কবি সুভাষ চট্টপধ্যায় লিখেছিলেন-ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত। তাকে শ্রদ্ধা জানাই। কারণ বসন্ত আসার জন্য তিনি কোন ফুলের জন্য অপেক্ষা করেন নি। বসন্ত তার আপন ইচ্ছায় এসে সময় মতো চলেও যাবে। কিন্ত আজকাল তা হবার উপায় নেই। বসন্ত আসার আগে বুটীক দোকান গুলো হলুদ শাড়লি পসরা সাজাবে। কিশোরী তরুনীরা লাল হলুদ পোষাক পরে চুলে, হাতে গলায় লাল হলুদ ফুলের মালা পরবে তবেই না বসন্ত এসে পৌছাবে। তার আগে বসন্ত আসা চলবে না। একই ভাবে, পহেলা বৈশাখ আসতে হলেও বিরাট আয়োজন। তা নববর্ষ বলে কথা-একটু আয়োজন তো লাগেই। লাল পাড় সাদা শাড়ী, পায়জামা পাঞ্জাবী, পান্তাভাত না হলে বৈশাখ ঠিক জুতসই ভাবে এসে পৌছাতে পারে না। আমরা যারা অর্ধশাতাবব্দী বয়স পেরিয়ে এসেছি তাদের কাছে ব্যাপারগুলো কেমন যেন আরোপিত মনে হয়। এই ইট কাঠের জীবনে, সাফল্য আর অর্থ উপার্জনের প্রতিযোগীতার প্রকৃত ফুল গাছ চেনার সময় কই? পুরো ব্যাপারটাই বাণিজ্যিক আর বিপনন। তাইতো বুঝে না বুঝে কী ভয়ানক ভুল শেখাচ্ছি পরবর্তী প্রজন্মকে।
ঢাকা চট্টগ্রাম ও বড় শহরগুলোতে বিনোদনের কি যে অভাব তা এগুলো দেখে বুঝা যায়। আমাদের সন্তানেরা গাছ, পাখি চেনে না। কাক আর চড়ই গোলাপ আর জবা ছাড়া অন্য কোন কিছুর নাম বলতে পারবে কিনা সন্দেহ। দুই মেয়েকে নিয়ে কয়েক শুক্রবারে-খিলগাঁও বাজারে গিয়াছিলাম। পায়ে কাদা ও ঘামে-রৌদ্রে চেহারা কলো হওয়াতে-বউ আমার বংশতুলে যা বললো-তা না লিখলে মনে হয় ভাল। বিকল্প হিসাবে-মাছ, ফুল বিভিন্ন ধরনের বই এনে মেয়েদেরকে শিখালাম। দুধের সাধ কি আর ঘোলে হয়-আগোরায় গিয়ে মাছের ফ্রিজের সামনে দাড়িয়ে আমার কন্যা আইর মাছ দেখিয়ে বললো-বাবা এই শিং মাছটা নাও। আমি বিরক্ত হয়ে জানতে চাইলাম-
এটা শিং মাছ কে বললো?
-কেন ছবিতে দেখেছি শিং মাছের গোফ থাকে,-কন্যার নির্লিপ্ত উত্তর। সর্বনাশ।
কিছু দিন আগে মামাতো ভাইয়ের বাড়ীতে বেড়াতে গিয়াছিলাম। শুনি, ভাইজি পড়া মুখস্ত করছে--- মা এর ভাইকে মামা বলেএএএ------- মায়ের বোন কে খালা বলেএএএ--------। আমিতো অবাক!
-সেকিরে? মামা খালা কাকে বলে সেটা বই পড়ে শিখতে হবে?
ভাই বউ বললো- ভাইয়া, বই পড়ে শিখতে হয়, আমার তো ভাই বোন নেই, তাই ও জানবে কি করে মামা কে আর খালা কে?
ওর কাছে সবাই আংকেল আর আন্টি
ফার্মের মুরগীর খাচারমত-বদ্ধ ফ্ল্যাট বাড়ীতে তাদের বসবাস!
সত্যি আমাদের আমলের বিশাল-সিএসএম কলোনীর পরিবারতো আর নেই। যেখানে বড় মেজ সেজ নোয়া ছোট খালা মামা চাচা ফুফুরা থাকতেন আর তাদের এক সমুদ্র আদরে আমরা ভেসে বেড়াতাম। আজকাল শিশুদের জন্য আমার সত্যি মায়া হয়। ব্যস্ত বাবা মা, উদাসীন কাজের বুয়া, আর কম্পিউটারের ভার্চুয়াল জগত ছাড়া এদের আর কেউ নেই। কেউ ফেসবুকে আপডেট দিল-‘‘আমার পা ভেঙ্গে গেছে”------ সংঙ্গে সঙ্গে 91টা লাইক পড়ল। কিন্ত কেউ দেখতে আসল না হায় কী নিসঙ্গ এই জীবন।
আমাদের এ অপুর্ব এই সুন্দর দেশে নানা রং নিয়ে আসে নানান ঋতু, অজস্র ফুলের অসংখ্য রং, প্রতিদিন সুর্য উঠে অস্ত যায় ভিন্ন ভিন্ন রং এর খেলায়। আমাদের সন্তানেরা এত রং ফুল পাখি মাছ প্রকৃতি চিনতে শেখেনি। কারণ আমরাই তাদের প্রতিষ্ঠিত হবার ইদুর দৌড়ে লাগিয়ে রেখেছি। পলাম শিমুল বকুল বেলী জারুল তারা চিনতে পারে না, রুই মাছ আর শিং মাছের তফাত বোঝে না। না শিখুক, কোন না কোন দিন শিখে নিবে------কবি সুভাষ চট্টপধ্যায় লিখেছিলেন-ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত। তাকে শ্রদ্ধা জানাই। কারণ বসন্ত আসার জন্য তিনি কোন ফুলের জন্য অপেক্ষা করেন নি। বসন্ত তার আপন ইচ্ছায় এসে সময় মতো চলেও যাবে। কিন্ত আজকাল তা হবার উপায় নেই। বসন্ত আসার আগে বুটীক দোকান গুলো হলুদ শাড়লি পসরা সাজাবে। কিশোরী তরুনীরা লাল হলুদ পোষাক পরে চুলে, হাতে গলায় লাল হলুদ ফুলের মালা পরবে তবেই না বসন্ত এসে পৌছাবে। তার আগে বসন্ত আসা চলবে না। একই ভাবে, পহেলা বৈশাখ আসতে হলেও বিরাট আয়োজন। তা নববর্ষ বলে কথা-একটু আয়োজন তো লাগেই। লাল পাড় সাদা শাড়ী, পায়জামা পাঞ্জাবী, পান্তাভাত না হলে বৈশাখ ঠিক জুতসই ভাবে এসে পৌছাতে পারে না। আমরা যারা অর্ধশাতাবব্দী বয়স পেরিয়ে এসেছি তাদের কাছে ব্যাপারগুলো কেমন যেন আরোপিত মনে হয়। এই ইট কাঠের জীবনে, সাফল্য আর অর্থ উপার্জনের প্রতিযোগীতার প্রকৃত ফুল গাছ চেনার সময় কই? পুরো ব্যাপারটাই বাণিজ্যিক আর বিপনন। তাইতো বুঝে না বুঝে কী ভয়ানক ভুল শেখাচ্ছি পরবর্তী প্রজন্মকে।
ঢাকা চট্টগ্রাম ও বড় শহরগুলোতে বিনোদনের কি যে অভাব তা এগুলো দেখে বুঝা যায়। আমাদের সন্তানেরা গাছ, পাখি চেনে না। কাক আর চড়ই গোলাপ আর জবা ছাড়া অন্য কোন কিছুর নাম বলতে পারবে কিনা সন্দেহ। দুই মেয়েকে নিয়ে কয়েক শুক্রবারে-খিলগাঁও বাজারে গিয়াছিলাম। পায়ে কাদা ও ঘামে-রৌদ্রে চেহারা কলো হওয়াতে-বউ আমার বংশতুলে যা বললো-তা না লিখলে মনে হয় ভাল। বিকল্প হিসাবে-মাছ, ফুল বিভিন্ন ধরনের বই এনে মেয়েদেরকে শিখালাম। দুধের সাধ কি আর ঘোলে হয়-আগোরায় গিয়ে মাছের ফ্রিজের সামনে দাড়িয়ে আমার কন্যা আইর মাছ দেখিয়ে বললো-বাবা এই শিং মাছটা নাও। আমি বিরক্ত হয়ে জানতে চাইলাম-
এটা শিং মাছ কে বললো?
-কেন ছবিতে দেখেছি শিং মাছের গোফ থাকে,-কন্যার নির্লিপ্ত উত্তর। সর্বনাশ।
কিছু দিন আগে মামাতো ভাইয়ের বাড়ীতে বেড়াতে গিয়াছিলাম। শুনি, ভাইজি পড়া মুখস্ত করছে--- মা এর ভাইকে মামা বলেএএএ------- মায়ের বোন কে খালা বলেএএএ--------। আমিতো অবাক!
-সেকিরে? মামা খালা কাকে বলে সেটা বই পড়ে শিখতে হবে?
ভাই বউ বললো- ভাইয়া, বই পড়ে শিখতে হয়, আমার তো ভাই বোন নেই, তাই ও জানবে কি করে মামা কে আর খালা কে?
ওর কাছে সবাই আংকেল আর আন্টি
ফার্মের মুরগীর খাচারমত-বদ্ধ ফ্ল্যাট বাড়ীতে তাদের বসবাস!
সত্যি আমাদের আমলের বিশাল-সিএসএম কলোনীর পরিবারতো আর নেই। যেখানে বড় মেজ সেজ নোয়া ছোট খালা মামা চাচা ফুফুরা থাকতেন আর তাদের এক সমুদ্র আদরে আমরা ভেসে বেড়াতাম। আজকাল শিশুদের জন্য আমার সত্যি মায়া হয়। ব্যস্ত বাবা মা, উদাসীন কাজের বুয়া, আর কম্পিউটারের ভার্চুয়াল জগত ছাড়া এদের আর কেউ নেই। কেউ ফেসবুকে আপডেট দিল-‘‘আমার পা ভেঙ্গে গেছে”------ সংঙ্গে সঙ্গে 91টা লাইক পড়ল। কিন্ত কেউ দেখতে আসল না হায় কী নিসঙ্গ এই জীবন।
আমাদের এ অপুর্ব এই সুন্দর দেশে নানা রং নিয়ে আসে নানান ঋতু, অজস্র ফুলের অসংখ্য রং, প্রতিদিন সুর্য উঠে অস্ত যায় ভিন্ন ভিন্ন রং এর খেলায়। আমাদের সন্তানেরা এত রং ফুল পাখি মাছ প্রকৃতি চিনতে শেখেনি। কারণ আমরাই তাদের প্রতিষ্ঠিত হবার ইদুর দৌড়ে লাগিয়ে রেখেছি। পলাম শিমুল বকুল বেলী জারুল তারা চিনতে পারে না, রুই মাছ আর শিং মাছের তফাত বোঝে না। না শিখুক, কোন না কোন দিন শিখে নিবে------
No comments:
Post a Comment