গল্পটা আমাদের

- Al Amin Billah Shujon

• গল্পের নায়কঃ ৯৯ ব্যাচের দামাল ছেলেরা
• গল্পের নায়িকাঃ ৯৯ ব্যাচের দুরন্তপনা মেয়েরা
• গল্পের সময়কালঃ ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬
• গল্পের স্থানঃ CSM School এবং সমগ্র CSM Colony
• গল্পের প্রেক্ষাপটঃ গ্রুপ প্রেম ( দশে মিলে করি প্রেম, হারি জিতি নাহি সেম [shame - লজ্জা] ) 

পর্বঃ ০১

সত্য ঘটনা অবলম্বনে। গল্পটা আমাদের ১৯৯৯ ব্যাচের কিছু দামাল ছেলে এবং কিছু দুরন্তপনা মেয়েদের নিয়ে রচিত। সবে মাত্র আমরা সবাই ক্লাস ফাইভ থেকে ক্লাস সিক্স এ উঠছি। তখনও ঠিকমত জানতাম না অথবা বুজতাম না আসলে প্রেম কি, ভাললাগা কি এবং ভালবাসা কি? 

আমরা সবাই ছিলাম খুব দুরন্তপনা। সারাক্ষণ আমরা ছেলেরা মেয়েরা মারামারি করতাম টিফিন নিয়ে, বাড়ির কাজের খাতা নিয়ে আরো অনেক কিছু নিয়ে আর এই জন্য আমরা অনেকবার মার খেয়েছি স্যার আপাদের কাছ থেকে। এভাবেই কেটে যায় আমাদের বেবি ক্লাস থেকে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত। যাইহোক ক্লাস সিক্স এ উঠার পর আমরা নিজেদের একটু বড় ভাবা শুরু করলাম। আমাদের স্কুল এ ক্লাস ফাইভ এর পর ছেলেরা মেয়েরা আলাদা ক্লাস রুমে ক্লাস করত এটাই নিয়ম ছিল। আলাদা হয়ে আমরা ছেলেরা প্রথম প্রথম অনেক খুশি হলাম কারণ এখন আর ওদের সাথে মারামারি হবে না আর আমরা স্যার আপাদের কাছ থেকে বকাও শুনবো না আবার মারও খাবো না, সুতরাং এখন আমরা অনেক শান্তিতে থাকব। 

বেশ কিছুদিন শান্তিতে কাটল আমাদের কিন্তু কিছুদিন যাবার পর আর ভালো লাগে না আমাদের। আমরা সবাই ওদের সবাইকে খুব মিস করতে থাকি, ওরাও আমাদের ......। এভাবে তো চলতে পারে না, একটা কিছু তো করতেই হবে। তাই সবাই মিলে প্লান করলাম প্রেম করতে হবে। সবাই প্রেম করবো একসাথে, শুধুমাত্র নিজ ব্যাচ এর মেয়েদের সাথে। যেই কথা সেই কাজ। শুরু করলাম কল্লোলকে দিয়ে। কল্লোলও রাজি হয়ে গেল। আমরা কল্লোলের প্রেমিকা ঠিক করে আমাদের ব্যাচ এর মেয়েদের জানিয়ে দিলাম কল্লোলের প্রেমিকার নাম (কম)।

এরপর শুরু হল মূলঘটনা। আমরা ছেলেরা সারাক্ষণ কল্লোলকে ওই মেয়ের নাম বলে বলে খোঁচাইতাম আর আমাদের ব্যাচ এর মেয়েরা কল্লোলের প্রেমিকাকে সারাক্ষণ কল্লোল এর নাম বলে বলে খোঁচাইত। প্রথমে কল্লোল খুব মজা পেলেও পরে খুব বিরক্ত হয়ে নতুন প্লান করলো। ও নিজে নিজে আমাদের সবার নামের সাথে একটা একটা আমাদের ব্যাচের মেয়ের নাম যোগ করে মেয়েদের কাছে পাঠাই দিল। অবশ্য পুরো নাম দেয় নাই শুধু নামের প্রথম অক্ষর অথবা শেষ অক্ষর দিল বাকিটা মেয়েদেরকে বের করতে বলল। 

নামগুলো ছিল এইরকমঃ

“আবে, সাবে, আসা, শাশা, অমা, সাঅ্যা, সুমি, নানা, ফুমি, কম, খোপা, লন ............”

অর্থাৎ

• আবে = আসাদুর + বে
• সাবে = সালাউদ্দিন + বে
• আসা = আফরোজ/আসিফ + সা
• শাশা = শাহীদ + শা
• অমা = অ + মানিক
• সাঅ্যা = সাদেক + অ্যা
• সুমি = সুজন + মি
• নানা = নাসিম + না
• ফুমি = ফুয়াদ + মি
• কম = কল্লোল + ম
• খোপা = খোকন + পা
• লন = রফিকুল + ন 

কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের ব্যাচ এর মেয়েরা সবগুলো নাম বের করে কল্লোলকে উত্তরপত্র জমা দিল, খুব সম্ভবত কল্লোল ওদেরকে কিছুটা হেল্প করছিল। কল্লোল আমাদের মাঝে ফলাফল প্রকাশ করলো। আমরা সবাই খুব অবাক হলাম অবশ্য অবাকের চেয়ে খুশি হলাম অনেক বেশি কারণ আমি প্লাস তুমি বলে কথা। তারপর শুরু হল গ্রুপ প্রেম। গ্রুপ প্রেম এর কি যে মজা সেটা না করলে বুজতাম না। এরপর আমরা কেউ কাউকে আর নাম ধরে ডাকতাম না। আমি কল্লোলকে ডাকতাম ‘কম’ বলে, কল্লোল আমাকে ‘সুমি’ বলে, মানিকরে ‘অমা’ বলে, ফুয়াদকে ‘ফুমি’ বলে, মেয়েরাও একইভাবে .........। 

আবারো নতুন করে শুরু হল আমাদের মজার জীবন। সবাই একটু একটু করে বুজতে শিখলাম ভালোলাগাটা/ভালবাসাটা আসলে কি? কারণ আমি ওকে দেখলে মুচকি হাসি, ও আমাকে দেখলেও একই অবস্থা ......। প্রায় সবার ক্ষেত্রেই একই অবস্থা বিরাজমান। অর্থাৎ সবসময় আমরা ওদেরকে দেখার জন্য, ওদের সাথে কথা বলার জন্য বসে থাকতাম। কখন ওদেরকে একটু দেখব, কখন ওদের সাথে একটু কথা হবে এই অপেক্ষায় থাকতাম আমরা সবাই। অনুরূপভাবে ওরাও আমাদের জন্য ......। প্রতিদিনই আমাদের সবার সাথে সবার দেখা হত, কথা হত, খুনসুটি হত আরও অনেক কিছু ............।  

তারপর ......... 

আজ রাখি, অন্য কোন একদিন বলবো ...............। 

[বিঃ দ্রঃ অনেকদিন আগের কথা তাই কারোর নাম ভুল হতে পারে। আর সংগত কারনে মেয়েদের নাম প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকলাম]