Monday, July 25, 2016

কয়েক দিন ধরে পেইজে-কলোনীর সকল জুগলের সাফল্লের ছবি ছাপা হচ্ছে


কয়েক দিন ধরে পেইজে-কলোনীর সকল জুগলের সাফল্লের ছবি ছাপা হচ্ছে। কিন্ত ব্যার্থতার কোন স্থান এখানে নেই। তাই হালকার উপর ত্রি-বন্ধুর ব্যার্থতার কাহিনী এবং আমার এক প্রিয় ছাত্রী-মনিরুন নাহার ময়না-বন্ধু অনুপ সম্পর্কে কিছু লেখার জন্য অনুরোধ করেছিল। আমিও কথা দিয়েছিলাম লিখব বলে-তাই এই লেখা। এফ-10নং বিল্ডিং এ আমারা টিন-এইজ তিনজন ছিলাম-আমাদের ওস্তাদ অনুপ (কৃষ্ণ)/সম্রাট সাহেব-বাবু (চন্ডি দাস) আর আমি (ফরহাদ)। আমাদের প্রেম কুঞ্জ ছিল এফ-10নং বিল্ডিং এর 24নং রুম। রুমটি আমারা আমাদের আর এক বন্ধু এখন হালিশহরে থাকে নাম-মনির, এখন দাড়ি রেখেছে, মাঝে মাঝে ফেসবুকে ডু মারে। মনিররা হালিশহেরে চলে যাওয়ায়-তখন স্টিল মিলের রুম ভাড়া দেওয়ার রেওয়াজ না থাকায় আমাদের অভিভাবকগণ ছেলেদের একটু ভাল লেখা-পড়ার জন্য আমি আর অনুপ ঐ রুমেই লেখা-পড়া করতাম। আমাদের ভাল লাগার মুনেষেরা থাকত এফ-11নং বিল্ডিংএ। আমাদের জানালার পাশ দিয়েই তারা স্কুলে যেত। আমরা উপর থেকে দেখতাম। অনুপ কে বললাম-কিরে? কোন কিছুতো বুছতে পারতেছি না। তখন অনুপ দার্শনিকের মত বলত-‘‘লাইফ ইজ রেইস”। অপেক্ষা কর। আমি আর সম্রাট সাহেব ছিলাম-অনুপের সাইট নায়ক অনেকটা সখার মত। সে একদিন আমার পছন্দের মেয়েটিকে গিয়ে-আমার সম্পর্কে অনেক কিছু বলল এবং ‘‘হুজরের পাতে দই নেই”-স্টাইলে ওর ভাল লাগার কথা ওর পছন্দের মেয়েটিকে বলতে বললো। ওর পছন্দের মেয়েটিছিল অসম্বব বুদ্ধিমতী, মেয়ে শুনে বললো-মুখের কথায় হবে না। ডুকেমেন্ট লাগবে। অনুপ বললো-দোস্ত, আমাকে একটা চিঠি লিখে দেয়। নিজের জন্য নয়-অনুপের জন্য জীবনের প্রথম প্রেম পত্র লেখা। ওয়ার্কার ক্লাবের জানালা দিয়ে-টেলিভিশনের নাটক থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণের চেষ্টা করতাম। অনুপ আমাকে বিভিন্ন নাটক থেকে কিছু টিপস দিল-মেয়েদেরকে সব সময় দৌড়ের উপর রাখতে হবে, তাহলেই সাড়া দিবে, মাঝে মাঝে রূপের প্রসংশা করতে হবে আর নায়ক আফজাল হোসেন এর মত কবিতা বলতে হবে-‘‘সুরঞ্জনা ঐ খানে যেও নাকো তুমি, বলোনাতো কথা ঐ যুবুকের সাথে, ফিরে এসো সুরঞ্জনা” এই স্টাইলে।েআমি বললাম-দৌড়ের উপর রাখবি কি করে? তুই নিজেইতো দৌরের উপর থাকস! অনেক কষ্ট করে আমরা অনুপের জন্য কবিতা লিখলাম-
কাজল কালো চোখ দুটো তোমার 
স্নিগ্ধ কোমল হাসি, 
শ্যামলা বরন মেয়ে তোমাকে 
বড্ড ভাল বাসি।


মেয়ে নিজে কোন চিঠি লিখল না, তবে মুখে বললো, অনুপকে ভাল বাসার আরও পরীক্ষা দিতে হবে। অনুপ তখন বললো-‘‘লাইফ ইস পেইন”। এভাবে ইটিস-পিটিস চলতে থাকলো। কিন্ত কিছু দিন পর আমরা আবিস্কার করলাম-অনুপের আদরের প্রেমিকাটি-‘‘ঘোড়া বেধে হাতি খুজতেছে”। অর্থাৎ অনুপ ছাড়াও আরও একজনের সাথে ইটিস-পিটিস চলতেছে- তার নাম ‘‘জরিনা সুন্দরী”। আমাদের বন্ধুরা হয়তো এতখনে বুঝে গেছে জড়িনা সুন্দরীকে? এভাবে চলতে চলতে মেয়েটির বাবা মা বুঝতে পেরে-অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দিলো। আমাদের দুই বন্ধুই ছ্যাকা খেলো। ঐ দিকে আমার বন্ধু সম্রাট-প্রতিদিন সকাল বিকাল বাসার জানালা দিয়ে-এফ-11নং বিল্ডিং এর দিকে মনের বর্শি ফেলে এবং চোখা যোখী হলে হাসি দিয়ে চলে যায়। এভাবে মনের বশির্তে খোটা দেয় কিন্ত ধরা দেয় না-------। আর গভীরে যাব না। তাহলে সম্রাট সাহেব আমার জন্য গুনে গুনে 101টা গালি রেডি করবেন। দুঃখে ওস্তাদ অনুপ সাহেবের সিগেরেট খাওয়ার পরিমান বেড়েগেল এবং বলতে শুরু করলো-‘‘লাইফ ইজ সিগারেট”। এই ডায়লগের মাধ্যমে অনুপ অবশ্য-ভালো বাসার প্রকৃত দর্শন আবিস্কার দাবী করেছিল। তখন আমিও সদ্য ছ্যাকা নিলাম কারন-আমার ভাল লাগার মানুষটি প্রমোশন নিয়ে এফটাইফ থেকে ইটাইফে চলে গিয়েছিল। এতগুলি ঘটনার পর বন্ধু অনুপের দর্শনটি হলো ‘‘পৃথিবীতে ভালো বাসা বলতে কিছু নেই। ভাল বাসা নামের যা আছে তার সবই আসলে মোহ। প্রকৃত অর্থে সব ধরনের ভাল বাসাই কোন না কোন প্রকারের মোহাবদ্ধতা”। এই মতের সাথে কারো কারে দ্বিমত থাকতে পারে তবে ব্যাখাটি কিন্ত মোটেও অগ্রহণ যোগ্য নয়। ভালো বাসা মানে মোহ-কিন্ত কিসের মোহ? এক এক জনের এক এক রকম মোহ। কারও টাকার মোহ, কারও শারীরিক মোহ, কারও টাইম পাস করার মোহ----------- এ রকম মোহ এর কি আর শেষ আছে? কেউ কেউ প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে মা বাবা ভাই বোনের প্রতি ভালো বাসা সেটা কি? সেটাও মোহ! সেই মোহটা হলো রক্তের মোহ! তাই ভালো বাসাটা আসলে মোহবদ্ধতাছাড়া আর কিছুই নয়। আর সিগারেটের সাথে ভালো বাসার পার্থক্য হলো-ভালো বাসার মোহ বদ্ধতা পোড়ায় বটে কিন্ত টিকে থাকে খুব কমই। অন্য দিকে সিগারেটের মোহ বদ্ধতা যেমন পোড়ায় তেমনি পোড়ানোর তৃপ্তিও দেয়। এ কারনে কেউ কেউ বলে-সিগেরেট হচ্ছে দেশ ও জাতির শত্রু তাই একে জালিয়ে পুড়িয়ে নিঃশেষ করে দিচ্ছি। সব চেয়ে বড় কথা হলো ভালো বাসার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চলে যায় কিন্ত সিগারেট কাউকে কাউকে মৃত্যু পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার আগে কখনই ছাড়ে না -----------।

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss