজ্জামান নুর সে সময় একটা স্টাইল ক্রিয়েট করেছিলেন... বাইকের চাবিটা একটা চেন এর মাথায় লাগিয়ে হাতের আঙ্গুলে ঘুরানো... যেটা রাস্তায় অনেক কেই দেখা যেত। যে রাতে মেংগলবার) এ নাটকটি থাকতো সে রাতে রাস্তা ঘাট খালি হয়ে যেতো। এ নাটকটি দেখার জন্য সবাই অধীর আগ্রহে বসে থাকতো
আজ রোববার হুমায়ুন আহমেদের আরেকটি ক্রিয়েশন। যেখানে তিতলি ভাইয়া, কংকা ভাইয়া... বড় চাচা না কফিনের মধ্যে শুয়ে আছে। ফানি সব ক্যারেক্টার। 

আনিস চরিত্রে জাহিদ হাসানের অভিনয় ছিলো দুর্দান্ত। আমি কলোনিতে থাকাকালীন সময়ে দু একটি ছোট খাটো নাটক করেছিলাম, সেখানে আমি জাহিদহাসান কে ফলো করার চেষ্টা করতাম।

অয়োময়ের জনপ্রিয়তা আলাদা করে বলার মত। আসাদুজ্জামানের অভিনয়ের তুলনা শুধু তিনিই ছিলেন।
এ সব নাটকরে সংলাপ গুলো অনেকদিন ধরে ছেলে বুড়ো সবার মুখে মুখে ফিরতো।
পরের সময়টায় ... আমরা ছোট পর্দার নায়িকা হিসেবে পাই বিপশা হায়াত....শমী কায়সার... আর আফসানা মিমিকে। বিপাশার একটা ইনোসেন্ট লুক ছিল ... শমীর অভিনয় ছিল দুর্দান্ত ... আর আফসানা মিমি? তাকে দেখলেই মনে হতো স্কুল থেকে ফির'ল মাত্র ;। এদের সমসাময়িক ছিলেন বিজরি বরকতুল্লাহ।

বিটিভির দাপুটে অভিনেতাদের মধ্যে প্রথমেই আফজালের ক্রেজ ছিল মেয়ে মহলে ... হুমায়ুন ফরিদীর দুর্দান্ত অভিনয় আর আসাদুজ্জামান নুরের অবস্থান ছিল স্ব-মহিমায় উদ্ভাসিত।এক সময় আসেন শহীদুজ্জামান সেলিম। তখন মেঘনা নামের একজন টিভি নায়িকা ছিল। যিনি এখন আর টিভিতে আসেন না। আর বিশেষ ভাবে ছিলেন সুবর্না মুস্তাফা। আলি যাকের .. সারা যাকের... আবুল হায়াত... আবুল খায়ের... পীযুষ... আসাদ ... খালেদ খানদের অভিনয় ছিল সত্যি দেখার মত।

বর্তমান প্রজন্মের জন্য মায়াই লাগে... তাদের কপালে এইসব আর জুটবে না।

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss