Wednesday, March 2, 2016

নানাভাই চলে গেলেন না ফেরার দেশে


নানাভাই চলে গেলেন না ফেরার দেশে।হতবাক হয়ে বসে আছি।এটা কীভাবে সম্ভব??২৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টায় নানাভাইকে নাস্তা দিলাম।খুব পছন্দ করেছেন সেদিনের নাস্তাটা।পাউরুটি, মাখন,জেলী,নোসিলা আর সাথে চা।নাস্তা খেয়ে নানাভাই ঔষধ খেলেন।খেয়ে এরপর ১০:৩০ টার দিকে আমাকে ডেকে বললেন যেন দুপুরবেলা ১টায় ডেকে দেই।ঘুম থেকে উঠে গোসল করে নামাজ পড়বেন।জলজ্যান্ত মানুষ ঘুমাতে গেলেন।দুপুরবেলা ১টায় নানাভাইকে দুইবার ডাক দিলাম,উঠলেননা।আমি পড়ার টেবিলটা গুছাচ্ছিলাম।

তখন দুষ্টামি করে বললাম, "তুমি প্রতিদিন সকালে একবার ডাক দিলেই আমি উঠে যাই,তুমি তো উঠলানা" বলে মশারী তুলে নানাভাইয়ের গায়ে হাত রাখলাম।ঠান্ডা বরফের মত হাত।বাসায় লিমন মামা,চিৎকার করে মামাকে ডাকলাম। মামা এসেও নানাভাইকে উঠাতে পারলোনা।মানুষটা ঘুমের মাঝেই কাউকে না জানিয়ে চলে গেলেন।মৃত্যুভীতি ছিল নানাভাইয়ের মাঝে অনেক।সারাজীবন আল্লাহ্‌ তায়ালার কাছে দোয়া করেছেন যেন আল্লাহ্‌ তাকে ঘুমের মাঝে নেন।আল্লাহ্‌ উনার কথা রেখেছেন।যেই মানুষটার হাত ধরে হাটতে শেখা,লেখাপড়া শেখা,জীবনের পথে চলতে চলতে শেখা- সেই মানুষটা আজ আর নেই।


নানাভাইয়ের কবরটার একটা ছবি তোলা হয়েছিল।কবরটা দেখে মনে হচ্ছে স্বর্ণ দিয়ে ভরা একটা কবর,কী সুন্দর ঝলমলে একটি জায়গা,যেখানে আমার নানাভাইকে রেখে এসেছি। নানাভাইয়ের ঘুমের মাঝে চলে যাওয়া,সুন্দর একটি কবর খোড়া - এ যেন আল্লাহরই ইশারা যে আমার নানাভাইকে তিনি ইনশাআল্লাহ্‌ জান্নাতবাসী করবেন।নানাভাই ছোটকালে বলেছিলেন, "নানা,চিন্তা করবানা,আমি তোমার নানা জীবনের শেষদিন পর‍্যন্ত তোমাদের সাথে থাকবো।" নানাভাই উনার ওয়াদা রেখেছেন। জীবনের শেষ দিন পর‍্যন্ত আমাদের সাথে থেকেছেন।নিজের জানটা দিয়ে আমাদের তিন বোনকে আদর করেছেন।

নানাভাই,যেখানেই থাকোনা কেন,আমাদের সাথে থেকো আর ভালো থেকো।এই দুনিয়াতে আর তোমার সাথে আমার গল্প বলা হবেনা,আল্লাহ্‌ চাইলে আখিরাতেই তা সম্ভব।আমার জীবনের শেষদিন পর‍্যন্ত তোমার জন্য আমি দোয়া করবো।একটাই আফসোস আমার,আমাকে আর কেউ তোমার মত ভালোবাসবেনা,আদর করবেনা। তাও তুমি অনেক ভালো থাকো,সবসময় ভালো থাকো।

No comments:

Post a Comment