Thursday, May 12, 2016

এটা ছিলো জামশেদের চিকন কারসাজী


এটা ছিলো জামশেদের চিকন কারসাজী । আমি মোটেও রাজি না। কমপক্ষে ৫টা গোল হজম করতে হবে। হারামজাদা আবাহনি/মোহামেডান ফুটবল ম্যাচ আয়োজন করতে চায়। রেজুয়ান পাগলাকে আমার পিছে লাগিয়ে দিছে, ভয়ভীতি দেখিয়ে রাজি করানোর জন্য। হারামজাদা পাগল কোমরে খুর নিয়ে আমাকে খুজে বেড়ায়, এক মহাযন্ত্রনার মধ্য পড়লাম। আবাহনী, কলোনিতে অনেক শক্তিশালী টিম। রেজুয়ান, জামশেদ, জাফর, ইকবাল,এরা সবাই চিটাগাং ২য় বিভাগে খেলে। আর মোহামেডানে ,এক বুড়া আনোয়ার ভাই ছাড়া , বাকি সবাই পাড়ার খেলোয়ার। রাত্রে আনোয়ার ভাই ডেকে পাঠালো, গিয়ে দেখি শামিমও আছে। আনোয়ার ভাই এর এক ধমকে রাজি হয়ে গেলাম। আনোয়ার ভাই, শামিম, হানিফ, বাবু[রাজিব কুমার দে], লিটন[শামছু কাকার ছেলে], আমি নিজে, আর গোলকিপার আমিনুল[ইঞ্জিঃ আনোয়ারুল হকের ভাই], রাজুও[ডি-টাইপ]। 

ঠিক এই রকম ছিলো আমাদের টিম। সম্ভবত বাবলা ভাইও ছিলো। জামশেদ, রেজুয়ান, জাফর, ইকবাল, মোল্লা, আর কে কে ছিলো আবাহনীর প্লেয়ার ঠিক মনে নাই। সাজ সাজ রব পড়ে গেলো, কলোনিতে। খেলার দিন সকাল থেকে মোল্লা আমার সাথে কথা বলেনা। শানুর ভাই এর দোকান থেকে সিগারেট কিনে , একা একা খায়! বন্ধু আজ শত্রু! বিকালে মাঠে আরো ভয়াবহ অবস্থা। খেলা শুরু হওয়ার আগেই , রেজুয়ান আমার পায়ে একটা পারা দিয়ে দিলো! মোল্লা মাথায় লাল ফিতা বেধে নেমেছে। প্রচুর দর্শক মাঠে। মনে মনে ভরসা পেলাম, মোল্লার মাথায় লাল ফিতা, শালা আবার ডিফেন্সের প্লেয়ার! মাথা গরম , অতএব সুযোগ মোল্লা দিবেই। 


মোল্লার ঠিক পিছনেই , গোলকিপার ইকবাল। মোল্লা, রেজুয়ান আর ইকবাল প্রায় কাছাকাছি একই জগতের বাসিন্দা! খেলা শুরু হয়ে গেলো। মোল্লার কার্যক্রম আরো বেড়ে গেলো। আমি মোল্লার আশ পাশ দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। একটা সময় মোল্লা বলের গতির দিকে না গিয়ে আমাকে নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো! সুযোগটা পুরাপুরি কাজে লাগালো আনোয়ার ভাই। ১-০, মোল্লার মুখ দিয়ে শুধু একটা আওয়াজ বাহির হলো,"আরে"! রেজুয়ান মহা গরম, পারেতো মোল্লাকে তখনি ধরে মারে! এই গরম প্রভাবটা ইকবালের উপড়েও গিয়ে পড়লো! এবার সুযোগ টা কাজে লাগালো , বাবু কিংবা হানিফ। ফলাফল, ২-০।এবার ইকবাল, রেজুয়ান আর মোল্লা এই তিনজনের মধ্য বেজে গেলো! জামশেদের চেহারাটা তখন দেখার মত! শালা আমাদের ৫ গোল দেওয়ার প্ল্যান করছে! 

এখন গোল শোধ করবে কিভাবে সে চিন্তায় অস্থির।ওদের অবস্থা দেখে আমি আর বাবু , মজা করে হাসি। যাক শেষ পর্যন্ত খেলা ২-২ গোলে ড্র হয়েছিলো। সন্ধ্যার পর, শাহানুর ভাই এর দোকানে এসেছি, সিগারেট কিনতে। মোল্লা আর রেজুয়ান আমাকে ধরে, দোকানের পাশে নিয়ে গেল, মোল্লার হাতে সামুরাই আর রেজুয়ানের হাতে খুর! একদম চুপ শালা , কোনো কথা বলবি না, পকেটে হাত দিয়ে , সামান্য কিছু টাকা ছিলো , নিয়ে নিলো! যাওয়ার সময় আমার পাঞ্জাবির পকেট টা ছিড়ে দিয়ে গেলো! তাকিয়ে দেখলাম জামশেদ পানির ট্যাঙ্কের নিচে বসে আছে। বুঝলাম, হারামির কারসাজি। আমার অবস্থা দেখে, শাহানুর ভাই হাসতে হাসতে, বাকিতে একটা সিগারেট দিলো!

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss