খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে ঘুমিয়ে থাকা আদৃতা - আজানের মার কপালে আলতো করে চুমু খেলাম। বৌ আমার এতো অল্প স্পর্শেই সাড়া দিবে ভাবিনি। ঘুমের ঘোরে আড়মোরা দিয়ে তাকানোর সাথে সাথেই বললাম "Happy Samee's Day. বৌ বোধহয় ইলেক্ট্রিক সকড খেল আর বসে বললো কি বললে? একই কথা আবার রিপিড করলাম। বৌ আমার পুরো সময়টাই মাটিতো না এক্কেবারে কাঁদাযুক্ত এটেল মাটি করে দিয়ে বললো কি ব্যাপার এই বুড়া বয়সে মনে হয় ভালবাসা মন ডিঙ্গিয়ে উপছে পড়ছে! ব্যাপারটা কি? আর ভ্যালেন্টাইন সাহেব কে কই পাঠায়া দিয়া ওই আসনটা নিজে দখল করলা? বুঝলাম আমরা সবাই valentine শুনতে শুনতে অভ্যস্ত। কাজেই উলটা সিধা করলে খবর আছে। সকালটা শুরু হলো এই ভাবেই।
আদৃতা, প্রিয়ন্তি আর মিথিলাকে স্কুলে দিয়ে আসার সময় স্কুলের গেটের সামনেই দেখলাম ছোট্ট এক বাচ্চা ছেলে গোলাপ আর রজনীগন্ধা একটা ঢালায় সাজিয়ে নিয়ে বসে আছে। তখনি ভাবলাম বৌতো ভালবাসার মর্ম বুঝলো না তাই ছেলে মেয়ে গুলাকেই ভালবাসা উজার করে দেই। বাসায় এসে আদৃতা আজানের মাকে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললাম ওদেরকে নিয়ে আসার সময় গোলাপ কিনে দিও আর বাকি টাকা দিয়ে বেলপুরি, ফুচকা বা চকোলেট কিনে দিও। আমি ঘর থেকে বেরোনোর আগেই ওদেরকে নিয়ে বৌ আমার হাজির। প্রত্যেকের হাতে একটা করে গোলাপ দেখলাম আর বাসায় থাকা আজান আর জাওয়াদের (নেছারের পুচকু) জন্যও এনেছে। আদৃতা, প্রিয়ন্তি, মিথিলা, আজান আর জাওয়াদ সে কি খুশী ফুল পেয়ে। ওরা ফুল নিয়ে সেল্ফি তুলছে আবার কেউ পানির বোতলে রেখে দিচ্ছে। যদিও ওরা জানে না "ভ্যালেন্টাইন ডে" টা কি?
বৌকে আহ্লাদ করেই বললাম আমারটা কই? আদৃতা আজানের মা খুব সুন্দর একটা হাসি দিয়ে (খিলখিল করে হাসলে বৌটাকে খুব সুন্দরই লাগে, মাঝে মধ্যে আমি তাকিয়ে অবাক হয়ে যাই) বললো "ওহো আদৃতা আজানের বাবা তোমার জন্য স্পেশাল কিছু একটাতো আছেই" বলেই ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে এক থোঁকা এতো গুলা কুমড়ো ফুল বের করে দুস্টুমীর ছলে বললো "উইল ইউ বি মাইন ফরএভার আদৃতা আজানের বাবা এন্ড লাভ মি এজ ওয়েল দি সেম ওয়ে ইউ আর"।
বুঝতে পারলাম ভোরে বৌটা আমার ইচ্ছে করেই আমার ভালবাসা না বোঝার ভান করে মজা করেছে। বৌটাকে বলছি "কৃষ্ণচূড়া সারাজীবন থাকবো তোমাদের পাশে, যেমনটা ছিলাম গত ১০টা বছর। আমার হৃদপিন্ডের তিনটা টুকরোতো তোমরা তিনজন।"
No comments:
Post a Comment