শুক্রবার রাত আটটায় প্রত্যাশিত প্রসব বেদনা শুরু হলো বউয়ের। ছোট ভাই গাড়ী ড্রাইভ করছে আমি আর মা বউকে নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রওনা হলাম। মেডিকেলের ৩৩ নং গাইনী ওয়ার্ডে বউকে ভর্তি করানো হলো। ডিউটি ডাক্তার চেক আপ করে বললেন সব ঠিক আছে। আমরা বাইরে অপেক্ষা করছি। আমার মা ভিতরে আছেন। সারারাত অপেক্ষায় ছিলাম কিন্তু ডেলিভারি হলোনা। শনিবার সকালে বড় ডাক্তার আসলেন এবং আমার স্ত্রীকে দেখে বললেন সব ঠিক আছে,ডেলিভারি নরমাল হবে। আমরাও অপেক্ষা করছি। প্রচণ্ড টেনশন কাজ করছে মনে। ইতিমধ্যে আত্মীয় স্বজন এবং বন্ধুরা আসলো। শনিবার সারাদিনেও ডেলিভারি হলোনা। আমি ডাক্তারকে বারবার অনুরোধ করলাম প্রয়োজনে অপারেশন করুন, কিন্তু ডাক্তার বললেন সব স্বাভাবিক অপারেশন করতে হবেনা। টেনশন বাড়তে লাগলো। ইতিমধ্যে নিয়ম কানুন উপেক্ষা করে ৩/৪ বার গাইনি ওয়ার্ডের ভিতরে গিয়ে বউকে দেখে আসলাম। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে অসহ্য টেনশন হচ্ছিল। রাত তিনটায় ডাক্তার আমাকে ডেকে পাঠালেন একটা কাগজ হাতে দিয়ে সাইন করতে বললেন, অপারেশনের অনুমতি পত্র। আমি সাথে সাথে স্বাক্ষর করলাম। ভোর পাঁচটায় আমার স্ত্রীকে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকানো হলো। আমি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছয়তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। স্পষ্ট মনে আছে পুব আকাশে সুর্য উঠছে আমি তাকিয়ে আছি সেইদিকে আর চোখ দিয়ে টপ টপ পানি পড়ছে। ঠিক তখন বন্ধু নিরু খবর দিলো তোর ছেলে হয়েছে। জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় মুহুর্ত(প্রত্যেকের জীবনেই সম্ভবত তাই)।
আজ ২২ শে এপ্রিল আমার বড় ছেলের পনরতম জন্মদিন। সে এখন চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। সবার নিকট আমার ছেলের জন্য দোয়া চাইছি।

No comments:
Post a Comment