খোরশেদ হল আমাদের হুজুর স্যারের(ফারুকি স্যার) "আব্বাইচ্চা মার ফোয়া"। আমাদের ক্লাস ক্যাপ্টেন। একবার কোথায় যেন নাম লিখার কথা , আমি ওর নামের বানান ঠিক লিখেছিলাম, এর পর থেকেই আমাদের বন্ধুত্ব বাড়তে লাগলো। আমার হাতের লেখা বরাবরই খারাপ, খোরশেদ আমাকে টিপস দিত কিভাবে হাতের লেখা খারাপ না করে দ্রুত লিখা যায়। আর খোরশেদের প্ররচনাতে ছেলেরা (Mamun Baul, Herin Moynuddin, Abdullah Al Mamun Rana) কিভাবে বিউটি আপার ক্লাস ভণ্ডুল করেছিল তা আগেই বলেছি।
আমি আর খোরশেদ এক সাথে হক স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তাম। তখন ও সকাল বেলা একটা গান মুখস্থ করতো আর সারাদিন ঐ গান গুন গুন করে গাইত। ভাগ্যিস জোরে জোরে গাইত না, তাহলে শ্রোতার বারোটা বেজে যেতো। পর দিন আবার নতুন আরেক গান। মোরশেদ ভাই, রাশেদ ভাই তখন ইউনিভার্সিটিতে পড়তেন, উনাদের গানের সংগ্রহ ভালই ছিল।
ঢাকাতে তখন আমার কোন আত্মীয় স্বজন ছিল না। আমি ঢাকা গেলে শহীদুল্লাহ হলে খোরশেদের রুমে উঠতাম। রুম নাম্বার ছিল সম্ভবত ৩১৪। আমার বাবা যখন কলনিতে বহিরাগত ঠেংগায়, আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাগত smile emoticon । কেমন কেমন জানি লাগতো। সাড়ে-তিন ফিটের খাটে আমরা দুইজন যে কিভাবে আঁটতাম সেটা এক বিশাল রহস্য। মধ্যে ঘুমের মধ্যে আমাদের বেশ ভাল বোঝা পড়া ছিল। আমি চিত হলে ঘুমের মধ্যেই খোরশেদ কাত হয়ে যেত। আবার খোরশেদ চিত হলে আমি কাত হয়ে যেতাম। হলের সেই তেল চিটচিটে বালিশেই আমাদের শান্তির ঘুম হত। দুপুর বেলা হল থেকে বের হয়ে আমরা মাঝে মাঝে নান্নার পোলাও খেতে যেতাম।
খোরশেদ খুবই অধ্যবসায়ী ছেলে, দুনিয়াদারি সব বাদ দিয়ে পড়ার মধ্যে কিভাবে যে ডুবে থাকা যায় সেটা ওকে না দেখলে বোঝা যাবে না। সে ঘুম থেকে উঠে ভার্সিটি যাবার আগে পড়তো। ভার্সিটির ক্লাসের ফাঁকে গোসলে যাবার আগে, কাপড় পাউডারে ভিজিয়ে দিয়ে পড়তো, কাপড় ধুয়ে গোসল করে আবার ক্লাসে যেত। ক্লাস শেষে আবার লাইব্রেরীতে গিয়ে পড়ত। এই অধ্যবসায়ের ফল সে হাতে হাতে পেয়েছে। আজ সে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বন্ধু আমার, সফলতার সাথে অনেকটা পথ পার হয়েছিস, আশা রাখি তুই আরও অনেক দূর সফল ভাবেই যাবি। ভাল থাকিস বন্ধু ।
আলী আব্বাস মোহাম্মদ খোরশেদ
পুষ্টি এবং খাদ্য বিজ্ঞান ইন্সিটিউট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পুনশ্চঃ গ্রুপে সবার সবার সামনে তেলাইলাম, বাঁশ গুলাও কিন্তু আমার কাছে আছে, সময় মত দিমুনি smile emoticon smile emoticon ।

No comments:
Post a Comment